প্রধান পণ্যগুলোয় শুল্কমুক্ত সুবিধা

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে বাংলাদেশকে চীন তাদের আমদানি তালিকায় থাকা পণ্যের ৯৭ শতাংশে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে।
প্রথম আলো ফাইল ছবি

বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের পাশাপাশি পাট ও পাটজাত পণ্য, মাছ, চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, চামড়া, জুতা রপ্তানিতে চীনে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। চীনে যেসব পণ্যে বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে, তার একটি তালিকা গত রোববার প্রকাশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে বাংলাদেশকে চীন তাদের আমদানি তালিকায় থাকা পণ্যের ৯৭ শতাংশে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে। চীন ৮ হাজার ৫৪৯টি এইচএস কোডে বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে। তার মধ্যে ৮ হাজার ২৫৬টি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে বাংলাদেশ।

ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে সুনির্দিষ্ট তালিকা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, এতে চীনে বাংলাদেশের রপ্তানি আগের চেয়ে বাড়বে। সুযোগটি নেওয়ার জন্য রপ্তানিকারকদের তৎপরতা বাড়ানো জরুরি
বাণিজ্যসচিব মো. জাফর উদ্দীন

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব মো. জাফর উদ্দীন গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে সুনির্দিষ্ট তালিকা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, এতে চীনে বাংলাদেশের রপ্তানি আগের চেয়ে বাড়বে। সুযোগটি নেওয়ার জন্য রপ্তানিকারকদের তৎপরতা বাড়ানো জরুরি।’

২০১০ সালে ৬০ শতাংশ ও ২০১৫ সালে ৯৫ শতাংশ দেওয়ার ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের মাঝামাঝি এসে চীন সিদ্ধান্ত নিল, এলডিসি দেশগুলো ৯৭ শতাংশ পণ্য চীনে শুল্কমুক্তভাবে রপ্তানি করতে পারবে। শুরুর দিকে ৩৩টি এলডিসির জন্য এ সুযোগ রাখলেও চীন পরে তা বাড়িয়ে ৪০টি দেশের জন্য করে।

কিন্তু চীনের শর্ত না মানায় বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৯৫ শতাংশের তালিকার মধ্যেই আসেনি। কারণ, চীনের ৬০ শতাংশ শুল্কমুক্ত তালিকায় বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্যগুলো নেই। ফলে গড়ে ১০ শতাংশের মতো শুল্ক দিয়েই দেশটিতে রপ্তানি করতে হয় বাংলাদেশকে।

জানা যায়, চীনে এত দিন বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সব আইটেম শুল্কমুক্ত সুবিধা পেত না। ওভেন পোশাকের ১৬৭টি আইটেমের মধ্যে ১১৭টি ও নিট পোশাকের ১৩২টির মধ্যে ৮৮টি আইটেম শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় ছিল।

অবশ্য বর্তমানে পোশাকের প্রায় সব আইটেমেই সুবিধাটি পাবেন উদ্যোক্তারা। এ ছাড়া শুল্কমুক্ত সুবিধার তালিকায় পাট ও পাটজাত পণ্যে ১টি, মাছে ১০টি, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে ১০টি করে, জুতায় ১৯টি, হোম টেক্সটাইলে ৫৫টি নতুন এইচএস কোড যুক্ত হয়েছে।

আরও যেসব পণ্যে চীনের বাজারে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবেন, তা হলো বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, সুগন্ধি, প্রসাধনী ও অন্যান্য টয়লেট্রিজ, সাবান, প্লাস্টিক ও প্লাস্টিক পণ্য, রাবার ও রাবার দিয়ে তৈরি পণ্য, সার, পশম, কৃত্রিম পশম ও পশমের তৈরি পণ্য, খনিজ জ্বালানি ও তেল, বিটুমিন, রাসায়নিক পণ্য, জৈব রাসায়নিক, জীবন্ত গরু, ছাগল, মহিষ, ঘোড়া, হাঁস, মুরগি, মাছ, সাপ, কুঁচিয়া, দুগ্ধজাত পণ্য, বিভিন্ন ধরনের সবজি, কফি, চা, মসলা, দানাজাতীয় শস্য, বিভিন্ন মিলের বর্জ্য, বেভারেজ, স্পিরিট, ভিনেগার, তামাক, চিনি ও চিনিজাত পণ্য, লবণ, সালফার, পাথর, সিমেন্ট ইত্যাদি।