মন্দা বাজারে মুন্নু সিরামিকের শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির কারণ কী

মন্দা শেয়ারবাজারেও অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে মুন্নু সিরামিকের শেয়ারের দাম। গত এক মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ৩৮ টাকা বা ৩৬ শতাংশ বেড়েছে। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূল্য সংবেদনশীল কোনো তথ্য ছাড়া হঠাৎ করে এ কোম্পানির শেয়ারের দামের অস্বাভাবিক উত্থানের পেছনে রয়েছে কারসাজি। একটি গোষ্ঠী কারসাজির মাধ্যমে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বাড়াচ্ছে।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত ২১ নভেম্বর মুন্নু সিরামিকের প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১০৬ টাকা। গতকাল মঙ্গলবার দিন শেষে এ দাম বেড়ে হয়েছে ১৪৪ টাকা। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৩৮ টাকা বেড়েছে। এর মধ্যে গত ছয় কার্যদিবসেই বেড়েছে ২৮ টাকা। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি কয়েক দিন ধরে কোম্পানিটি ঢাকার বাজারে লেনদেনেও শীর্ষে উঠে এসেছে।

আরও পড়ুন

ঢাকার বাজারে গতকাল দিন শেষে কোম্পানিটির ২৫ কোটি টাকার সমমূল্যের শেয়ারের হাতবদল হয়। এ অবস্থায় শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়ে ডিএসইর কর্তৃপক্ষ কোম্পানিটির কাছে চিঠি দেয়। জবাবে কোম্পানিটি গতকাল জানিয়েছে, শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি পেতে পারে এমন কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য তাদের হাতে নেই। অর্থাৎ বাজারে কোম্পানির শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ জানে না কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

এদিকে গত কয়েক দিনের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পর গত সোমবার কোম্পানিটির মালিকানার সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠান মুন্নু ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন ৬ লাখ শেয়ার বিক্রি ঘোষণা দিয়েছে। সাধারণত মন্দা বাজারে কোম্পানির মালিকদের পক্ষ থেকে শেয়ার বিক্রির ঘোষণা এলে তাতে শেয়ারের দাম কমে। কিন্তু মুন্নু সিরামিকের বেলায় দেখা যাচ্ছে উল্টো ঘটনা। শেয়ার বিক্রির ঘোষণার পরও গতকাল বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ১ টাকা বেড়েছে।

আরও পড়ুন

মুন্নু সিরামিকের সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস আগের বছরের চেয়ে ১৭ পয়সা কমে নেমে এসেছে মাত্র ৪ পয়সায়। এ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কোম্পানির শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০২-এ, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, যে কোম্পানির শেয়ারের পিই রেশিও যত বেশি, সেই শেয়ার বিনিয়োগের জন্য তত বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

বিনিয়োগকারীদের এ ঝুঁকি বিবেচনায় ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে পিই রেশিও সীমা বেঁধে দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বর্তমানে ৪০ পিইর বেশি কোম্পানির শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে কোনো ঋণসুবিধা দিতে পারে না ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো।

আরও পড়ুন