বিধিনিষেধের বাইরে না রাখলে হযবরল পরিস্থিতি তৈরি হবে

শাহীন আহমেদ, সভাপতি, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন

চামড়া খাত অন্য আট-দশটা খাতের মতো নয়। চামড়া একটি পচনশীল পণ্য। যত দ্রুত সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা যায়, ততই ভালো। সরকার ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এ সময় সব ধরনের শিল্পকারখানা ও যানবাহন বন্ধ থাকবে। চামড়াশিল্পকে বিধিনিষেধের বাইরে রাখা না হলে এই খাতে বড় ধরনের দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে।

সারা বছর যে পরিমাণ কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করা হয়, তার অর্ধেকের বেশি হয় কোরবানির ঈদে। আমরা এরই মধ্যে সরকারের বিভিন্ন মহলে চামড়া খাতকে বিধিনিষেধের বাইরে রাখার অনুরোধ জানিয়েছি। যদি ছাড় দেওয়া না হয়, এই খাত মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমাদের কাঁচা চামড়া কেনাবেচা ও পরিবহনের সুযোগ করে দিতে হবে। সরকার যদি ছাড় না দেয়, আমরা চামড়া সংগ্রহ করতে পারব না। চামড়া পচে যাবে। সব মিলিয়ে একটা হযবরল অবস্থা তৈরি হবে।

গতবারের সঙ্গে তুলনা করলে এ বছর মনে হচ্ছে পশু কোরবানি ৩০ শতাংশ কম হবে। কারণ, করোনার প্রভাবে অনেকে চাকরি হারিয়েছে। নিম্নমধ্যম আয়ের মানুষ চাপে আছে। যাঁরা ছোট ব্যবসায়ী, তাঁরাও ভালো অবস্থায় নেই। তার ওপর করোনার সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। করোনা এখন গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে। তারপরও এবার আমাদের ৮০ লাখ চামড়া সংগ্রহের প্রস্তুতি রয়েছে। এর মধ্যে গরুর চামড়া ৪৫ থেকে ৫০ লাখ এবং ছাগল-মহিষের ৩০ থেকে ৩৫ লাখ চামড়া সংগ্রহ করা হবে।

আমাদের সামনে আরেকটি সমস্যা, সাভার চামড়াশিল্প নগরে কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) সক্ষমতার ঘাটতি। সেখানে এখন বর্জ্য ধারণক্ষমতা ২৫ হাজার কিউবিক মিটার। আসন্ন কোরবানির ঈদে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৪০ হাজার কিউবিক মিটারে। বাড়তি এই চাপ সামাল দিতে আমাদের পানির ব্যবহার কম করতে হবে। তা ছাড়া বিদ্যমান সিইটিপি মান্ধাতা আমলের। এটাকে আধুনিক করতে হবে।

চামড়াশিল্প নগরে এখনো ডাম্পিং ইয়ার্ড তৈরি হয়নি। সাভার চামড়াশিল্প নগরে অস্থায়ী দুটি ডাম্পিং পাম্প করা হয়েছে। কিন্তু তিন মাসের মধ্যে এই দুটি পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। তারপর কী হবে? আমরা বর্জ্য কোথায় ফেলব। ব্যবস্থাপনা ঠিক না হলে কর্মপরিবেশ ঠিক হবে না। আর কর্মপরিবেশ ঠিক না হলে চামড়ার সঠিক মূল্য পাব না। আর এই সুযোগ নিচ্ছেন নন-কমপ্লায়েন্স চীনা ব্যবসায়ীরা।

শাহীন আহমেদ, সভাপতি, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন