ভারতে ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্কছাড় থাকবে, শুল্ক বসছে গুড় রপ্তানিতে

অপরিশোধিত ও পরিশোধিত বিভিন্ন ধরনের ভোজ্যতেল আমদানিতে বিদ্যমান শুল্কছাড়ের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়েছে ভারত সরকার। আগামী ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এ সুবিধা থাকবে। এর ফলে ওই সময় পর্যন্ত বিদ্যমান শুল্কছাড়েই সয়াবিন, সূর্যমুখী ও পাম তেলের মতো ভোজ্যতেল আমদানি করতে পারবেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।

টাইমস অব ইন্ডিয়া আরও জানিয়েছে, গুড় রপ্তানির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারতের সরকার। ১৮ জানুয়ারি থেকে বাড়তি এ শুল্ক কার্যকর হবে। ইথানল তৈরির কাঁচামাল হিসেবে আখের উপজাত এই গুড় ব্যবহৃত হয়।

ভারতে আগে পরিশোধিত সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেলের আমদানি শুল্ক ছিল সাড়ে ১৭ শতাংশ। তবে গত বছরের জুনে এটি কমিয়ে সাড়ে ১২ শতাংশ করা হয়। আমদানি শুল্ক ছাড়ের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের মার্চে। তার আগেই আরও এক বছরের জন্য বিদ্যমান শুল্কছাড়ের মেয়াদ বাড়াল সরকার।

সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ভারতের বাজারে সাশ্রয়ী মূল্যে ভোজ্যতেল পাওয়া নিশ্চিত করতে আমদানি শুল্ক ছাড়ের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে ইথানল রপ্তানিতে শুল্ক বাড়ানোর ফলে দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজারে গুড়ের প্রাপ্যতা বাড়াবে। এতে ভারতে ইথানল উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে।

বিশ্বে ইথানল উৎপাদনে ব্যবহৃত সি-হেভি গুড়ের বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ ভারত। অন্যদিকে প্রধান আমদানিকারকদের মধ্যে রয়েছে নেদারল্যান্ডস, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইতালির মতো দেশ। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আখের উৎপাদন হ্রাস পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে ভারত। বিশেষ করে অনিয়মিত বর্ষার কারণে ভারতের মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটক রাজ্যে চলতি মৌসুমে আখ ও চিনি উৎপাদন কমার আশঙ্কা করছে দেশটি।

এ কারণেই গুড় রপ্তানির ওপর শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া ইথানল উৎপাদনে আখের রসের ব্যবহার সীমিত করা ও চিনিকলগুলোকে আরও বেশি পরিমাণে সি-হেভি গুড় তৈরির অনুরোধ জানানো হয়েছে।

আখ থেকে মাড়াইয়ের মাধ্যমে চিনি উৎপাদনের সময় বিভিন্ন গ্রেডের গুড় উৎপাদন হয়। এসব গুড় ইথানল বা অ্যালকোহল, গবাদিপশুর খাদ্য ও কিছু খাদ্যপণ্য উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন প্রকার গুড়ের মধ্যে উচ্চ গ্রেডের হলো সি-হেভি গুড়, যাতে চিনির উপাদান একেবারে কম থাকে। মূলত সি-হেভি গুড়ই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ইথানলের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়।

আরও পড়ুন

এদিকে গুড় রপ্তানিতে শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে ইন্ডিয়ান সুগার অ্যান্ড বায়ো-এনার্জি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (আইএসএমএ)। সংগঠনটির প্রধান এম প্রভাকর রাও বলেন, ‘আমরা অবিলম্বে গুড়ের রপ্তানি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছি। এর আলোকেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’

আরও পড়ুন