ভালো ব্যবসা হোটেল-রিসোর্টে

ফাইল ছবি

করোনার কারণে নিভে যাওয়া হোটেল ও রিসোর্ট ব্যবসায় আবারও প্রাণ ফিরিয়েছে ফাগুনের হাওয়া। ভালোবাসার রং লেগেছে দেশের বিভিন্ন এলাকার হোটেল-রিসোর্টগুলোতেও। দেশের পর্যটন এলাকার নামীদামি হোটেল-রিসোর্টে এখন ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই অবস্থা। বেশ আগেভাগেই এসব হোটেল-রিসোর্টের সব কক্ষ বুকড করে ফেলেছেন ভালোবাসার মানুষেরা।

এমনিতেই সব দিক বিবেচনায় শীতের এ সময়টা বেড়ানোর মৌসুম। করোনার কারণে বিদেশ ভ্রমণ বলতে গেলে বন্ধ। আবার সংক্রমণের হারও নিম্নমুখী। এ অবস্থায় মানুষ যেন আর ঘরবন্দী থাকতে চাইছে না, তাই অভ্যন্তরীণ পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়ছে ভিড়। মানুষের ঘুরে বেড়ানোর সেই পালে নতুন করে হাওয়া দিয়েছে ফাগুন ও ভালোবাসা দিবস। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে সাপ্তাহিক ছুটি। সব মিলিয়ে হোটেল-রিসোর্টগুলোর ব্যবসা বেশ ভালো যাচ্ছে। যদিও বেশির ভাগ হোটেল-রিসোর্ট করোনার ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারেনি।

ব্যবসার ক্ষতি পোষাতে ভালোবাসা দিবস ও বসন্ত সামনে রেখে হোটেল-রিসোর্টগুলো নানা ছাড় দিয়েছে। সেই ছাড়ের সুযোগে ভালোবাসার মানুষ ও পরিবার-পরিজন নিয়ে বিশেষ দিনে ঘুরে বেড়ানোর পরিকল্পনা আগেভাগেই চূড়ান্ত করে ফেলেছেন অনেকে। তাতেই প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে হোটেল-রিসোর্টগুলো।

পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজারের পাঁচ তারকা মানের মারমেইড ইকো রিসোর্ট জানুয়ারি থেকেই বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসের বুকিং নেওয়া শুরু করে। জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা রানা কর্মকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের মাত্র ৩০টি কক্ষ রয়েছে। ভালোবাসা দিবস বা পয়লা ফাল্গুনের পাশাপাশি পুরো ফেব্রুয়ারি মাসের জন্যই সব কটি রুম অগ্রিম ভাড়া হয়ে গেছে।’

বসন্তকেন্দ্রিক এ আয়োজনে বসে নেই কক্সবাজারের অন্য হোটেল ও রিসোর্টগুলোও। নানা ছাড় ও প্যাকেজে ব্যবসার ক্ষতি পোষানোর চেষ্টা করছে সবাই। কক্সবাজারের সিগাল হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, পয়লা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে আজ, কাল ও পরশু (১২-১৪ ফেব্রুয়ারি) তিন দিনে প্রায় সব কক্ষ ভাড়া হয়ে গেছে।

কক্সবাজার ছাড়া ঢাকার আশপাশ এবং সিলেট ও হবিগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন হোটেল-রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসে সবারই ব্যবসা বেশ জমজমাট। বছরের প্রথম দিবসকেন্দ্রিক এ আয়োজনে ব্যবসা হাতছাড়া করতে চাইছেন না কেউই। ভালোবাসা দিবস হলেও ঘোরাঘুরির ক্ষেত্রে দিনটি শুধু জুটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। পরিবার-পরিজন নিয়েও অনেকে ঘুরতে যাচ্ছেন এ দিনে।

জানতে চাইলে হবিগঞ্জের বাহুবলের দ্য প্যালেস রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফুর রহমান বলেন, ‘শুধু ভ্যালেন্টাইন জুটি নয়, পরিবারগুলোও রিসোর্টে সময় কাটাতে আসছে বাচ্চাদের নিয়ে। এরই মধ্যে আমাদের রিসোর্টের প্রায় সব অতিথি কক্ষই ভাড়া হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে তাই বসন্তে ভালো ব্যবসার আশা করছি।’

বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে সবচেয়ে জমজমাট অবস্থা ঢাকার আশপাশের রিসোর্টগুলোতে। ঢাকার পূর্বাচল ও গাজীপুরের ছুটি রিসোর্ট তিন দিনই থাকবে কানায় কানায় অতিথিপূর্ণ। গাজীপুরের ভাওয়াল ও সারাহ রিসোর্টেরও একই অবস্থা। মানুষের আগ্রহ দেখে হোটেল-রিসোর্টগুলো এক থেকে দেড় হাজার টাকা ভাড়া বাড়িয়েছে। হোটেল ও রিসোর্টের মালিকেরা আশা করছেন, বসন্তের এই উৎসবের পর বছরজুড়ে স্বাভাবিক ব্যবসায় ফেরার। কারণ, দেশে এখন করোনার গণটিকা দেওয়া শুরু হয়ে গেছে। তাতেই ব্যবসা ফিরে পাওয়ার আশায় আছেন হোটেল ও রিসোর্টের মালিকেরা।