বিজিএমইএর নির্বাচনে ৩১ পদে জয়ী ফোরাম

তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচনে ভোট গণনা শেষে ফল ঘোষণা করা হয়। ঢাকা, ৩১ মে ২০২৫ছবি: বিজিএমইএর সৌজন্যে

তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচনে ৩৫ পরিচালক পদের মধ্যে ৩১টি পদে জয়ী হয়েছে ফোরাম। আর সম্মিলিত পরিষদ জয়ী হয়েছে ৪টি পদে। অন্যদিকে ঐক্য পরিষদ একটি পদেও জয়ী হতে পারেনি।

সংগঠনটির ৩৫টি পরিচালক পদে নির্বাচনকেন্দ্রিক তিন জোট—ফোরাম, সম্মিলিত পরিষদ ও ঐক্য পরিষদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ ঢাকা ও চট্টগ্রামে সব পদে প্রার্থী দিলেও ঐক্য পরিষদের প্রার্থী ছিল ছয়জন। ফলে সব মিলিয়ে প্রার্থী ছিলেন ৭৬ জন।

নির্বাচনে ফোরামের প্যানেল দলনেতা রাইজিং ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহমুদ হাসান খান। আর সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা হলেন চৈতি গ্রুপের এমডি মো. আবুল কালাম। ঐক্য পরিষদের দলনেতা রোমো ফ্যাশন টুডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন।

এবারের নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ হাজার ৮৬৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৫৬১ এবং চট্টগ্রামে ৩০৩ জন ভোটার। তার মধ্যে ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। শনিবার রাত ১১টার দিকে ভোট গণনা শেষ হয়। নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মোহাম্মদ ইকবাল। বোর্ডের অপর দুই সদস্য হলেন—সৈয়দ আফজাল হোসেন ও আশরাফ আহমেদ।

নির্বাচনে ঢাকা অঞ্চলে সর্বোচ্চ ১ হাজার ১৪৯ টি ভোট পেয়েছেন ফোরামের দলনেতা মাহমুদ হাসান খান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১ হাজার ১২৩ ভোট পেয়েছেন ফোরামের প্রার্থী শাহ রাঈদ চৌধুরী। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬৬ ভোট পেয়েছেন ফোরামের আরকে প্রার্থী মিজানুর রহমান। আর চট্টগ্রাম অঞ্চলে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫৮ ভোট পেয়েছেন ফোরামের প্রার্থী সেলিম রহমান।

নির্বাচন বোর্ডের প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী, বিজিএমইএর ঢাকার অঞ্চলের ২৬ পদের ২৫টিতে জয়ী হয়েছেন ফোরাম। তাঁরা হলেন— মাহমুদ হাসান খান (প্রাপ্ত ভোট ১,১৪৯), শাহ রাঈদ চৌধুরী (১,১২৩), মিজানুর রহমান (১,০৬৬), এম এ রহিম (১,০১৪), ফয়সাল সামাদ (৯৯২), ইনামুল হক খান (৯৬৬), ভিদিয়া অমৃত খান (৯৫৭), মো. হাসিব উদ্দিন (৯৫১), রেজওয়ান সেলিম (৯৪১), মোহাম্মদ আবদুস সালাম (৯৪০), মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী (৯২৯), নাফিস–উদ–দৌলা (৯১৯), সুমাইয়া ইসলাম (৯০৯), ফাহিমা আক্তার (৮৫৩), মজুমদার আরিফুর রহমান (৮৫০), আনোয়ার হোসেন চৌধুরী (৮৪৯), শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ (৮৪৭), কাজী মিজানুর রহমান (৮৪৫), জোয়াদ্দার মোহাম্মদ হোসনে কামার আলম (৮৪২), এ বি এম শামছুদ্দিন (৮৪০), আসেফ কামাল পাশা (৮৩৬), রশীদ আহমেদ হোসাইনী (৮২৪), রুমানা রশীদ (৮১১), মোহাম্মদ সোহেল (৮০৭), সামিহা আজিম (৭৯৯)। ঢাকায় একটি পদে সম্মিলিত পরিষদের ফারুক হাসান (৮১৩) জয়ী হয়েছেন।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৯ পদের ৬টিতে জয়ী হয়েছেন ফোরামের প্রার্থীরা। তাঁরা হলেন, সেলিম রহমান (প্রাপ্ত ভোট ১,০৫৮), এম মহিউদ্দিন চৌধুরী (৯৭৯), সাকিফ আহমেদ সালাম (৯৪৪), মো. শরীফ উল্লাহ (৯২৭), মোহাম্মদ রফিক চৌধুরী (৯১৯) এবং এনামুল আজিজ চৌধুরী (৮৯০)। বাকি তিনটি পদে জয়ী হয়েছেন সম্মিলিত পরিষদের সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর (৯৫০), এস এম তৈয়ব (৮৩৫), ও রাকিবুল আলম চৌধুরী (৮৩১)।

এবারের নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ হাজার ৮৬৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৫৬১ এবং চট্টগ্রামে ৩০৩ জন ভোটার। তার মধ্যে ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন।

কড়া নিরাপত্তার মধ্যে শনিবার সকাল ৮টায় ঢাকার ঢাকার র‍্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেল এবং চট্টগ্রামের র‍্যাডিসন ব্লু হোটেল বে ভিউ কেন্দ্রে একযোগে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। নির্ধারিত পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভোটকেন্দ্র প্রবেশ করে ভোট দিয়েছেন ভোটারেরা। তাই বাইরে প্রার্থীরা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পেরেছেন। গণমাধ্যম কর্মীদের ভোটকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। তবে কারা কখন ভোট দিচ্ছেন সেটি ডিজিটাল মাধ্যমে সরাসরি দেখানো হয়।

সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা আবুল কালাম দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভোট সুষ্ঠু ও সুন্দর হচ্ছে। ভোটের ফলাফল যা–ই হোক, আমরা মেনে নেব।’

নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১১ জুন সভাপতি ও সহসভাপতি পদের নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে। নতুন পর্ষদ ১৬ জুন দায়িত্ব নেওয়ার কথা রয়েছে।

গত বছরের মার্চে বিজিএমইএর নির্বাচন হয়েছিল। তাতে সম্মিলিত পরিষদ সব পদে জয়ী হলেও নির্বাচন ছিল ‌প্রশ্নবিদ্ধ। তখন সভাপতি হন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান। এরপর ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তাঁকে আর দেখা যায়নি। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা হয়। গত ২০ অক্টোবর বিভিন্ন অভিযোগে বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে প্রশাসক নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।