তেল কোম্পানির কর্তাদের বেতন বেড়েছে

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আবার কিছুটা বেড়েছে
ছবি: রয়টার্স

বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় পোয়াবারো হয়েছে তেল কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের। বেড়েছে তাঁদের বেতন। ২০২২ সালে ব্রিটিশ পেট্রোলিয়ামের (বিপি) প্রধান নির্বাহীর বেতন বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। শেল কোম্পানির প্রধান নির্বাহীর বেতন বেড়েছে ৫০ ভাগ।
গত বছর বিপির প্রধান নির্বাহী বারনার্ড লুনির বার্ষিক বেতন ৪ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন বা ৪৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ১০ মিলিয়ন বা এক কোটি ডলার। শেলের সাবেক প্রধান নির্বাহী বেন ভ্যান বেয়ুর্ডেনের বেতন ৫০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৯৭ লাখ ডলার।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে থেকেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। মূলত ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্বব্যাপী কোভিডজনিত বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর থেকেই বাড়ছিল তেলের দাম। যুদ্ধ শুরু হলে ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার পেরিয়ে যায়। আর তাতেই পোয়াবারো হয়েছে তেল কোম্পানিগুলোর।

এই বাস্তবতায় বিপুল মুনাফা করেছে তেল কোম্পানিগুলো। তেলের দাম এভাবে বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বারনার্ড লুনি বলেন, তেল ও গ্যাসের উচ্চ দামের কল্যাণে বিপি অর্থের যন্ত্রে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি তারা জানিয়েছে, ২০২২ সালে মুনাফা দ্বিগুণ হয়েছে, উঠেছে ২৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৭৭০ কোটি ডলারে।

বাস্তবতা হলো তেল কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে, প্রধান নির্বাহীদের বেতন বেড়েছে, কিন্তু ঘর পুড়েছে বিশ্বের কোটি কোটি নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষের। বেশি দামে জ্বালানি কিনতে গিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। টান পড়েছে রিজার্ভে। এতে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানসহ অনেক দেশের অবস্থাই সঙিন।

এ ছাড়া বিশ্বের বড় ছয়টি জ্বালানি তেল কোম্পানি ২০২২ সালে সব মিলিয়ে মুনাফা করেছে ২১ হাজার ৫৪০ কোটি মার্কিন ডলার। এদের মধ্যে কেউ কেউ তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি লাভ করেছে গত বছর।

২০২২ সালে মুনাফার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের তেল কোম্পানি এক্সন মবিল। কোম্পানিটি লাভ করেছে ৫৬ বিলিয়ন ডলার বা ৫ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। এটা শুধু এক্সন মবিলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি লাভ তাই-ই নয়, বরং পশ্চিমা যেকোনো তেল কোম্পানির জন্যও এটি একটি ঐতিহাসিক রেকর্ড।

গত বছর মুনাফার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে ব্রিটিশ কোম্পানি শেল। রাশিয়া–ইউক্রেন আক্রমণ করার পর তেলের উচ্চমূল্যের ওপর ভর করে বছর শেষে এই কোম্পানি আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ মুনাফা করে, যার পরিমাণ ছিল ৪০ বিলিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলার।

এদিকে জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদকদের মুনাফাকে ‘দানবীয়’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার উদ্দেশ্যে ২০২৫ ও ২০৩০ সালের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে না পারেন, আপনাদের এই ব্যবসায় থাকা উচিত নয়।’