দেশে প্রথম বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কারখানা হচ্ছে

কাজ পেয়েছে চীনা কোম্পানি। ৪২ দশমিক ৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হবে ১৫,৩২৫ কোটি টাকা। প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের দাম পড়বে ১৮ দশমিক ২৯৫ টাকা। প্রয়োজনীয় বর্জ্য সরবরাহ করতে না পারলে চীনা কোম্পানিকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

বিশ্বের প্রায় সব উন্নত দেশে থাকলেও দেশে প্রথমবারের মতো ঘটনা এটি। বর্জ্য থেকে উৎপন্ন হবে বিদ্যুৎ। আর কারখানা হবে ঢাকায়। তুরাগ নদীর কাছাকাছি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন আমিন বাজার এলাকায়। কারখানা করবে চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিএমইসি) ৷ ৪২ দশমিক ৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হবে ১৫ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা।

সচিবালয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এ বিষয়ক একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু সালেহ মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

অতিরিক্ত সচিব আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল জানান, এটি নতুন ধরনের পদ্ধতি। বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের দাম পড়বে ১৮ দশমিক ২৯৫ টাকা। প্রকল্প স্থাপন করা হবে ২৫ বছর মেয়াদি। বিদ্যুৎ বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।

জানা গেছে, চীনা কোম্পানি নিজ ঝুঁকিতে প্ল্যান্ট স্থাপন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে। উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিক্রি করবে বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে। সিটি করপোরেশন দেবে প্রয়োজনীয় জমি। নিয়মিত বর্জ্য সরবরাহও করবে সিটি করপোরেশন। প্রতিদিন তিন হাজার টন বর্জ্য লাগবে।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রয়োজনীয় বর্জ্য সরবরাহ করতে না পারলে উত্তর সিটি করপোরেশনকে প্রতি টন ঘাটতি বর্জ্যের জন্য এক হাজার টাকা হারে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে পরে দেশের সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এবং জেলা পর্যায়েও বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা চিন্তা করবে সরকার।

আট প্রস্তাব অনুমোদিত

বিদ্যুৎসহ ক্রয় কমিটির বৈঠকে ১৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকার আটটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে বলে জানান আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল। শিল্প মন্ত্রণালয়ের পাঁচটি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি, এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একটি। এতে সরকারি কোষাগার থেকেই ব্যয় করা হবে ১৫ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। ৬০০ কোটি টাকার কিছু বেশি ঋণ নেওয়া হবে দেশীয় ব্যাংক থেকে।

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে সৌদি আরব থেকে থেকে তিনটি লটে ৭৫ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি লটের বিপরীতে দাম পড়বে ৫৬ কোটি টাকার কিছু বেশি। সিঙ্গাপুর থেকে আনা হবে আলাদা দুই প্রস্তাবে ২৫ হাজার করে মোট ৫০ হাজার টন। এগুলোর একেকটিতে ব্যয় হবে প্রায় ৬৭ কোটি টাকা করে।

এ ছাড়া ৩৪১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে রাশিয়া থেকে আনা হবে ১ লাখ ৮০ হাজার টন মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার।

খুলনা সড়ক বিভাগের আওতাধীন ‘দিঘলিয়া (রেলগেট)-আড়ুয়া-গাজীরহাট-তেরখাদা সড়কের প্রথম কিলোমিটারে ভৈরব নদীর ওপর সেতু নির্মাণ’প্রকল্পের সেতু নির্মাণসহ পূর্ত কাজে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান ওয়াহিদা কন্সট্রাকশন লিমিটেডকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৩০২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

ক্রয় কমিটির পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক ফরিদপুর, বরিশাল, ঝালকাঠী, ভোলা, নওগাঁ, সিলেট জেলায় ছয়টি রাইস মিল স্থাপন সংক্রান্ত প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে।