উচ্চফলনশীল বারি-৫ জাতের পেঁয়াজের চাষ আশাব্যঞ্জক: কৃষিমন্ত্রী

দেশে হেক্টরপ্রতি প্রায় ১৯ মেট্রিক টন উচ্চফলনশীল বারি-৫ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হলে এই উচ্চফলনশীল বারি-৫ জাতের পেঁয়াজের চাষ সারা দেশে দ্রুত ছড়িয়ে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।
গতকাল রোববার দুপুরে মেহেরপুরের সদর উপজেলার কালিগাংনি গ্রামে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) আয়োজিত ‘গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের মাঠ দিবস’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মন্ত্রী। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ভার্চ্যুয়াল ওই বৈঠকে যোগ দেন মন্ত্রী।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য। মজুত করে রাখা যায় না। সহজে মজুত করে রাখতে পারলে পেঁয়াজ নিয়ে সংকট হতো না। বিশেষত কোল্ড স্টোরেজে মজুত করতে পারলে পেঁয়াজ নিয়ে সংকট কমত, তবে সে ক্ষেত্রে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যেতে পারে। সেই তুলনায় গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ সহজতর ও অধিক সম্ভাবনাময়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনকে দ্রুত সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, এই উচ্চফলনশীল বারি-৫ জাতের পেঁয়াজের চাষ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজচাষিদের বীজ, উপকরণ, প্রযুক্তিসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।

স্বল্প সুদে পেঁয়াজচাষিদের কৃষিঋণ নিশ্চিত করতে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের সমন্বয়ে কমিটি করে দেওয়া হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজ, রসুনসহ মসলাজাতীয় ফসলের চাষে মাত্র ৪ শতাংশ সুদে কৃষকদের কৃষিঋণ দেওয়া হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলো এই কৃষিঋণ প্রকৃত কৃষক পান না। স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব কৃষিঋণ নিয়ে কৃষি বাদে অন্যান্য কাজে লাগান। কৃষিঋণ যাতে প্রকৃত কৃষক পান, পেঁয়াজ, রসুনসহ মসলাজাতীয় ফসলের চাষে কাজে লাগে, তা কঠোরভাবে এসব কমিটির মাধ্যমে মনিটর করা হবে।

এ সময় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, কৃষিতে অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল মেহেরপুর। এখানকার মাটি খুবই উর্বর হওয়ায় প্রায় সব ধরনের ফসল প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন হয়। অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি পেঁয়াজের ফলনও অনেক। দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি পূরণে এ অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই স্বল্প খরচে যেন অধিক পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন করা যায়, সেদিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। এ জন্য আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া পেঁয়াজের পচন রোধে আধুনিক সংরক্ষণব্যবস্থাও গড়ে তুলতে হবে।

কৃষিসচিব মেসবাহুল ইসলাম বলেন, আগামী তিন বছরে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন ১০ লাখ টন বাড়ানো হবে। সে জন্য গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়াতে হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় এ লক্ষ্য অর্জনে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে।

অনুষ্ঠানে বারির মহাপরিচালক মো. নাজিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান, পিকেএসএফের সিনিয়র মহাব্যবস্থাপক আকন্দ মো. রফিকুল ইসলাম, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপনির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেন বক্তব্য দেন।