রুপার অলংকারে প্রতারিত গ্রাহক

বিয়েশাদিতে রুপার অলংকারের চাহিদা বাড়ছে।

বিয়েশাদিতে রুপার অলংকারের চাহিদা বাড়ছে। তবে ইমিটেশন জুয়েলারি রুপার অলংকার নামে বিক্রি করে আসছিলেন একশ্রেণির ব্যবসায়ীরা। তাতে প্রতারিত হচ্ছেন গ্রাহকেরা।

বিশৃঙ্খল এই রুপার বাজারে লাগাম টানার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি। সোনার মতো রুপার অলংকারেও হলমার্ক (মাননির্ণয়) বাধ্যতামূলক করেছে সংগঠনটি। সেই সঙ্গে ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে সনাতন পদ্ধতির রুপার অলংকার তৈরি ও বিক্রি নিষিদ্ধ করার চিন্তাভাবনা করছেন সমিতির নেতারা।

হলমার্ক বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি রুপার অলংকারের দামও বেঁধে দিয়েছে সমিতি। তাতে ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি রুপার অলংকারের দাম পড়বে ১ হাজার ৫১৬ টাকা। ২১ ও ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপার অলংকার কিনতে লাগবে যথাক্রমে ১ হাজার ৪৩৪ ও ১ হাজার ২২৪ টাকা। আর সনাতন পদ্ধতির রুপার অলংকার আগের মতোই ৯৩৩ টাকা ভরি।

রুপার অলংকার নিয়ে ক্রেতারা অনেক দিন ধরেই ঠকছিলেন। অনেক ক্ষেত্রে ইমিটেশন জুয়েলারি রুপার অলংকার বলে চালিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। তাই রুপার বাজারের মানোন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছি।
দিলীপ কুমার আগরওয়ালা, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি

রুপার অলংকারের বাজারে শৃঙ্খলা আনতে ১ সেপ্টেম্বর জুয়েলার্স সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান আমিনুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করে সংগঠনটির বর্তমান নেতৃত্ব। সেই কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সমিতি রুপার অলংকারেও হলমার্ক বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি দাম নির্ধারণ করেছে।

জানতে চাইলে জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা প্রথম আলোকে বলেন, ‘রুপার অলংকার নিয়ে ক্রেতারা অনেক দিন ধরেই ঠকছিলেন। অনেক ক্ষেত্রে ইমিটেশন জুয়েলারি রুপার অলংকার বলে চালিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। তাই রুপার বাজারের মানোন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছি।’

এক যুগ আগেও সোনার অলংকার ভাঙালে শেষ পর্যন্ত কতটুকু বিশুদ্ধ সোনা পাওয়া যাবে, তা নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে সংশয় ছিল। ২০০৭ সালে হলমার্ক বাধ্যতামূলক করে জুয়েলার্স সমিতি। তখন থেকে অলংকারের গায়ে কতটুকু বিশুদ্ধ সোনা আছে, তা খোদাই করে লিখে দেয় বিক্রেতা। অলংকার কেনার রসিদেও বিষয়টি লেখা থাকে।

সোনার পাশাপাশি রুপার অলংকারেও হলমার্ক বাধ্যতামূলক করায় প্রতারণা বন্ধ হয়ে যাবে।
দেওয়ান আমিনুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি

সাধারণত অলংকার প্রস্তুত করার পর দুই প্রতিষ্ঠান বাংলা গোল্ড ও ঢাকা গোল্ড আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে তা পরীক্ষা করে বিশুদ্ধ সোনার পরিমাণ বের করে। ব্র্যান্ড ও স্বনামধন্য জুয়েলার্সগুলো সেটি মেনে চললেও মফস্বলের ছোট-মাঝারি প্রতিষ্ঠান হলমার্কের বিষয়টি মানেন না।

সমিতির নেতারা জানান, রুপার বাজারে বিশৃঙ্খলা গ্রামের তুলনায় শহরাঞ্চলে ভয়াবহ। তবে হলমার্কব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা গেলে সেটি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। রুপার পুরোনো অলংকার বিক্রির ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ বাদ দিয়ে মূল্য নির্ধারণ করা হবে। আর পুরোনো অলংকার বদলে নতুন অলংকার নিলে ২৫ শতাংশ বাদ দেওয়া হবে।

জানতে চাইলে সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান আমিনুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সোনার পাশাপাশি রুপার অলংকারেও হলমার্ক বাধ্যতামূলক করায় প্রতারণা বন্ধ হয়ে যাবে।