মিল্ক ভিটার বিক্রি কমেছে সাড়ে ১৭ কোটি টাকা

  • গত অর্থবছরে মিল্ক ভিটার পণ্য বিক্রি হয়েছে ২৮৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকার, যা এর আগের অর্থবছরের চেয়ে সাড়ে ১৭ কোটি টাকা কম।

  • মিল্ক ভিটা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনার কারণে গত মার্চ মাস থেকে ঠান্ডাজাতীয় খাবার কম বিক্রি হয়েছে।

  • গত অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরে মুনাফা ধরা হয়েছে ৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

করোনা মহামারির প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেডের (মিল্ক ভিটা) পণ্য বিক্রিতেও।

করোনা মহামারির প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেডের (মিল্ক ভিটা) পণ্য বিক্রিতেও। গত অর্থবছরে মিল্ক ভিটার পণ্য বিক্রি হয়েছে ২৮৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকার, যা এর আগের অর্থবছরের চেয়ে সাড়ে ১৭ কোটি টাকা কম। মিল্ক ভিটা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনার কারণে গত মার্চ মাস থেকে ঠান্ডাজাতীয় খাবার কম বিক্রি হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মিল্ক ভিটার প্রধান কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির ৪০তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থাপিত বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

মিল্ক ভিটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক অমর চান বণিক উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মোট পণ্য বিক্রি হয়েছিল ৩০৫ কোটি ৪৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। কিন্তু গত অর্থবছরে বিক্রয় কম হয়েছে। তবে বাজারে মিল্ক ভিটা পণ্যের চাহিদা অনেক। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪৫০ কোটি ২৮ লাখ টাকার বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সভার প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, দেশে দুগ্ধ উৎপাদন বিচ্ছিন্নভাবে হচ্ছে। এটিকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে, যাতে উৎপাদন, বিতরণ এবং ভোক্তা পর্যায়ে এর সুফল সঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়া যায়।

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, মিল্ক ভিটাকে ধ্বংস করার জন্য অনেকেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের বিরুদ্ধে সব সময় সজাগ থাকতে হবে।

মিল্ক ভিটার চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন সভাপতির বক্তব্যে বলেন, মিল্ক ভিটা খামারিদের দুধের দাম দেওয়া শুরু করে ৩৭ টাকা থেকে। মান ভেদে সর্বোচ্চ ৫৫ টাকা পর্যন্ত দাম দেয়। কিন্তু খোলাবাজারে দুধের দাম এর থেকেও বেশি। তাই খামারিদের পক্ষে মিল্ক ভিটাকে দুধ দেওয়া সম্ভব হয় না। এসব জটিলতা নিরসনে দুগ্ধ নীতিমালা হওয়া দরকার।

সভায় জানানো হয়, গত অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরে মুনাফা ধরা হয়েছে ৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে নিট মুনাফা হয়েছিল ৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। এই মুনাফার ওপর ভিত্তি করে সরকারি ইক্যুইটি ও সমিতির শেয়ারের ওপর আড়াই শতাংশ হারে লভ্যাংশ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মিল্ক ভিটা।

গত অর্থবছরে মিল্ক ভিটার সেরা সমিতি হয়েছে সাতক্ষীরার তালা। শ্রেষ্ঠ সমবায়ী হয়েছেন খুলনার শাহাপুরের সুবীর কুমার ঘোষ। দুর্নীতি, অনিয়মে জড়িত থাকায় এবং শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজের দায়ে গত অর্থবছর মিল্ক ভিটার পাঁচজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

মিল্ক ভিটার কারণে দেশের দুগ্ধজাত পণ্যের বাজারে দাম স্থিতিশীল থাকছে বলে মনে করেন সমবায় বিভাগের সচিব রেজাউল আহসান। সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন বক্তব্য দেন।