গরুর চামড়ার দর বাড়ল ৭ টাকা, চামড়া ক্রয়ে ৪৪৩ কোটি টাকা ঋণ

প্রতিবারের মতো এবারও কোরবানির পশুর চামড়ার দর নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। চামড়া খাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়েই ঢাকা ও ঢাকার বাইরের জন্য আলাদা আলাদা দর ঠিক করা হয়েছে।

এর আগে সচিবালয়ে গতকাল মঙ্গলবার ‘কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বৈঠক সঞ্চালনা করেন।

বৈঠকে যুক্ত ছিলেন তথ্যসচিব মো. মকবুল হোসেন, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহীন আহমেদসহ চামড়া খাতের ব্যবসায়ীরা।

‘আগের মতো এবারও বেশির ভাগ ব্যবসায়ীর চামড়া কিনতে ঋণ নেওয়ার সক্ষমতা নেই। ২০–২২টি প্রতিষ্ঠান ১৬৫ কোটি টাকা ঋণ শোধ করেছে, তারাই সমপরিমাণ ঋণ নিতে পারবে।
শাহীন আহমেদ, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি

বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, গরুর চামড়া ৭ টাকা এবং খাসির চামড়ার দর ৩ টাকা বাড়ানো হয়েছে এবার। এবার ঢাকায় লবণযুক্ত চামড়া কিনতে হবে প্রতি বর্গফুট ৪৭ থেকে ৫২ টাকা দরে। আর ঢাকার বাইরের দর ৪০ থেকে ৪৪ টাকা। এ ছাড়া সারা দেশে লবণযুক্ত খাসির চামড়ার দর ৩ টাকা বাড়িয়ে প্রতি বর্গফুটের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। তবে বকরির চামড়ার দর আগেরটাই থাকছে, অর্থাৎ ১২ থেকে ১৪ টাকা।

বাণিজ্যমন্ত্রী নতুন দর ঘোষণার পর বিটিএর সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, ‘আমরা একমত।’ চামড়ায় লবণ দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সামনে একটি জুমার দিন আছে। সেদিন যদি চামড়ায় লবণ দেওয়ার কথা মসজিদ থেকে বলে দেওয়া হয়, তাহলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে বলে আশা করা যায়।

৪৪৩ কোটি টাকা ঋণ দিতে চায় ব্যাংক

বরাবরের মতো এবারও ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চামড়া ক্রয়ে ঋণ দিতে চায় ব্যাংকগুলো। এ জন্য ৪৪৩ কোটি টাকা ঋণ বরাদ্দ রেখেছে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো। তবে চামড়া খাতের ব্যবসায়ীদের ঋণ নেওয়ার সক্ষমতা আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিষয়টি হলো, যে পরিমাণ ঋণ শোধ হয়, সাধারণত সে পরিমাণই ঋণ দেয় ব্যাংকগুলো।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহীন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগের মতো এবারও বেশির ভাগ ব্যবসায়ীর চামড়া কিনতে ঋণ নেওয়ার সক্ষমতা নেই। ২০–২২টি প্রতিষ্ঠান ১৬৫ কোটি টাকা ঋণ শোধ করেছে, তারাই সমপরিমাণ ঋণ নিতে পারবে। ব্যাংকের যত টাকা শোধ হয়, তাই আবার দেওয়া হয়; এর বেশি নয়।

সবচেয়ে বেশি ঋণ দিতে চায় ইসলামী ব্যাংক—১৭০ কোটি টাকা। এর পরেই জনতা ব্যাংক দেবে ১২০ কোটি টাকা; আর অগ্রণী ব্যাংক ঋণ দেবে ৮৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া রূপালী ব্যাংক দেবে ৩০ কোটি টাকা, সোনালী ব্যাংক ২৫ কোটি টাকা। আল–আরাফাহ্, যমুনা, ঢাকা, দি সিটি, এনসিসি, সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকও অল্প কিছু ঋণ দিতে চায়।