তিন কোম্পানির দখলে লেনদেনের ১৩%

শেয়ারবাজার
গ্রাফিকস: প্রথম আলো

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে গতকাল রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেনে আধিপত্য ছিল ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) গতকালের লেনদেনের ১৭ শতাংশই ছিল আর্থিক খাতের। ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ পাঁচ কোম্পানির মধ্যে তিনটিই ছিল এ খাতের। কোম্পানিগুলো হলো আইপিডিসি, বিডি ফাইন্যান্স ও জিএসপি ফাইন্যান্স।

আর্থিক খাতের কোম্পানিগুলোর দাপটে বড় উত্থান হয়েছে সূচক ও লেনদেনে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল এক দিনে ১৩১ পয়েন্ট বা ২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৬৯ পয়েন্টে। এর আগে ২২ মে এ সূচক নেমে এসেছিল ৬ হাজার ১৪৩ পয়েন্টে। বেশ কিছুদিন ধরেই বাজারে সূচকের টানা পতন চলছিল। এ পতন ঠেকাতে শেয়ারের বিপরীতে ঋণসীমা বাড়ানোর পাশাপাশি দরপতনের সীমাও কমিয়ে দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ ছাড়া পতন ঠেকাতে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করে বিএসইসি। পতন ঠেকাতে সরকারের সহায়তা কামনা করা হয়। এসব উদ্যোগের ফলে গত দুই দিন বাজারে তার তাৎক্ষণিক প্রভাব দেখা যায়।

ঢাকার বাজারে গতকাল লেনদেন শুরু হয় সূচকের বড় ধরনের উত্থান দিয়ে। সেই সঙ্গে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বাড়ে। এদিন ঢাকার বাজারে লেনদেন হওয়া ৩৭৭ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৪৪টি বা ৯১ শতাংশেরই দাম বাড়ে। কমেছে সাড়ে ৬ শতাংশের বা ২৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১০টির বা আড়াই শতাংশের। দিন শেষে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৮৩৪ কোটি টাকার, যা আগের দিনের চেয়ে ২৯৫ কোটি টাকা বেশি।

ঢাকার বাজারে গতকাল লেনদেনের শীর্ষ পাঁচে থাকা আর্থিক খাতের তিন কোম্পানির সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১০৭ কোটি টাকা, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় ১৩ শতাংশ। ডিএসইতে এদিন মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম এদিন ৪ টাকা ৮০ পয়সা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত দুই মাসে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৫৬ শতাংশ বা ১৯ টাকা বেড়েছে। গত ২৮ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৩৪ টাকা। গতকাল তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৩ টাকায়।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বেশ কিছুদিন শেয়ারবাজারে টানা পতন ঘটেছে। এতে বেশির ভাগ শেয়ারের বড় ধরনের দরপতন হয়। এ অবস্থায় ঋণগ্রস্ত অনেক বিনিয়োগকারীর শেয়ার ফোর্সড সেল বা জোরপূর্বক বিক্রির আওতায় পড়ে। তাই পতন ঠেকাতে তৎপর হয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। আবার শেয়ারের দাম এতটাই নিচে নেমে গিয়েছিল যে কিছু কিছু বিনিয়োগকারী নতুন করে বাজারে বিনিয়োগ করেন। এখন শেয়ারের দাম বাড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ বড় ধরনের মুনাফার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ কারণে বাজারে বড় উত্থান ঘটেছে। এখন এ উত্থান কত দিন স্থায়ী হয়, সেটাই দেখার বিষয়।