পণ্য হাতে পাওয়ার অপেক্ষা বাড়াল পরিবহন ধর্মঘট

পরিবহন ধর্মঘটের কারণে পণ্য জট চট্টগ্রাম বন্দরে

চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজজট প্রায় শূন্যে নামিয়ে এনেছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিশ্বের বহু বন্দর যে সময় জটে হাবুডুবু খাচ্ছে, তখন এই বন্দর দিন দিন জেটিতে জাহাজ ভেড়ানোর নজির স্থাপন করেছে। এ রকম অবস্থায় জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির জেরে পরিবহনমালিকদের ডাকা চার দিনের পরিবহন ধর্মঘটে বন্দরের সেই সাফল্যে সাময়িক ছেদ পড়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত বন্দরের বাইরে জেটিতে ভেড়ানোর জন্য অপেক্ষায় থাকা জাহাজের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০। অথচ ধর্মঘট শুরুর আগের দিনও জেটিতে ভেড়ানোর জন্য জাহাজকে এক দিনের বেশি অপেক্ষায় থাকতে হয়নি। ধর্মঘট প্রত্যাহার হলেও, এর প্রভাব কিন্তু রয়ে গেছে। এখন একটি জাহাজকে এক থেকে তিন দিন বাড়তি অপেক্ষা করতে হচ্ছে জেটিতে ভেড়ানোর জন্য। তাতে পণ্য হাতে পেতেও ব্যবসায়ীদের এক থেকে তিন দিন বাড়তি সময় লেগে যাচ্ছে।

বেসরকারি শিপিং প্রতিষ্ঠান সাইফ মেরিটাইম লিমিটেডের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ জহির নিয়মিত বন্দরের কনটেইনার জাহাজের অবস্থা পর্যালোচনা করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, টানা কয়েক মাস জাহাজজট না থাকার রেকর্ড হয়েছিল চট্টগ্রাম বন্দরে। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যায়নি। তবে জাহাজ আগমনের হার বিশ্লেষণ করে আশা করা যায়, সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে এই চাপ নিরসন করা যাবে। আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

করোনার ধাক্কা কাটিয়ে গত আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে জাহাজজট কমে আসে এই বন্দরে। সাধারণ পণ্যবাহী জাহাজের চাপ কম থাকায় জাহাজজট নিরসনের সুযোগ আসে বন্দরের হাতে। আবার ইস্পাতশিল্পের কাঁচামাল, পুরোনো লোহার টুকরাবাহী জাহাজ বেসরকারি জেটিতে ভেড়ানোর নির্দেশনার কারণেও সাধারণ পণ্য খালাসের জেটিতে চাপ কমে। তাতে যেখানে নিয়মিত ৯ থেকে ১০টি কনটেইনার জাহাজ ভেড়ানো হতো, সেখানে ১১ থেকে ১২টি জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হয়।

সরকারের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে গত শুক্রবার পরিবহন ধর্মঘট শুরু করেন পরিবহনমালিকেরা। টানা চার দিনের মাথায় সোমবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। এই চার দিনে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে প্রায় অচলাবস্থায় ছিল। সময়মতো পণ্য রপ্তানি করা যায়নি। আবার জাহাজও জেটিতে ভেড়ানো যায়নি।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, পরিবহন ধর্মঘটে যে চাপ তৈরি হয়েছে, তা সপ্তাহখানেকের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে আসবে। জাহাজও জেটিতে ভেড়ানোর জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে না।