কাদের কারণে লোকসান, সেই প্রশ্নের উত্তর নেই

বন্ধ সরকারি পাটকল চালু ও আধুনিকায়নের দাবিতে বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।

পাটকল
ফাইল ছবি

বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা বলেছেন, রাষ্ট্রমালিকানাধীন পাটকগুলো বন্ধের পেছনে সরকার লোকসানের অজুহাত দেখাচ্ছে। কিন্তু কেন ও কাদের কারণে লোকসান হয়েছে এবং লোকসান বন্ধে কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেসব প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। এ যেন সরকার মাথাব্যথায় ওষুধ না দিয়ে মাথা কেটে ফেলার ব্যবস্থা করেছে।

বন্ধ সরকারি পাটকল চালু ও আধুনিকায়নের দাবিতে গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সচিবালয়ে পাট মন্ত্রণালয় অভিমুখে যাত্রা করে পুলিশের বাধার মুখে পড়লে তাঁদের কর্মসূচি শেষ হয়। একই দাবিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। ঢাকায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন বাসদ নেতা খালেকুজ্জামান।

বাম জোটের নেতারা বলেন, লোকসানের জন্য দায়ী সরকারের ভুলনীতি, দুর্নীতি ও লুটপাট। সময়মতো পাট কেনার টাকা না দেওয়া, পরে বেশি দামে নিম্নমানের পাট কেনা, ৫০-৬০ বছরের পুরোনো তাঁত দিয়ে উৎপাদন এবং বিজেএমসির মাথাভারী প্রশাসনিক ব্যয় পাটকলগুলোর লোকসানের প্রধান কারণ। তাঁরা বলেন, সরকারি ২৫টি পাটকলের ১০ হাজার তাঁতের মধ্যে অর্ধেকই অচল। ফলে পুরোনো যন্ত্রপাতি আধুনিকায়ন না করে পাটকল লাভজনক করা যাবে না। বাম জোট ও স্কপের পক্ষ থেকে হিসাব করে দেখানো হয়েছে, ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা খরচ করে আধুনিক তাঁত স্থাপন করলে উৎপাদন তিন গুণ বাড়বে।

নেতারা আরও বলেন, বন্ধ হওয়ায় সরকারি পাটকল কাঁচা পাট কিনবে না। এই সুযোগে বেসরকারি পাটকলগুলো সিন্ডিকেট করে ইচ্ছেমতো পাটের দাম নিয়ন্ত্রণ করবে। এতে পাটচাষিরা পাটের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হবেন। পাটকল বন্ধ হওয়ায় ভারতে কাঁচা পাট পাচার আরও বাড়বে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি। তাঁরা বলেন, মন্ত্রণালয় একবার বলছে পাটকলগুলোকে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) মাধ্যমে চালু করা হবে। আবার বলছে, ইজারা দেওয়া হবে। প্রকৃতপক্ষে পাটকল ব্যক্তিমালিকদের কাছে বিক্রি করার পাঁয়তারা চলছে।