ভালো বাসা চান? তবে আর এখানে-সেখানে দৌড়াদৌড়ি নয়। ঘরে বসেই খুঁজুন পছন্দের বাসস্থান। কম্পিউটার বা হাতের মুঠোফোনের সহায়তায় পেয়ে যেতে পারেন আপনার মনের মতো ভালো বাসা। শুধু বাসাই নয়, পাবেন পছন্দের জমি ও বাণিজ্যিক জায়গাও। রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল, কুমিল্লা, বগুড়ায়ও আপনি খুঁজতে পারবেন পছন্দের ফ্ল্যাট বা জমি।
ঘরে বসে নিজের স্বপ্নের আবাস খোঁজার সেই সুযোগ আবারও নিয়ে এসেছে প্রথম আলো ডিজিটাল আয়োজিত অনলাইন আবাসন মেলা। চতুর্থবারের মতো আয়োজিত এ মেলার শিরোনামও তাই ‘ঘরে বসেই ঘর খুঁজুন’। গতকাল শনিবার শুরু হয়েছে সাত দিনব্যাপী এ আবাসন মেলা। রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে গতকাল বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করা হয়। সাত দিনের এ মেলায় অংশ নিচ্ছে ৪২টি আবাসন প্রতিষ্ঠান। এবারের মেলায় প্রদর্শন করা হচ্ছে ৫ হাজার ২৫ ফ্ল্যাট, ২ লাখ ৫ হাজার কাঠা জমি ও ৭ লাখ ৫০ হাজার বর্গফুট বাণিজ্যিক জায়গা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মেলা চলাকালে প্রতিদিন আগ্রহীরা অনলাইনে নিজের পছন্দের বাসস্থান খুঁজতে পারবেন। আবাসনসংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাবে অনলাইনে abashonmela.pro-তে। ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এ মেলা। মেলার কৌশলগত অংশীদার আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। মেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক ডিবিএল সিরামিকস। আর সহযোগিতায় রয়েছে আসবাবের ব্র্যান্ড হাতিল। অনুষ্ঠানের শুরুতে অনলাইনে আবাসন মেলা আয়োজনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন প্রথম আলোর ডিজিটাল ব্যবসায় বিভাগের প্রধান জাবেদ সুলতান।
প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আবাসন প্রতিষ্ঠান, মেলার পৃষ্ঠপোষক ও রিহ্যাব নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘দুনিয়া পাল্টে যাচ্ছে। সময় বদলে যাচ্ছে প্রতিদিন। সবকিছুতেই এখন ডিজিটালের ছোঁয়া লেগেছে। এ কারণে আবাসন মেলাও আমরা অনলাইনে আয়োজন করছি। প্রথম আলোর জন্য এটি বড় একটি উদ্দীপনা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামী দিন ডিজিটালের। আমাদের সবাইকে সেদিকেই যেতে হবে।’
ডিবিএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ বলেন, অনলাইনে এ মেলা আয়োজনের ফলে ঘরে বসে সহজেই আগ্রহী ক্রেতারা নিজেদের পছন্দের ফ্ল্যাট ও জমি খুঁজে নিতে পারবেন। বাংলাদেশের আবাসন খাত একসময় বিশ্বকাতারে পৌঁছাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
হাতিল ফার্নিচারের পরিচালক মশিউর রহমান বলেন, করোনা-পরবর্তী পৃথিবীতে বেড়েছে ডিজিটাল নির্ভরশীলতা। বাংলাদেশও সেদিকে যাচ্ছে। অর্থনীতির জন্য আবাসন খাত খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এ খাত ভালো থাকলে দেশের অন্য অনেক খাত ভালো থাকবে।
রিহ্যাবের সহসভাপতি সোহেল রানা বলেন, গত চার দশকে ব্যক্তি উদ্যোগে আবাসন ব্যবসা নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। সারা পৃথিবীতে আবাসন ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ওই সব দেশের সরকারের কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়ে। বাংলাদেশে এ খাত দাঁড়িয়েছে সরকারের সহযোগিতা ছাড়া।
নাভানা রিয়েল এস্টেটের মহাব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম বলেন, আবাসন খাতের সঙ্গে অনেক ধরনের ব্যবসার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এখন সময় প্রযুক্তির। সময় ও প্রযুক্তির সঙ্গে যারা তাল মেলাতে পারবে না, তারা ব্যবসা থেকে হারিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন বহুজাতিক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের রিটেইল বিভাগের প্রধান সাব্বির আহম্মেদ, আইডিএলসি ফাইন্যান্সের গ্রাহক বিভাগের প্রধান আতাউর রহমান চৌধুরী, জি-গ্যাস এলপিজির প্রধান ব্যবসায় কর্মকর্তা আবু সাঈদ রাজা, ইজি বিল্ডের সহকারী ব্যবস্থাপক হাসান হাসিবুর রহমান। এবারের মেলায় এসব প্রতিষ্ঠান কো-স্পনসর। এর বাইরে মেলার গোল্ড স্পনসর ১৪টি প্রতিষ্ঠান।
আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীরা জানান, অনলাইনে আয়োজিত এ মেলার মাধ্যমে আগ্রহী ক্রেতাদের বেশ ভালো সাড়া পাওয়া যায়। গত বছর অনলাইনে আয়োজিত এ মেলার মাধ্যমে সাড়ে ৪ হাজার ফ্ল্যাট ও জমির বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন আগ্রহী ক্রেতারা। পরে তাঁরা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে তাঁদের পছন্দের বাসস্থান খুঁজে নিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এডিসন রিয়েল এস্টেটের প্রধান ব্যবসায় কর্মকর্তা আহমেদ পাশা, মেরিন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুসরত-ই-খুদা, কিউব হোল্ডিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুজন শর্মা, ইনটেক প্রোপার্টিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফখরুল ইসলাম, রাতুল প্রোপার্টিজের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আলিনূর রহমান, ওরিয়েন্টাল গ্রুপের পরিচালক রাকিবুল করিম খান, কৃষিবিদ গ্রুপ রিয়েল এস্টেটের বিপণন বিভাগের প্রধান হাসান আশেক মাহমুদ, রূপায়ন উত্তরা সিটির সহকারী মহাব্যবস্থাপক উজ্জ্বল আহমেদ, আনোয়ার ল্যান্ডমার্কের উপমহাব্যবস্থাপক রাকিব হোসাইন প্রমুখ।