আইডিএলসি-প্রথম আলো এসএমই পুরস্কার পেলেন ছয় উদ্যোক্তা

আইডিএলসি প্রথম আলো এসএমই পুরস্কার ২০২১-প্রাপ্ত বিজয়ীরা অতিথিদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেয়। (বা থেকে বসা) পুরস্কারপ্রাপ্ত মো. ওলি উল্লাহ, রেহানা আক্তার, খোন্দকার সিদ্দিক-ই-রব্বানী, রাজিয়া সুলতানা, মো. মনির হোসেন ও কামরুন্নাহার খানম। (বাঁ থেকে দাঁড়িয়ে) মো. জাকের হোসেন, মির্জা নূরুল গণী শোভন, এম এ মান্নান, এম জামাল উদ্দিন, মুহম্মদ গাজী তৌহীদুর রহমান ও মতিউর রহমান। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে।
ছবি: দীপু মালাকার

যুক্তরাজ্যে পিএইচডি গবেষণার সময় অধ্যাপক খোন্দকার সিদ্দিক-ই-রব্বানী বুঝতে পারেন দেশের মানুষের জীবনমানের উন্নতি ঘটাতে যথাযথ প্রযুক্তি দরকার। তাই পিএইচডি শেষ করেই দেশে ফিরে আসেন তিনি। যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে। পাশাপাশি শুরু করেন গবেষণা। উদ্দেশ্য—প্রযুক্তি দিয়ে দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করা।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে একদল উদ্যমী তরুণ গবেষক নিয়ে ২০১৩ সালে অধ্যাপক সিদ্দিক-ই-রব্বানী প্রতিষ্ঠা করেন ‘বাইবিট’। প্রতিষ্ঠানটির কোনো মালিক নেই, কেউ এর মুনাফার ভাগও পান না। বাইবিট ইতিমধ্যে সিদ্দিক-ই-রব্বানী ও তাঁর সহযোগী গবেষকদের উদ্ভাবিত ১৫টির মতো যন্ত্র বাজারজাত করেছে, যার সব কটি স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে জড়িত। মুক্তদর্শনের এই বিজ্ঞানী সব আবিষ্কারকেই উন্মুক্ত করে দিয়েছেন।

বাইবিটের প্রতিষ্ঠাতা সিদ্দিক-ই-রব্বানী স্বাস্থ্যে আইডিএলসি-প্রথম আলো এসএমই পুরস্কার–২০২১ বিজয়ী হয়েছেন। পুরস্কার পেয়ে তিনি বলেন, যে কোনো পুরস্কারই আমাকে অনেক আনন্দ দেয়। বাইবিট একক কোনো উদ্যোগ নয়, আমাদের টিমের সব সদস্যের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল এটি।

এ ছাড়া শিক্ষা, কৃষি, উৎপাদন শিল্প, নারী উদ্যোক্তা শ্রেণিতে পুরস্কার পেয়েছেন আরও পাঁচজন। তাঁরা হলেন শিক্ষায় ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. মনির হোসেন, কৃষিতে রাইয়ান অ্যাগ্রো লিংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাজিয়া সুলতানা, উৎপাদন শিল্পে জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বত্বাধিকারী মো. ওলি উল্লাহ, নারী উদ্যোক্তা শ্রেণিতে নবাবী ফুটওয়্যার লিমিটেডের এমডি কামরুন্নাহার খানম। এ ছাড়া বিশেষ পুরস্কার পেয়েছেন ক্লে ইমেজের স্বত্বাধিকারী রেহানা আক্তার।

সায়লা আহমেদ লিমার পরিচালনায় ‘আমি বাংলার গান গাই’ এই গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে ভঙ্গিমা ডান্স থিয়েটার
ছবি: প্রথম আলে

বিজয়ী ছয় উদ্যোক্তার হাতে প্রধান অতিথি হিসেবে আইডিএলসি-প্রথম আলো এসএমই পুরস্কার তুলে দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আইডিএলসি ফাইন্যান্সের সিইও ও এমডি এম জামাল উদ্দিন এবং প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর যুব কার্যক্রম ও অনুষ্ঠান প্রধান মুনির হাসান।

