টিকা আনা সহজ, দেওয়া কঠিন: অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল
ফাইল ছবি

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, এই মুহূর্তে জাতির চাহিদা হচ্ছে কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন (টিকা)। কিন্তু ভ্যাকসিন আনা সহজ, দেওয়া কঠিন।

আজ বুধবার ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, সবাইকে ভ্যাকসিন তথা টিকার আওতায় আনা জটিল কাজ। কারা পাবে—সে জন্য প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ইত্যাদি পর্যায় চিহ্নিত করা হবে। সবাই অপেক্ষা করে আছেন কবে ভ্যাকসিনের কাজটা শুরু করা হবে। কবে ভ্যাকসিন সবাইকে দেওয়া শেষ করা যাবে।

আমরা দেখব যে আন্তর্জাতিক বাজারে ভ্যাকসিনের দাম কত এবং আমরা কত দামে পাচ্ছি। সেটা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করব। কারণ এক দেশ ভ্যাকসিন তৈরি করবে না, অনেক দেশ তৈরি করবে। এক দেশ থেকে যদি বেশি দাম বলে তবে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা অবশ্যই করব, সেই সুযোগ আমাদের আছে।
আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশা হলো, সবার, এমনকি যাঁরা খরচ বহন করতে পারবেন না, তাঁদেরও খরচ তিনি বহন করবেন—এমন মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এটা এক দিনে হবে না। দেশের ১৭ কোটি মানুষকে এক দিনে টিকা দেওয়া যাবে না। তবে আমরা বিশ্বাস করি, সফল হব। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে এগোব।’

সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে ভারতের চেয়ে প্রায় ৪৭ শতাংশ বেশি অর্থ ব্যয় হচ্ছে বাংলাদেশের। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি এই টিকা উৎপাদন করছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। সেরামের কাছ থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা কিনছে বাংলাদেশ।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান সেরামের উৎপাদিত টিকা কোভিশিল্ডের প্রতি ডোজ কিনতে বাংলাদেশকে খরচ করতে হচ্ছে ৪ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় এর দাম পড়ে প্রায় ৩৪০ টাকা (১ ডলার= ৮৪.৯৬ টাকা)। আর সেরামের কাছ থেকে ভারত সরকার প্রতি ডোজ টিকা কিনছে ২ দশমিক ৭২ ডলার বা তাদের ২০০ রুপিতে, যা বাংলাদেশের ২৩১ টাকার মতো। সেই হিসাবে বলা যায়, টিকার প্রতি ডোজ কিনতে ভারতের চেয়ে বাংলাদেশকে প্রায় ৪৭ শতাংশ বেশি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।

সেরামের কোভিশিল্ড টিকার প্রথম চালান ২৫ জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে আসার কথা। সেরাম প্রথম চালানে ভারতকে ১ কোটি ১০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করবে। প্রতিষ্ঠানটি ১০০ কোটিরও বেশি ডোজ টিকা উৎপাদন করছে বিশ্বের নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জন্য।

সেরামের কোভিশিল্ড টিকার প্রথম চালান ২৫ জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে আসার কথা। সেরাম প্রথম চালানে ভারতকে ১ কোটি ১০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করবে। প্রতিষ্ঠানটি ১০০ কোটিরও বেশি ডোজ টিকা উৎপাদন করছে বিশ্বের নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জন্য।

অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, ভারতের চেয়ে ৪৭ শতাংশ বেশি দামে টিকার ডোজ কেনা হচ্ছে কেন এবং বাজেটে এর প্রভাব পড়বে কি না? জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বেশি দামে কেনার বিষয়টি তাঁর অজানা। তবে তিনি মনে করেন, ভারতে উৎপাদন হলে যে খরচ পড়বে, তা বিক্রি করলে দাম একটু বেশিই পড়বে। কারণ, তারা যখন বিক্রি করবে, তখন উৎপাদন খরচের সঙ্গে মুনাফার অংশ একত্র করেই হিসাব করবে।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা দেখব যে আন্তর্জাতিক বাজারে ভ্যাকসিনের দাম কত এবং আমরা কত দামে পাচ্ছি। সেটা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করব। কারণ এক দেশ ভ্যাকসিন তৈরি করবে না, অনেক দেশ তৈরি করবে। এক দেশ থেকে যদি বেশি দাম বলে তবে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা অবশ্যই করব, সেই সুযোগ আমাদের আছে।’