ইলিশ পাচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গের জেলেরা

ছবি: সংগৃহীত

এ মৌসুমেও পশ্চিমবঙ্গের জেলেদের জালে সেভাবে ধরা পড়েনি ইলিশ। যে আশা করে জেলেরা ট্রলার নিয়ে সমুদ্রে ছুটেছিলেন, তা পূরণ না করেই বাড়ি ফিরেছেন তারা। ব্যবসায়ীরা জানান, ইলিশ না পাওয়ায় ঋণের টাকাও পরিশোধ করতে পারছেন না তাঁরা।

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার ইলিশ ব্যবসায়ীরা এক বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা করেন। তাঁরা জানান, ইলিশ মৌসুম শুরুর আগে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সমুদ্রে জেলেদের পাঠিয়েছেন তাঁরা। এই জেলেদের অগ্রিম বেতন হয়েছে। সেই সঙ্গে জেলেদের খাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় খরচও বহন করতে হয়। তবে গত দুবছর এত খরচ করেও  সেভাবে ইলিশ ধরা পড়েনি জেলেদের জালে। তাই বিরাট হতাশার মধ্যে দিন গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। আগামী বছর টাকা খরচ করে সমুদ্রে ইলিশ ধরতে জেলেদের পাঠাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আছেন তাঁরা।

ট্রলারমালিকেরা বলেছেন, ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্রসীমা থেকে ৩৩ হাজার টন ইলিশ পাওয়া গিয়েছিল। ২০১৯ সেই পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ১৯ হাজার টনে। আর চলতি বছর সেই পরিমাণ আরও কমে দাঁড়ায় মাত্র ৩ হাজার টনে। এত কম মাছ ওঠায় তাঁরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক বিজন মাইতি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘মাছ না পেলে কীভাবে আমরা আমাদের ঋণের টাকা শোধ করব। এমনিতেই আমরা ঋণে জর্জরিত। তাই এমনও হতে পারে, সামনের মৌসুমে আমরা আর লাখ লাখ টাকা খরচ করে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে পাঠাব না। এ বিষয়ে আমরা কথা বলব রাজ্য সরকারের সঙ্গে, যাতে তারা আমাদের জন্য নতুন পথের সন্ধান দিতে পারে। বাঁচার পথ দেখাতে পারে।’

ট্রলার মালিকেরা আরও বলেছেন, ‘এবার বৈরী আবহাওয়ার জন্য আমাদের জেলেরা সমুদ্রে যেতে পারেনি। গেলেও দু-এক দিনের বেশি সমুদ্রে থাকতে পারেনি। বিরূপ আবহাওয়ার জন্য তাদের ফিরে আসতে হয়েছে। তা ছাড়া আমাদের সমুদ্র উপকূলবর্তী নদীতে পলি পড়ে যাওয়ায় নদীর নব্যতা বাধাগ্রস্ত হয়েছে, ইলিশও নেই। তাই আমরা এবার হতাশ হয়ে পড়েছি। এভাবে চললে আর আমরা ইলিশ ধরতে পারব না।’
পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্রে ইলিশ ধরার মৌসুম চলে ১৫ জুন থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত।