বিদেশি কোম্পানির জন্যও প্রণোদনা চায় বিজিএমইএ
এবার রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) বিদেশি এবং দেশি-বিদেশি যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকেও বিশেষ রপ্তানি প্রণোদনা দেওয়ার তদবির শুরু করেছে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
দেশি, অর্থাৎ সি টাইপ স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় রপ্তানির ক্ষেত্রে ১ শতাংশ করে এই সহায়তা পাচ্ছে। এটি পোশাক খাতে চলমান অন্যান্য সুবিধার অতিরিক্ত।
বিজিএমইএ এখন চায়, শতভাগ বিদেশি এবং দেশি-বিদেশি মালিকানার কোম্পানিগুলোও ১ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা পাক। এমন দাবি জানিয়ে সংগঠনটির সভাপতি রুবানা হক এক মাস আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে চিঠি দিয়েছেন।
আগের অর্থবছরের মতো চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটেও পোশাক খাতে ১ শতাংশ বাড়তি প্রণোদনা রাখা হয়। আবার উৎসে কর ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয় দশমিক ৫ শতাংশ। পরিবেশবান্ধব কারখানার জন্যও কর ছাড় দেওয়া হয়। করোনাভাইরাসের কারণে প্রধানত পোশাক খাতের শ্রমিকদের বেতন-মজুরি দিতে নামমাত্র সুদে ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে সরকার।
এদিকে ইপিজেডের কারখানাগুলো এখন পর্যন্ত বাড়তি প্রণোদনা না পেলেও সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধা পাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক দুই সপ্তাহ আগে প্রজ্ঞাপন জারি করে তাদের এই প্যাকেজের আওতায় নিয়ে এসেছে।
বিজিএমইএ চিঠিতে বলেছে, করোনাভাইরাসের কারণে পোশাক খাতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ও ক্রেতারা ক্রয়াদেশ স্থগিত ও বাতিল করছেন। এই সংকটময় পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলের (ইজেড) এ টাইপ ও বি টাইপ প্রতিষ্ঠানের জন্য ১ শতাংশ বিশেষ নগদ সহায়তা দরকার, যারা ইইউসহ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডায় পোশাক রপ্তানি করে থাকে।
জানা গেছে, বিজিএমইএর নতুন দাবির বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে। বাণিজ্যমন্ত্রী সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরলে তাঁর কাছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি অনুবিভাগ সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করবে। বাণিজ্যমন্ত্রী অনুমোদন দিলে তা পাঠানো হবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে। অর্থ বিভাগই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে প্রজ্ঞাপন জারি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব মো. জাফর উদ্দীন প্রথম আলোকে জানান, এ বিষয়ে তিনি খোঁজ নেবেন।
বিজিএমইএ চিঠিতে বলেছে, করোনাভাইরাসের কারণে পোশাক খাতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ও ক্রেতারা ক্রয়াদেশ স্থগিত ও বাতিল করছেন। এই সংকটময় পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলের (ইজেড) এ টাইপ ও বি টাইপ প্রতিষ্ঠানের জন্য ১ শতাংশ বিশেষ নগদ সহায়তা দরকার, যারা ইইউসহ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডায় পোশাক রপ্তানি করে থাকে।
বলা হচ্ছে, এই সংকটময় সময়ে এ টাইপ ও বি টাইপ কারখানাগুলোও প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হারাচ্ছে এবং নতুন বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হচ্ছে। অথচ শুল্ক, মূসক ও আয়কর দিচ্ছে সব ধরনের কারখানা।
এ ও বি টাইপ কারখানাগুলোরও ১ শতাংশ বিশেষ সহায়তা পাওয়া উচিত। প্রতিযোগিতার সক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই আমরা এটা চেয়ে আসছিলাম। আশা করছি সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নেবে।
২০১৯-২০ অর্থবছরে এ টাইপ প্রতিষ্ঠান ২ কোটি ৬৩ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার এবং বি টাইপ প্রতিষ্ঠান ৩১ লাখ ২০ হাজার ডলারের সমান পণ্য রপ্তানি করেছে বলে বিজিএমইএর চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, এই প্রণোদনা না পাওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সরকারের হতাশ হন এবং স্থানীয়রাও যৌথ বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।
বেপজার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীর বলেন, ‘এ ও বি টাইপ কারখানাগুলোরও ১ শতাংশ বিশেষ সহায়তা পাওয়া উচিত। প্রতিযোগিতার সক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই আমরা এটা চেয়ে আসছিলাম। আশা করছি সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নেবে।’