করোনাকালে শ্রমিকদের ঝুঁকি ভাতা দেওয়ার দাবি

পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে ২০ রমজানের মধ্যে তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের উৎসব ভাতা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি)। একই সঙ্গে ২৫ রমজানের মধ্যে মে মাসের অর্ধেক বেতন প্রদানের দাবি করেছে সংগঠনটির নেতারা।

আইবিসি আরও দাবি করেছে, করোনাকালে শ্রমিকদের ঝুঁকি ভাতা দিতে হবে। সেটি কোনোভাবেই মোট বেতনের অর্ধেকের কম হবে না। এ ছাড়া সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী শ্রমিকদের যাতায়াতের জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে, না হলে মাথাপিছু দৈনিক ২০০ টাকা যাতায়াত ভাতা দিতে হবে।

তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসানকে গত শুক্রবার দেওয়া এক চিঠিতে এই দাবি জানায় আইবিসি। সেই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, করোনার সংক্রমণ রোধে লকডাউনের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকদের কাজ করানোর কথা থাকলেও কারখানার মালিকেরা আদৌ তা মানছেন না। তাই স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি নিশ্চিত করার আহ্বান জানায় ১৯টি শ্রমিক ফেডারেশনের এই জোট।

আরও পড়ুন

আইবিসির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সালাউদ্দিন স্বপন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সহিদ উল্লাহ ভূঁঞা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনাকালে আমার–আপনার জীবনের যে ঝুঁকি, শ্রমিকদের জীবনেরও সমান ঝুঁকি রয়েছে। তাই তাঁদের প্রতি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা প্রতিটি কারখানার মালিকের অপরিহার্য দায়িত্ব ও কর্তব্য। কিন্তু সরকারি ঘোষণা ও নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও মালিকপক্ষ কি তাদের শ্রমিকদের প্রতি সুবিচার করছে?

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দ্বিতীয় ধাপে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ‘সর্বাত্মক লকডাউনে’ কাজ ও চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। পরে সেই বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়। তবে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের দাবির মুখে শুরুতেই শিল্পকারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সরকারের প্রজ্ঞাপনে নির্দেশনা দেওয়া হয়, শিল্পকারখানা চালু রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। শ্রমিকদের আনা-নেওয়ায় কারখানার নিজস্ব উদ্যোগে পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে।

আরও পড়ুন

প্রথম থেকেই কারখানায় ঢোকার আগে ফটকে শ্রমিকদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা, হাত ধোঁয়া, জুতা জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করে কারখানাগুলো। তবে সকালে ও বিকেলে হাজার হাজার শ্রমিক একসঙ্গে রাস্তায় নামার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যায়নি। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী অধিকাংশ কারখানা নিজস্ব পরিবহনের ব্যবস্থা করেনি। ফলে, গণপরিবহন সংকটে কারখানায় আস-যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক শ্রমিক বিড়ম্বনায় পড়েন।