৭ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে অনাগ্রহ

কম সুদে প্রণোদনা ঋণ পাওয়ায় উদ্যোক্তারা এ তহবিল থেকে ঋণ নিতে আগ্রহী নন।

তৈরি পোশাক খাতে নিরাপত্তাজনিত সংস্কার ও পরিবেশগত উন্নয়নে ৭ শতাংশ সুদে ঋণ মিলছে। বিদেশি উন্নয়ন সহযোগী ও বাংলাদেশ ব্যাংক মিলে ৬ কোটি ৪২ লাখ ইউরোর একটি তহবিল গঠন করেছে, যা দেশীয় মুদ্রায় ৬৪২ কোটি টাকার বেশি। এ তহবিল থেকে ইতিমধ্যে ৬৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ হয়েছে। আরও কিছু ঋণ বিতরণের অপেক্ষায় আছে।

পোশাকশিল্পের মালিকেরা বলছেন, তৈরি পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে কর্মরত ক্রেতাদের দুই জোট—অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের কার্যক্রম শেষ হয়ে গেছে। এ ছাড়া যাঁদের বড় কারখানা আছে, তাঁরা নিজ উদ্যোগেই কর্মপরিবেশ উন্নত করেছেন। আর গত বছরের পুরো সময়ই কারখানাগুলো করোনাভাইরাসের চাপে ছিল, যা এখনো চলছে। এখন কর্মপরিবেশের চেয়ে টিকে থাকাটাই বড় চ্যালেঞ্জ। আর এত সুদে ঋণ নিয়ে শোধ করা কঠিন।

পাঁচটি কারখানা এ তহবিল থেকে ঋণ নিয়েছে। এর মধ্যে সাউথইস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে স্পারো অ্যাপারেলস ১৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ও ক্রাউন ওয়্যারস ২৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে। ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে ভার্চ্যুয়াল নিট অ্যান্ড লেজার ওয়্যার নিয়েছে দেড় কোটি টাকা। আইপিডিসি ফাইন্যান্সের মাধ্যমে কনসেপ্ট নিটিং নিয়েছে ২০ কোটি টাকা। আইডিএসি ফাইন্যান্সের মাধ্যমে কাটিং এজড ইন্ডাস্ট্রিজ নিয়েছে ৮ কোটি টাকা।

সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম কামাল হোসেন বলেন, যাঁরা অনেক বেশি নিয়মকানুন মেনে কারখানা করেছেন, তাঁরাই এ ঋণ পাবেন। আবার এ ঋণের ব্যবহারও শতভাগ যথাযথ হতে হবে। অন্যদিকে, এখন আরও কম সুদে ঋণ পাওয়া যাচ্ছে। তাই নতুন করে কেউ এ ঋণে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

জানা গেছে, ২০১৮ সালে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ উন্নয়নসহ এ খাতের সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থার উন্নয়ন ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিবেশবান্ধব করে তোলার লক্ষ্যে তহবিল গঠন করা হয়। ঋণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তহবিলটিতে অর্থের জোগান দেয় ফ্রেঞ্চ ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (এএফডি), ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, কেএফডব্লিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, জার্মান টেকনিক্যাল কো–অপারেশন (জিআইজেড)। পাশাপাশি সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকও তহবিল দেয়। ২০১৯ সালের মার্চে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রজ্ঞাপন জারি করে তহবিলটির কার্যক্রম শুরু করে।

তহবিলটি গঠনের উদ্দেশ্য ছিল তৈরি পোশাক কারখানায় বৈদ্যুতিক সংযোগ, অগ্নিনির্বাপণ ও কাঠামোগত সংস্কারসহ কর্মপরিবেশের উন্নয়ন। পাশাপাশি শ্রমিকের নিরাপত্তাসহ পরিবেশবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা। এ ঋণ দিতে দেশের ১২টি ব্যাংক ও ২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পোশাক কারখানার নিরাপত্তা, পরিবেশ ও সামাজিক সক্ষমতার উন্নয়ন হবে। নিশ্চিত হবে কর্মোপযোগী পরিবেশ।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, এখন ৪ থেকে ৫ শতাংশ সুদে প্রণোদনার ঋণ পাওয়া যাচ্ছে। এ জন্য তহবিলের ঋণে গ্রাহকদের আগ্রহ খুবই কম।