২ হাজার কোটি টাকার নতুন কারখানা চালু করল বিএসআরএম

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিএসআরএমের নতুন কারখানা উদ্বোধন শেষে আমন্ত্রিত অতিথিরাছবি: বিজ্ঞপ্তি

পরিবেশবান্ধব নতুন ইস্পাত কারখানা চালু করেছে দেশের ইস্পাতশিল্পের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্টিল রি–রোলিং মিলস বা বিএসআরএম। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আজ শনিবার এই কারখানার উদ্বোধন করা হয়। ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে কারখানাটি গড়ে তোলা হয়েছে। তাতে নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে পাঁচ শতাধিক লোকের।

কোম্পানি–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নতুন এ কারখানায় বৈদেশিক মুদ্রায় ১০ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার বা প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ঋণসহায়তা দিয়েছে দেশি–বিদেশি সংস্থা ও ব্যাংক। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৫ কোটি মার্কিন ডলার বা ৬০০ কোটি টাকা ঋণসহায়তা দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো–অপারেশন এজেন্সি বা জাইকা। এ ছাড়া ডলারে ঋণ দিয়েছে এক্সিম ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ (এসসিবি) ও ব্র্যাক ব্যাংক।

কোম্পানিটি জানিয়েছে, নতুন এ কারখানার আওতায় দুটি ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে একটিতে মেল্টিং–সুবিধা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। অন্যটিতে নতুন করে রি–রোলিং মিল স্থাপন করা হয়েছে। আজ এ দুটি ইউনিটেরই বাণিজ্যিক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। নতুন এ দুটি ইউনিট চালুর ফলে বছরে ৫ লাখ মেট্রিক টন রেবার, ১ লাখ মেট্রিক টন রড ও আড়াই লাখ মেট্রিক টন এক্সপান্ড বিলিট উৎপাদনের সক্ষমতা বেড়েছে বিএসআরএমের।

কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে নতুন কারখানাটি স্থাপনের কাজে হাত দেয় বিএসআরএম। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মিলিয়ে নতুন এ প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছুটা বাড়তি সময় লেগেছে।

নতুন কারখানা উদ্বোধনের পর শনিবার কোম্পানিটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে জাইকার বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ অর্থায়ন কর্মসূচির আওতায় এটিই প্রথম করপোরেট ঋণসহায়তা। ২০২৩ সালের অক্টোবরে এই ঋণচুক্তি করেছিল কোম্পানি। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে সহযোগিতার নজির স্থাপন করেছে জাইকা।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিএসআরএমের নতুন কারখানার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহদাত হোসেন। এ সময় বিএসআরএমের চেয়ারম্যান আলী হোসেন আকবর আলী ও জাইকা বাংলাদেশ কার্যালয়ের প্রধান ইচিগুচি তোমোহিদে উপস্থিত ছিলেন।

কোম্পানিটি জানিয়েছে, পরিবেশবান্ধব এ কারখানায় পরিচ্ছন্ন বাতাস নিঃসরণ নিশ্চিত করতে আধুনিক এয়ার পলিউশন কন্ট্রোল (এপিসি) ব্যবস্থা ও পানির শতভাগ পুনর্ব্যবহার নিশ্চিত করতে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট অ্যান্ড রিসাইক্লিং ফ্যাসিলিটিসহ সর্বাধুনিক পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া কারখানার ছাদে স্থাপিত সৌরবিদ্যুৎ প্ল্যান্ট ও জ্বালানি সাশ্রয়ী উৎপাদন পদ্ধতির কারণে প্রতিবছর ১০ হাজার টন গ্রিনহাউস গ্যাস (কার্বন ডাই-অক্সাইডের মতো) নিঃসরণ কম হবে। কারখানায় উৎপাদিত স্ল্যাগ (ধাতুমল) নির্মাণকাজে পুনর্ব্যবহারের উপযোগী করা হবে। এসব ব্যবস্থা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) বিভিন্ন অভীষ্ট পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।