রবির মুনাফা বেড়েছে, লভ্যাংশ ৩%

রোববার এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে রবির জানুয়ারি–মার্চ সময়ের ব্যবসা পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়।

মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটার মুনাফা বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) শেষে রবির কর–পরবর্তী মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৩৪ কোটি টাকার কিছু বেশি, যা আগের বছরের একই প্রান্তিকে ছিল ১৯ কোটি টাকা। একই সময়ে অপারেটরটির রাজস্ব আয়, গ্রাহক ও ইন্টারনেট গ্রাহক বেড়েছে।

রবি আজ রোববার এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে সর্বশেষ প্রান্তিকের আর্থিক বিবরণী প্রকাশ করে। এতে তারা জানায়, গত জানুয়ারি-মার্চ সময়ে তাদের মোট রাজস্ব আয় দাঁড়ায় ১ হাজার ৯৮১ কোটি টাকা, যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় ৩ শতাংশের কিছু বেশি। আগের বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় রাজস্ব আয় বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ।

রবি জানায়, এ সময় শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে সাত পয়সা, যা আগের বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় বেশি। আগের বছর একই প্রান্তিকে ইপিএস ছিল চার পয়সা।

রবি গত জানুয়ারি–মার্চ সময়ে ৩৪ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। আগের বছর একই সময়ে তা ছিল ১৯ কোটি টাকা।

রবির বোর্ড শেয়ারধারীদের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন ৩ শতাংশ (প্রতিটি ১০ টাকার শেয়ারে ৩০ পয়সা) লভ্যাংশ প্রস্তাব করেছে। যার রেকর্ড ডেট হবে আগামী ২ মে। ৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রবির ২৫তম বার্ষিক সাধারণ সভা আগামী ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে।

অনুষ্ঠানে রবির ব্যবসা পরিস্থিতি নিয়ে উপস্থাপনা তুলে ধরের প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাহতাব উদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, আলোচ্য প্রান্তিকে রবির সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা ১০ লাখ বেড়ে ৫ কোটি ১৯ লাখে দাঁড়িয়েছে। ইন্টারনেট গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৬৭ লাখে, যা মোট গ্রাহকের ৭০ দশমিক ৬ শতাংশ।

মাহতাব উদ্দিন বলেন, আলোচ্য সময়ে তাদের ফোর-জি গ্রাহক বেড়েছে ৬২ শতাংশ। শতভাগ টাওয়ারকে ফোর-জিতে রূপান্তর করা হয়েছে। মোট গ্রাহকের ৩৫ দশমিক ৬ শতাংশ ফোর-জি ব্যবহার করে, যেখানে বাজারের গড় হার ২৮ শতাংশ। তিনি বলেন, ‘আমরা ফোর-জিতে জোর দিতে চেয়েছি। সেই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।’

আমরা ফোর-জিতে জোর দিতে চেয়েছি। সেই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও, রবি

ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়লেও ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় ভয়েস সেবা (কথা বলা) থেকে রবির রাজস্ব আয় ৪ শতাংশের মতো কমেছে। গ্রাহকেরা কথা বলার ক্ষেত্রে এখন ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাপ বেশি ব্যবহার করছেন বলে উল্লেখ করেছে রবি। ইন্টারনেট থেকে অপারেটরটির আয় গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ১৬ শতাংশের মতো বেড়েছে।

রবি আরও জানায়, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে তারা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে ১ হাজার ১১৫ কোটি টাকা, যা এই প্রান্তিকের মোট আয়ের প্রায় ৫৬ শতাংশ। একই সময়ে কোম্পানিটি বিনিয়োগ করেছে প্রায় ১৫১ কোটি টাকা।

মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা লক্ষ করেছি, মূল আয়ের ওপর ২ শতাংশ ন্যূনতম করের প্রভাবে মুনাফা প্রত্যাশিত হারে বাড়েনি। শুধু তা–ই নয়, এই করের প্রভাবে তালিকাভুক্ত টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলোর জন্য করপোরেট করে (৪০ শতাংশ) যে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে, সে সুবিধা থেকেও আমরা বঞ্চিত হচ্ছি।’
গ্রাহকপ্রতি তরঙ্গের ক্ষেত্রে বাজারের সবচেয়ে বড় হিস্যাধারী অপারেটরের চেয়ে এগিয়ে থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে মাহতাব উদ্দিন বলেন, ‘আমরা ভালো সেবা দিতে পারব।’