চাল বিক্রি বন্ধ করে এখন ‘উদ্বৃত্তের সমস্যায়’ ভারত
চলতি বছরের জুনে ভারতের ফুড করপোরেশনের (এফসিআই) বাফার মজুত থেকে বিভিন্ন রাজ্য সরকারের কাছে চাল ও গম বিক্রি বন্ধ করেছিল দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু পাঁচ মাস পর এখন চালের উদ্বৃত্ত মজুত নিয়ে সমস্যায় পড়েছে দেশটি।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে জানানো হয়, এফসিআইর বাফার মজুত থেকে ওপেন মার্কেট সেল স্কিমের (ওএমএসএস) অধীন রাজ্যগুলোয় গম ও চাল বিক্রি করে থাকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু গত জুনের ১৩ তারিখ থেকে এ বিক্রি বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। এর পক্ষে যুক্তি ছিল—মৌসুমি বৃষ্টির ঘাটতি হলে খরিফ (বর্ষাকালে) ফসল উৎপাদন কমে যেতে পারে। এ ছাড়া বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণও উদ্দেশ্য ছিল।
তবে দেখা গেছে খরিফ মৌসুমে ধানের উৎপাদন ভালো হয়েছে। এফসিআই বাফার মজুতের জন্য জোরালোভাবে চাল সংগ্রহ করতে পেরেছে। অন্যদিকে এই পাঁচ মাসে ওএমএসএসএর মাধ্যমে খোলা বাজারে চাল বিক্রি খুব কম হয়েছে। এ ছাড়া শস্যভিত্তিক ইথানল প্ল্যান্টেও চাল বিক্রি বন্ধ রাখা হয়েছিল। এসব কারণে চলমান খরিফ বিপণন মৌসুম শেষে বাফারে প্রয়োজনের দ্বিগুণের বেশি চালের মজুত হয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওএমএসএসে চাল বিক্রি বন্ধ থাকলেও গত জুলাই থেকে চালের ই-নিলাম কার্যক্রম শুরু হয়। আগামী মার্চের মধ্যে ক্রেতাদের কাছে ২৫ লাখ টন চাল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে এফসিআই। তবে এখন পর্যন্ত ই-নিলামের মাধ্যমে খোলা বাজারে মাত্র এক লাখ টন চাল বিক্রি করতে পেরেছে সংস্থাটি।
সরকারি তথ্যে দেখা যায়, গত মাসে শুরু হওয়া ক্রয় মৌসুমে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ টন চাল কিনেছে এফসিআই ও রাজ্য সংস্থাগুলো। কর্মকর্তারা বলছেন, ওডিশা ও ঝাড়খন্ডের মতো কিছু রাজ্য থেকে এখনো ক্রয় শুরু হয়নি। সেটা হলে চাল ক্রয় পাঁচ কোটি টন ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ফুড করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, ক্রমবর্ধমান মজুত নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারকে শস্য খালাস করার ব্যবস্থা নিতে হবে। আগামী বছর ভারতে কেন্দ্রীয় নির্বাচন। এর আগে মজুত থেকে দরিদ্রদের জন্য আরও বেশি খাদ্যশস্য বরাদ্দ করার সুবিধা পেতে পারে নরেন্দ্র মোদি সরকার।
ভারত সরকারের বিনা মূল্যে রেশন প্রকল্প ও প্রধানমন্ত্রীর ‘গরিব কল্যাণ অন্য যোজনা’ কর্মসূচির জন্য বছরে প্রায় চার কোটি টন চালের প্রয়োজন হয়। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে প্রায় ৮১ কোটি মানুষ প্রতি মাসে পাঁচ কেজি করে খাদ্যশস্য পায়।