অগ্রহায়ণের শেষ বিকেলে মঙ্গলবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘আমি বাংলায় গান গাই’ এই গানের সঙ্গে ভঙ্গিমা নৃত্য একাডেমির সদস্যদের নৃত্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান শুরু হয়। ততক্ষণে আয়োজনস্থল কানায় কানায় পূর্ণ। পুরস্কারপ্রাপ্ত উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি তাঁদের স্বজন, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্য দেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান
ছবি: প্রথম আলো

বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। প্রথমে বিশ্বাস হতো না। কারণ, মার খেতে খেতে আমরা একধরনের হীনম্মন্যতায় ভুগতাম। এ সময় সরকারের সফলতা হিসেবে দেশের ঘরে ঘরে বিদ্যুতায়ন, নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, নির্মাণাধীন চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল, পদ্মা সেতু, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের কথা উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, আমাদের পিছিয়ে পড়ার যথেষ্ট হুমকি এখনো আছে। লজ্জার অনেক বিষয় আছে। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে কিছু অর্জন রয়েছে। যদিও তাতে আমি সন্তুষ্ট না। তারপরও আমরা একের পর এক বাধা অতিক্রম করে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি।

আইডিএলসি-প্রথম আলো এসএমই পুরস্কারের জন্য গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে মনোনয়ন নেওয়া শুরু হয়। প্রায় এক মাসের মধ্যে এই পুরস্কারের জন্য অনলাইন ও চিঠির মাধ্যমে ১ হাজার ৭০টি মনোনয়ন জমা পড়ে। এর মধ্যে নারী উদ্যোক্তা শ্রেণিতে সবচেয়ে বেশি ৪৮৯টি মনোনয়ন জমা পড়ে।

বক্তব্য দেন আইডিএলসি ফাইন্যান্সের সিইও এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম জামাল উদ্দিন।
ছবি: প্রথম আলো

আইডিএলসি ফাইন্যান্সের সিইও ও এমডি এম জামাল উদ্দিন বলেন, যে কোনো দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে এসএমই খাত। উন্নত দেশে জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান থাকে প্রায় ৫০ শতাংশ। তবে আমাদের দেশে সেটি মাত্র ২৫ শতাংশ। কিন্তু প্রতি তিনজনের মধ্যে একজনের কর্মসংস্থান হয়েছে এসএমই খাতে। ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হওয়ার রূপকল্প নিয়েছে সরকার। এসএমই খাতকে বাইরে রেখে এটি অর্জন সম্ভব নয়।

আইডিএলসি ২০০৬ সালে এসএমই খাতে ঋণ বিতরণ শুরু করে—এই তথ্য দিয়ে এম জামাল উদ্দিন, ‘বর্তমানে আমাদের মোট ঋণের ৩৮ শতাংশ এসএমই খাতের।’ আইডিএলসি-প্রথম আলো এসএমই পুরস্কার ৮০ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ছয়জন সফল উদ্যোক্তাকে খুঁজে বের করেন পাঁচ সদস্যের জুরি বোর্ড। সেই বোর্ডে ছিলেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের কান্ট্রি ইকোনমিস্ট নাজনীন আহমেদ, জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি, বাংলাদেশের (নাসিব) সভাপতি মির্জা নূরুল গণী শোভন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক মো. জাকের হোসেন, এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খান এবং এফ এম প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহম্মদ গাজী তৌহীদুর রহমান।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের একাংশ।
ছবি: প্রথম আলো

পুরস্কার বিজয়ী ছয় উদ্যোক্তার উঠে আসার গল্প ভিডিও চিত্র আকারে দেখানো হয়। তার এক ফাঁকে প্রথম আলোর শুরুর গল্প বলেন সম্পাদক মতিউর রহমান, ‘১২৪ জন কর্মী নিয়ে প্রথম আলো শুরু হয়েছিল। আজকে কাজ করেন ৯২৬ জন। এখন প্রথম আলো শুধু পত্রিকা নয়, নিয়মিতভাবে চারটি ম্যাগাজিন করছে। শিক্ষার্থী, তরুণ ও উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে গণিত অলিম্পিয়াড, ফিজিকস অলিম্পিয়াড, রোবোটিকস, বিতর্ক প্রতিযোগিতা বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করছে। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য, আমরা বাংলাদেশের সফলতা দেখতে চাই। বাংলাদেশের জয় দেখতে চাই।’

