চার ব্যাংকের বিনিয়োগের তথ্য চায় অর্থ মন্ত্রণালয়

রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল লা মেরিডিয়ানে রাষ্ট্রমালিকানাধীন চার ব্যাংকের বিনিয়োগের বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। কোন আর্থিক মূল্যায়নের ভিত্তিতে ব্যাংকগুলো ৬৫ টাকা দামে লা মেরিডিয়ানের শেয়ারে বিনিয়োগ করেছে, তারও বিস্তারিত জানতে চেয়েছে মন্ত্রণালয়। গতকাল মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ–সংক্রান্ত চিঠি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

একই চিঠিতে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ সংস্থা ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের ইস্যু ব্যবস্থাপক হওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ চাওয়া হয়েছে। সে জন্য আইসিবি ও আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের শীর্ষ নির্বাহীদের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব শেখ সিদ্দিকুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে লা মেরিডিয়ানের মালিকানা প্রতিষ্ঠান বেস্ট হোল্ডিং লিমিটেডে সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংকের বিনিয়োগের ধারাবাহিকতার পরিপূর্ণ চিত্র জানাতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এসব বিনিয়োগের বিষয়ে ব্যাংকগুলোর যেসব পর্ষদ সভায় সিদ্ধান্ত বা অনুমোদন হয়েছে, সেই পর্ষদ সভার কার্যবিবরণী ও কিসের ভিত্তিতে ব্যাংকগুলো প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার ৬৫ টাকা দামে কিনেছে, সে সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়েছে।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন ছাড়া লা মেরিডিয়ান হোটেলের মালিকানায় থাকা মূল প্রতিষ্ঠান বেস্ট হোল্ডিংসকে শেয়ারবাজারে সরাসরি তালিকাভুক্তির (ডিরেক্ট লিস্টিং) উদ্যোগ নেওয়া হয়। একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীর সঙ্গে এক হয়ে এ উদ্যোগ নেন দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বিতর্কিত ও প্রভাবশালী এক পরিচালক। যিনি ১৯৯৬ ও ২০১০ সালের দুই দফা শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির দায়ে অভিযুক্ত ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার কোনো শাস্তি হয়নি।

আরও পড়ুন

ওই প্রভাবশালী পরিচালক ডিএসইর পর্ষদ সভার অনুমোদনের জন্য লা মেরিডিয়ানের তালিকাভুক্তির বিষয়টি সরকারি ছুটির দিনে আলোচ্যসূচি বা অ্যাজেন্ডাভুক্ত করেন। যাতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এর বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নিতে না পারে এবং বিষয়টি যাতে জানাজানি না হয়, সে জন্যই এ কৌশল অবলম্বন করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। বিজয় দিবসের ছুটির দিনেই বিশেষ আদেশ জারির মাধ্যমে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে ডিএসইকে নির্দেশ দেয় বিএসইসি। পাশাপাশি এ–সংক্রান্ত বিষয়ে ডিএসইর কাছে ব্যাখ্যাও তলব করা হয়।

এরপর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তাঁর এ–সংক্রান্ত একটি চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করেন। আর গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রমালিকানাধীন চার ব্যাংক ও আইসিবির কাছে কোম্পানিটিতে বিনিয়োগের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়।