দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে আবার ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

ডলারছবি: সংগৃহীত

দেশের পণ্য রপ্তানি এখন মোটামুটি ইতিবাচক ধারায় আছে। গত ডিসেম্বর থেকে টানা ৪ মাস পণ্য রপ্তানি ৫০০ কোটি ডলারের ওপরে রয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ গত মার্চ মাসে রপ্তানি হয়েছে ৫১০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য। পবিত্র রোজার প্রথম দিকে গতি না থাকলেও ঈদের ঠিক আগে আগে রেমিট্যান্স তথা প্রবাসী আয়েও চাঙা ভাব দেখা দেয়। আবার বিদেশ থেকে পণ্য আমদানিতেও টানা হয়েছে লাগাম। সব মিলিয়ে সুফল মিলছে। তাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুত ২০ বিলিয়ন বা ২ হাজার কোটি ডলারের ওপরে উঠেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম–৬ অনুযায়ী, ৮ এপ্রিল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে হয়েছে ২০ দশমিক ১১ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১১ কোটি মার্কিন ডলার। একই দিনে মোট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ হাজার ৫৩৯ কোটি ডলার। গত বছরের এই সময়ে মোট রিজার্ভের পরিমাণ অবশ্য আরও অনেক বেশি ছিল, ৩১ দশমিক ২০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ১২০ কোটি ডলার।

এই দুই ধরনের রিজার্ভের বাইরে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরকটি হিসাব আছে, যা আইএমএফের কাছে প্রকাশ করতে হয়। এ ছাড়া আইএমএফের ঋণচুক্তি অনুসারে প্রতি তিন মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ সংরক্ষণের হিসাব দেখাতে হয়।

চলতি বছরের মার্চ মাসের শেষেও আইএমএফের শর্ত মেনে এই নিট বা প্রকৃত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। আইএমএফ বাংলাদেশকে যে ঋণ দিয়েছে, তার শর্ত অনুযায়ী মার্চের শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রকৃত রিজার্ভ থাকার কথা ১ হাজার ৯২৬ কোটি মার্কিন ডলার। কিন্তু তখন প্রকৃত রিজার্ভ ছিল ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের কম। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রকৃত রিজার্ভ হলো দায়হীন রিজার্ভ। প্রকৃত রিজার্ভের হিসাব কীভাবে হবে, সেই সূত্রও ঋণ দেওয়ার সময় বাংলাদেশকে জানিয়ে দিয়েছিল আইএমএফ। সংস্থাটি ঋণের শর্ত হিসেবে নির্দিষ্ট সময় পরপর প্রকৃত রিজার্ভ কী পরিমাণে থাকতে হবে, তা ঠিক করে দেয়। সে অনুযায়ী প্রতি তিন মাস পরপর আইএমএফের শর্ত মেনে বাংলাদেশকে রিজার্ভ সংরক্ষণ করতে হচ্ছে।

এর আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বরের শেষেও আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী রিজার্ভের লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরে বাংলাদেশের অনুরোধে রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্য কমিয়ে দেয় সংস্থাটি। সর্বশেষ মার্চ মাসের শেষেও সংশোধিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি।

আইএমএফের এসডিআর খাত, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসেবে রাখা ডলার ও এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিলের জন্য জমা থাকা ডলার বাদ দিয়ে যে হিসাব হয়, সেটিই প্রকৃত রিজার্ভ। এর বাইরে রিজার্ভের আরও দুটি হিসাব রয়েছে। তার একটি হলো মোট রিজার্ভ। আরেকটি আইএমএফের হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রক্ষিত রিজার্ভ। তবে আইএমএফ শুধু নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ প্রতি তিন মাস পরপর কত থাকবে, সেটির ওপর শর্ত দিয়ে রেখেছে।