জমির মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে

ভার্চুয়াল মাধ্যমে ঢাকা চেম্বারের আলোচনায় অংশ নেন বক্তারা
ঢাকা চেম্বারের সৌজন্যে

বাংলাদেশে দেওয়ানি মামলা (সিভিল কেস) নিষ্পত্তি করতে ৮ থেকে ১০ বছর সময় কেন লাগে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান। তাঁর মতে, এটা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। মামলা নিষ্পত্তিতে এত বেশি সময় লাগার কারণে ব্যবসায় মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বলে মনে করেন তিনি। অবশ্য মামলা নিষ্পত্তিতে দেরি হওয়ার পেছনে আইনজীবী ও কায়েমি স্বার্থান্বেষী মহলকে দায়ী করেছেন সালমান এফ রহমান। আজ শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিমসহ অন্যরা। ওই ভার্চ্যুয়াল সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইনজীবী সামির সত্তার।

আইন বিষয়ে আমি যতটুকু পড়াশোনা করেছি, তাতে এটুকু বুঝেছি যে যত মামলা হয়, তার সঠিক ব্যবস্থাপনা আমরা করতে পারছি না। বছরের পর বছর মামলা চলতে থাকে। আর সমাজও তা গ্রহণ করে নেয়।
সালমান এফ রহমান, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা

সালমান এফ রহমান বলেন, দেশের শ্রমবাজারে দক্ষ শ্রমিকের ঘাটতি আছে। এই ঘাটতির কারণ হলো, এখানে পড়াশোনার সঙ্গে চাকরির বাজারের সমন্বয় নেই। পরিকল্পনা ছাড়া একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো বিষয়ে ভর্তি হন, যে বিষয়ের সঙ্গে চাকরির বাজারের সম্পর্ক নেই। তাহলে ওই শিক্ষার্থী চাকরিটা পাবে কীভাবে?

দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দেওয়ানি মামলা বা সিভিল কেসকে অন্যতম বাধা হিসেবে উল্লেখ করে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘আইন বিষয়ে আমি যতটুকু পড়াশোনা করেছি, তাতে এটুকু বুঝেছি যে যত মামলা হয়, তার সঠিক ব্যবস্থাপনা আমরা করতে পারছি না। বছরের পর বছর মামলা চলতে থাকে। আর সমাজও তা গ্রহণ করে নেয়।’ তিনি আরও বলেন, এভাবে চলতে পারে না। এর সমাধান করতে হবে। ব্রিটিশ আদালত স্পষ্ট করে বলে দেয়, এই মামলা তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে শেষ করবে। কখন কী করতে হবে, তা-ও স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়। তাঁর মত হলো, দেশে আইন সমস্যা নয়, সমস্যা হলো ব্যবস্থাপনা ও কায়েমি স্বার্থান্বেষী মহল।

আসিফ ইব্রাহিম বলেন, সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সমন্বয় জরুরি। সরকার সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে। বিশাল এই কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে সরকারের এক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আরেক মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে।

আহসান খান চৌধুরী বলেন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ বিশ্বের ১৪১টি দেশে পণ্য পাঠাচ্ছে। প্রতিনিয়তই রপ্তানির বাজার বড় হচ্ছে। তবে আরও ভালো করার সুযোগ আছে। বিদ্যমান আইন ও নীতি সংস্কারের পাশাপাশি বিদেশি ঋণ নেওয়ার প্রক্রিয়া সহজতর করতে হবে।

বক্তারা বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণে সেবা ডিজিটাইজেশনে গুরুত্ব দেন। একই সঙ্গে কর হার না বাড়িয়ে করের আওতা বাড়ানোর তাগিদ দেন তাঁরা।