মতিউর রহমান বলেন, ২০১৩ সালের সর্বশেষ অর্থনৈতিক শুমারি অনুযায়ী কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৭৮ লাখ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কুটির শিল্পপ্রতিষ্ঠান, সাড়ে ৬৮ লাখ। আর ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা সাড়ে আট লাখ। কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কাজ করেন ২ কোটি ৪৫ লাখ লোক। তার মধ্যে দুই কোটিই কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্পে। তারপরও খাতটির উদ্যোক্তারা অনেক সময় ব্যাংকঋণ সুবিধা পান না। সরকারি বিভিন্ন সুবিধাও তাঁদের কাছে পৌঁছায় না। কারণ, তাঁদের কথা বলার মতো শক্তিশালী কোনো গোষ্ঠী নেই।

বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান
ছবি: প্রথম আলো

পাঁচ বিজয়ীর কথা

২০০৮ সালে যাত্রা শুরু হয় ডিজিটাল বাংলাদেশের। সম্ভাবনাময় এই ক্ষেত্রে পথচলা শুরু করেন একঝাঁক তরুণ। তাঁদেরই একজন মো. মনির হোসেন। উত্তরবঙ্গের জেলা পঞ্চগড়ের আত্মপ্রত্যয়ী এই তরুণ ঢাকায় গড়ে তোলেন ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউট। গত ১৩ বছরের পথচলায় ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউটে ৫০ হাজারের বেশি তরুণ তথ্যপ্রযুক্তির নানা খাতে দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য বদলেছে। পাঁচ লাখের বেশি তরুণ বিনা মূল্যে পেয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক ক্যারিয়ার গাইডলাইন।

শিক্ষা শ্রেণিতে ক্রিয়েটিভ আইটির সিইও মনির হোসেন আইডিএলসি-প্রথম আলো এসএমই পুরস্কার পেয়েছেন। বললেন, ‘এই পুরস্কার আমাদের প্রতিষ্ঠানের সবার জন্য। এই প্রাপ্তি আমাদের দায়িত্ব ও কর্মস্পৃহা আরও বাড়িয়ে দেবে।’

২০১৩ সালের শেষ দিকে ৪০০ খাকি ক্যাম্বেল হাঁস দিয়ে রাজিয়া সুলতানার উদ্যোক্তা জীবনের পথচলা। ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের সেই খামারের পাশের পতিত জমিতে শুরু করেন সবজির চাষ। পরে স্বামীর কর্মস্থল সিলেটে সেই খামার সরিয়ে নেন। পরে আবার স্বামীর কর্মস্থল পরিবর্তন হলে আশুলিয়ায় ১৮ বিঘা জমিতে নতুন করে শুরু করেন। ব্যবসার পাশাপাশি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তাদের বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেন। ওই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা পাঁচ লাখ।

নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন জুরি বোর্ডের তিন সদস্য মুহম্মদ গাজী তৌহীদুর রহমান, মির্জা নূরুল গণী শোভন ও মো. জাকের হোসেন।
ছবি: প্রথম আলো

কৃষিতে রাইয়ান অ্যাগ্রো লিংকের এমডি রাজিয়া সুলতানা আইডিএলসি-প্রথম আলো এসএমই পুরস্কার বিজয়ী হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আগে আমি নারী ক্যাটাগরিতে অন্য পুরস্কার পেয়েছি। তবে এবার উদ্যোক্তা হিসেবে নারী-পুরুষের সম্মিলিত লড়াই করে এই পুরস্কার জেতায় আনন্দটা অন্যরকম।’

১৩ বছর বয়সে বাবার অকালমৃত্যুতে দিশেহারা হয়ে পড়া কিশোর মো. ওলিউল্লাহ। অভাবের সংসার, চরম প্রতিকূলতায় বেঁচে থাকার লড়াইয়ে ওলিউল্লাহ গরু চরানো ও শ্রমিকের কাজ বেছে নেন। চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জে ইসলাম মিস্ত্রির কাছে টানা তিন বছর নিখরচায় থাকা ও খাওয়ার শর্তে লেদের দোকান কাজ শুরু করেন। দিন দিন হয়ে ওঠেন দক্ষ শ্রমিক। এককালের শ্রমিক ওলিউল্লাহর খ্যাতি এখন দেশজুড়ে। তার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আমদানির বিকল্প হিসেবে উৎপাদন করছেন কৃষি কাজে ব্যবহারের উপযোগী বিভিন্ন যন্ত্রপাতি।

জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বত্বাধিকারী মো. ওলিউল্লাহ উৎপাদন শিল্পে পুরস্কার পেয়েছেন। পুরস্কার পাওয়ার পর তিনি বলেন, ‘আমি অনেক আনন্দিত। এ জন্য প্রথম আলো এবং আইডিএলসিকে ধন্যবাদ।’

পাটের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে কাজ করছেন নেত্রকোনার নারী উদ্যোক্তা কামরুন্নাহার খানম। তাঁর পাটের জুতার পাশাপাশি ব্যাগ, শোপিস, মেয়েদের গয়না, বিভিন্ন ধরনের কভার, ম্যাট, শতরঞ্জি, পরিধেয় ব্লেজার, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহারযোগ্য জিনিস দেশে ও দেশের বাইরে পাড়ি জমাচ্ছে। প্রশিক্ষণ দিয়ে নিজেই শ্রমিকদের গড়ে নিয়েছেন। এখন কাজ করছেন নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতেও।

নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পুরস্কার পাওয়ার পর নবাবী ফুটওয়্যার লিমিটেডের এমডি কামরুন্নাহার খানম বলেন, এই পুরস্কার আমাকে ভবিষ্যৎ কাজের ক্ষেত্রে আরও অনুপ্রেরণা দেবে।

মুক্তিযুদ্ধকালিন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচারিত ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য ওঠেছে’, ‘নোঙ্গর তোলো তোলো’ ও ‘তীর হারা ওই ঢেউয়ের সাগর’ গান তিনটি পরিবেশন করেন শিল্পী বিজন মিস্ত্রি, পূজন দাস, মো. মতিউর রহমান, মো. রাসেল, মমতাজ লাবনী, শিমু দে, মৌমিতা পাল ও শুক্লা পাল।
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের গ্র্যাজুয়েট রেহানা আক্তার তাঁর শিল্পকর্মকে পৌঁছে দিয়েছেন মানুষের ঘরে ঘরে। না, শোপিস হিসেবে নয়। বরং তাঁর হ্যান্ডমেড সিরামিকের টেবিল ওয়্যার মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহার্য। কানাডার টরন্টোর একটি গ্রামের প্রায় সব বাড়িতেই রেহানার ক্লে-ইমেজের তৈজস রয়েছে।

ক্লে ইমেজের স্বত্বাধিকারী রেহানা আক্তার বিশেষ পুরস্কার পেয়েছেন। পুরস্কার হাতে পেতে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করলেন এভাবে, ‘প্রত্যেকটা প্রাপ্তি কিন্তু এগিয়ে যাওয়ার শক্তি তৈরি করে। এই স্বীকৃতি আমাদের মাথার ওপর একটা ছায়া হয়ে থাকবে।’

অনুষ্ঠানে প্রাণবন্ত উপস্থাপনা করেন প্রথম আলোর যুব কার্যক্রম ও ইভেন্টস বিভাগের প্রধান মুনির হাসান
ছবি: প্রথম আলো

অনুষ্ঠানের শেষ দিকে ছয় পুরস্কার বিজয়ী ফটোসেশনের জন্য মঞ্চে ওঠেন। ছয়টি চেয়ারে অতিথি ও জুরি বোর্ডের সদস্যরা বসবেন। পেছনে দাঁড়াবেন বিজয়ীরা। তবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিজয়ীরাই বসবেন সামনে। আমরা পেছনে। তাঁর প্রস্তাবেই উপস্থিত সবাই স্বাগত জানান। ছবির ফ্ল্যাশ জ্বলে উঠল।

বিজয়ের মাস। সঙ্গে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশি মানুষের গৌরবের এই অর্জন উদ্‌যাপনে ১৯৭১ সালে রচিত ও স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে প্রচারিত তিনটি গান পরিবেশন করেন শিমু দে, বিজন মিস্ত্রি, শুক্লা পাল, মমতাজ লাবনী, পূজন দাস, মো. মতিউর রহমান এবং মো. রাসেল। নোঙর তোলো তোলো, তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর এবং পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে—এই তিনটি গানে কণ্ঠ মেলাতে মেলাতে পর্দা নামল আয়োজনের।