বাংলাদেশ–ভারত বিমান চলাচলের বিষয়ে প্রস্তুতি চলছে

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত মার্চ থেকে ভারতের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে সড়ক ও রেলপথেও যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। কেবল পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চলছে। তবে খুব শিগগির দুই দেশের মধ্যে আকাশপথে যোগাযোগব্যবস্থা চালু হতে পারে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার আলোচনাও হয়েছে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে। চিঠি আদান–প্রদানও হয়েছে। এসব চিঠির মধ্যে দুই দেশই যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচলের বিষয়ে কিছু শর্ত দিয়েছিল, সেগুলোর বিষয়েও দুই দেশ অনেকটায় সম্মত হয়েছে। বাকিটুকু রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত এলে ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে। এ ক্ষেত্রে আরও কিছুদিন হয়তো সময় লাগতে পারে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, উভয় দেশের ফ্লাইটসংখ্যা কত থাকবে, মেডিকেল ভিসাসহ অন্যান্য ক্যাটাগরির যেসব ভিসা আছে, সেগুলো পুনর্নবায়ন করা হবে কি না এবং চিকিৎসার জন্য যাঁরা যাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে কতজন যাবেন, সেসব বিষয় এই শর্তের মধ্যে ছিল। শর্তগুলো পূরণে দুই দেশই সম্মত হয়েছে। এখন দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।

‘আমরা এখান থেকে ২৮টি ফ্লাইট পরিচালনা করার কথা বলেছি। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আরও বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করতে চেয়েছিল বাংলাদেশে। তবে শেষ পর্যন্ত আমাদের ২৮টি, তাদেরও ২৮টি মোট ৫৬ ফ্লাইট পরিচালনা করার বিষয়ে দুই দেশের সিভিল এভিয়েশনই রাজি হয়েছে। ২৮টি ফ্লাইটে মোট ৫ হাজার যাত্রী পরিবহন করা যাবে। ও দেশ থেকেও ২৮ ফ্লাইটে ৫ হাজার যাত্রী আসতে পারবেন।
বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এখান থেকে ২৮টি ফ্লাইট পরিচালনা করার কথা বলেছি। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আরও বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করতে চেয়েছিল বাংলাদেশে। তবে শেষ পর্যন্ত আমাদের ২৮টি, তাদেরও ২৮টি মোট ৫৬ ফ্লাইট পরিচালনা করার বিষয়ে দুই দেশের সিভিল এভিয়েশনই রাজি হয়েছে। ২৮টি ফ্লাইটে মোট ৫ হাজার যাত্রী পরিবহন করা যাবে। ও দেশ থেকেও ২৮ ফ্লাইটে ৫ হাজার যাত্রী আসতে পারবেন। তা ছাড়া চিকিৎসার জন্য যাঁরা যাবেন, তাঁদের সঙ্গে একজন অ্যাটেন্ডেন্ট যাওয়ার কথা ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বলেছিল। তবে আমরা বলেছি এখানে একজন যাওয়া যথেষ্ট নয়, কমপক্ষে তিনজন যাওয়া প্রয়োজন।’

মো. মফিদুর রহমান আরও বলেন, ‘ভিসাসংক্রান্ত বিষয়েও কথা হয়েছে। অনেকের ভিসা নেওয়া হয়েছিল কিন্তু মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। সেগুলোর মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়েও ভারত রাজি হয়েছে। তবে আমাদের সিভিল এভিয়েশন, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি বৈঠক হবে। বৈঠকে আরও খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। যে শর্তগুলোর কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো নিয়ে একটি চিঠি আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছিলাম। এখন আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক করে ভারতের সঙ্গে একটি সিদ্ধান্তে আসা হবে।’

তবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র বলছে, ফ্লাইটগুলো বাবল সিস্টেমে যাবে। কোনো ট্রানজিট প্যাসেঞ্জার আসবে না। অর্থাৎ যাত্রীরা ভারত বা বাংলাদেশ হয়ে তৃতীয় কোনো দেশে যেতে পারবেন না। নির্দিষ্ট শর্তে সমানসংখ্যক যাত্রী দুই দেশে আকাশপথে যাতায়াত করতে পারবেন। ভারতের যে করোনা পরিস্থিতি, সেটার বিষয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। এটার পরিস্থিতির ওপর ফ্লাইট চলাচলের বিষয়টি নির্ভর করছে।