বাণিজ্যবাধা দূর করার তাগিদ

১০ বছর আগে ফিরে যাওয়া যাক। মুহাম্মদ ফারুক খান তখন বাণিজ্যমন্ত্রী। ভারতের সাবেক জ্বালানি ও খনিজ সম্পদমন্ত্রী ও রাজ্যসভার সদস্য মনিশংকর আয়ারের নেতৃত্বাধীন ৩১ সদস্যের এক ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল এল ঢাকায়। উদ্দেশ্য, সম্পর্কোন্নয়নের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূর করা।

বাণিজ্যবাধা দূর করার সেই আলোচনা এখনো চলছে। সে অনুযায়ী গতকাল সোমবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে সচিবালয়ে বৈঠক করেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম দোরাইস্বামী। সেখানেও উঠল বাণিজ্যবাধা দূর করার কথা।
বৈঠক সম্পর্কে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাণিজ্য জটিলতা দূর করতে মন্ত্রী ও হাইকমিশনার একমত পোষণ করেছেন। উভয়ের বক্তব্যের প্রায় একই সুর। সেটা হচ্ছে, আন্তরিকতার সঙ্গে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধুরাষ্ট্র ভারত। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ভালো। বাণিজ্য আরও বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বাধাগুলো দূর করতে হবে। অশুল্ক বাধাগুলো দূর করার বিষয়ে আলোচনা করা যায়। সীমান্তে শুল্ক ব্যবস্থাপনার উন্নতি করেও তা সম্ভব।

রাষ্ট্রদূত বিক্রম দোরাইস্বামীর প্রশংসা করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ জন্য উভয় দেশকে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনীয় উদ্যোগের অভাবেই এত দিন তা সম্ভব হয়নি। তবে নতুন করে আলোচনা শুরুর সুযোগ এসেছে। এখন সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাণিজ্যমন্ত্রীর মতো প্রায় একই ভাষায় কথা বলেন রাষ্ট্রদূত বিক্রম দোরাইস্বামী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য বৃদ্ধির আরও সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা আছে। উভয় দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এসব সমস্যা দূর করা সম্ভব।

রামগড় সীমান্তে সেতু নির্মাণের ফলে উভয় দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, এখানে শুল্ক স্টেশন ও ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালু করা যায়। এতে ত্রিপুরাসহ এ অঞ্চলের মানুষ উপকৃত হবেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভারতে ১৯ কোটি ৬৩ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। একই সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশ আমদানি করেছে ৫৭৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার মূল্যের পণ্য। এই বাণিজ্য ১০ বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণের কাছাকাছি।