১ হাজার মণের বেশি কাঁচা পাট এক মাসের বেশি মজুত নয়

সচিবালয়ে আজ বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) ও বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।

এক হাজার মণের বেশি কাঁচা পাট এক মাসের বেশি সময় ধরে মজুত করা যাবে না বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। তিনি বলেছেন, অভ্যন্তরীণ বাজারে কাঁচা পাট সরবরাহ নিশ্চিত এবং পাট ও পাটপণ্যের রপ্তানির গতি বজায় রাখতে কাঁচা পাটের ডিলার বা আড়তদারেরা এক হাজার মণের বেশি কাঁচা পাট এক মাসের বেশি সময় ধরে মজুত করতে পারবেন না। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পাট অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সচিবালয়ে আজ বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) ও বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় এসব কথা বলেন গোলাম দস্তগীর গাজী। মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

আলোচনা সভায় পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, অতিরিক্ত সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, বিজেএমএর চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী, জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. জাহিদ মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে কাঁচা পাটের সংকটের কারণে পাটকলগুলো উৎপাদন ঝুঁকিতে পড়েছে। এ অবস্থায় পাট ও পাটপণ্যের রপ্তানি আয়ের গতি অব্যাহত রাখতে কাঁচা পাটের সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ জন্য লাইসেন্স ছাড়া কাঁচা পাট ক্রয়-বিক্রয় ও মজুত করা থেকে বিরত রাখা, ভেজা পাট ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ করা, বাজারে কাঁচা পাটের সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য ব্যবস্থা নিতে পাট অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পাট মন্ত্রণালয় জানায়, পাট চাষ নিশ্চিতে বীজ সরবরাহে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মানসম্মত পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে পাঁচ বছরের জন্য কৃষি ও পাট মন্ত্রণালয় যৌথ উদ্যোগে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত পাটবীজ উৎপাদনে স্বনির্ভর হবে। প্রয়োজনীয় পাটবীজ সংগ্রহে আমদানি নির্ভরতা আর থাকবে না। এ পাট মৌসুম থেকে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন শুরু হবে। ধাপে ধাপে তা আগামী পাঁচ বছরে সম্পন্ন হবে।

জুলাইয়ে কাঁচা পাট বিক্রির মৌসুমের শুরুতে প্রতি মণের দাম ছিল ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। দুই মাসের মধ্যে সেটি বেড়ে আড়াই হাজার টাকা হয়। গত ডিসেম্বরে প্রতি মণ কাঁচা পাটের দাম গিয়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকায়। গত বছর প্রতি মণের দাম ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা দিয়ে মৌসুম শুরু হলেও পরে সেটি আড়াই হাজার টাকা হয়েছিল।

চলতি মাসের গোড়ার দিকে বিজেএমএর চেয়ারম্যান জানান, কাঁচা পাটের মণ ৩ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার ৭০০ টাকায় পৌঁছে গেছে। তাঁদের আশঙ্কা, মার্চ-এপ্রিলে কাঁচা পাট পাওয়া যাবে না। তখন রপ্তানিতে ধস নামবে।

প্রসঙ্গত, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৬৬ কোটি ডলার আয় করেছে। এই আয় গত বছরের চেয়ে সাড়ে ৩০ শতাংশ বেশি।