মিটিং আর পাওয়ার পয়েন্ট থেকে দূরে থাকুন, এতে কাজ হয় না: ইলন মাস্ক

ইলন মাস্ক

টেসলার ইলন মাস্ক এবার নতুন পরামর্শ দিয়ে সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন। তাঁর লক্ষ্য মূলত করপোরেট বৈঠকের দিকে। এসব বৈঠক ও উপস্থাপনা তাঁর কাছে অনেকটাই নিষ্ফলা। তিনি বলেছেন, এসব বৈঠক না করে করপোরেটদের উচিত হলো, পণ্যের মান উন্নয়নে প্রতিদিনই নজর দেওয়া।

সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল–এর সিইও কাউন্সিল বার্ষিক সম্মেলনে দর্শকদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘আমি মনে করি না, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহীরা পণ্যের মান উন্নয়নে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন।’ সে জন্য তাঁর পরামর্শ হচ্ছে, কনফারেন্স কক্ষ, অর্থায়ন ও পাওয়ার পয়েন্টে বেশি গুরুত্ব না দিয়ে প্রতিদিনই পণ্যের মান উন্নয়নে নজর দিতে হবে। চেষ্টা করতে হবে, যাতে পণ্য যতটা সম্ভব আকর্ষণীয় করা যায়।

কোম্পানির পরিচালনা নিয়ে ইলন মাস্ক বিশেষ উষ্মা প্রকাশ করেছেন। এমনকি বিজনেস স্কুল নিয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, ব্যবসা পরিচালনায় এমবিএর সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে গেছে।

মাস্কের পরামর্শ হচ্ছে কনফারেন্স কক্ষ, অর্থায়ন ও পাওয়ার পয়েন্টে বেশি গুরুত্ব না দিয়ে প্রতিদিনই পণ্যের মান উন্নয়নে নজর দিতে হবে। চেষ্টা করতে হবে, যাতে পণ্য যতটা সম্ভব আকর্ষণীয় করা যায়।

শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে বরাবরই কিছুটা ব্যতিক্রম। এতে তিনি অনেকবারই বিপদে পড়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার নিয়ে তিনি প্রায়ই নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়েছেন। এরপর কোভিড মোকাবিলার কৌশল নিয়েও বিরূপ কথা বলেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ২০১৮ সালে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে। অভিযোগ, তিনি যোগাযোগমাধ্যমে টেসলা প্রাইভেট নিয়ে ভুল তথ্য ছড়িয়েছেন। এরপর ফয়সালায় বলা হলো, টেসলা কর্মকর্তাদের এলন মাস্কের মন্তব্য আগে থেকে অনুমোদন করে দিতে হবে, কারণ তাঁর মন্তব্যে টেসলার শেয়ারের দামে প্রভাব পড়ে। এরপর চলতি বছরের শুরুর দিকে তিনি বলে বসেন, টেসলার শেয়ারের দাম একটু বেশি।

ব্যবসা সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, একসময় তিনি নিজেও বৈঠকে বেশি সময় দিয়েছেন। এর জন্য তাঁকে ভুগতেও হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এরপর আমি যখন কারখানার ফ্লোরে বেশি সময় দিলাম, নিজেই গাড়ি ব্যবহার বা রকেটে বেশি সময় দিতে শুরু করলাম, তখন পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে থাকে।’

আরও পড়ুন

এরপর তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ক্ষমতার আরও বিভাজন করা দরকার কি না। জবাবে তিনি বলেন, ‘কর্মীদের কাজে বেশি যুক্ত হওয়ার পর আমার প্রতি কর্মীদের শ্রদ্ধা বেড়ে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধের কথা ভাবুন: জেনারেল কি গজদন্ত মিনারে বসে থাকবেন, নাকি সম্মুখসারিতে থাকবেন? কথা হলো, যুদ্ধে জিততে হলে জেনারেলকে যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে দেখাতে হবে, সেনাদের খোঁজখবর তিনি রাখেন।’

ইলন মাস্ক এখন বিল গেটসের সঙ্গে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী। করোনাকালে সম্পদ বৃদ্ধির দিক থেকে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন টেসলা ও স্পেস এক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক। ২০২০ সালে তাঁর সম্পদ বেড়েছে ৪১৪ শতাংশ। আর এতে তাঁর সম্পদ ২৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার থেকে একলাফে বেড়ে হয়েছে ১২৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার।