ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধা জুন পর্যন্ত বাড়ানোর আহ্বান

এফবিসিসিআইয়ের বার্ষিক সাধারণ সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। আজ রোববার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে
ছবি: এফবিসিসিআইয়ের সৌজন্যে

বিনা শর্তে ব্যাংকঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধা আগামী জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেছেন, করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা এখনো ভয়াবহ অবস্থা পার করছেন। তাই বিনা শর্তে ব্যাংকঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে আজ রোববার আয়োজিত এফবিসিসিআইয়ের বার্ষিক সাধারণ সভায় সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এসব কথা বলেন। ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব এ–সংক্রান্ত ঘোষণা দিন।’ এফবিসিসিআইয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

এ বিষয়ে পরে এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাঁচামালের দাম দু-তিন গুণ বেড়ে গেছে। জাহাজভাড়াও বেড়েছে কয়েক গুণ। এমন প্রেক্ষাপটে ব্যবসা-বাণিজ্য গতিশীল রাখতে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যাংকঋণের ক্ষেত্রে বিনা শর্তে আগামী জুন পর্যন্ত শ্রেণীকরণের সুবিধা চেয়ে চিঠি দিয়েছি। পাঁচ কোটি টাকার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে বিপরীতে ঋণ শ্রেণীকরণের সুবিধা চেয়েছি। আমরা জানি, এতে করে ব্যাংকগুলো বিপদে পড়ে যাবে। তারপরও ব্যবসা-বাণিজ্যে ও অর্থনীতির স্বার্থে সুবিধাটি চেয়েছি।’

এফবিসিসিআই সভাপতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাড়াহুড়া করে নতুন আয়কর আইন চূড়ান্ত করবে না। যেহেতু বর্তমানে একটি আয়কর আইন প্রযোজ্য রয়েছে, তাই এফবিসিসিআইসহ সব অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নতুন আইন প্রণয়ন করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জসিম উদ্দিন বলেন, এফবিসিসিআইকে সত্যিকার অর্থে গবেষণাভিত্তিক সংগঠনে পরিণত করতে খাতভিত্তিক ১৮ জন উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নীতি প্রণয়নে এই বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের বিশ্লেষণ ও পরামর্শের মাধ্যমে সরকারের কাছে এফবিসিসিআই তার সুপারিশ আরও শক্তিশালীভাবে তুলে ধরতে সমর্থ হবে বলে মনে করেন তিনি।

এফবিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনটির দরজা সব ব্যবসায়ীর জন্য খোলা। তাঁদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে এফবিসিসিআই পাশে থাকবে। ইতিমধ্যে ৭৮টি স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠিত হয়েছে। খাতভিত্তিক সমস্যা চিহ্নিত ও দ্রুত সমাধানে কাজ করবে এসব কমিটি।

দেশের শিল্পকারখানায় উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সঙ্গে এফবিসিসিআই যৌথভাবে কাজ করছে জানিয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, ইতিমধ্যে এফবিসিসিআইতে সেফটি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
জসিম উদ্দিন বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর উদ্‌যাপনে ৫০ জন ব্যবসায়ী মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দেবে এফবিসিসিআই।

এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সভায় সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী, সহসভাপতি এম এ মোমেন, মো. আমিনুল হক, মো. আমিন হেলালী, সালাহউদ্দীন আলমগীর, মো. হাবীব উল্লাহ, এম এ রাজ্জাক খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় এফবিসিসিআইয়ের ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন পাস হয়। পরে বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।