জাহাজ কিনছে বিএসসি, দাম বাড়ছে শেয়ারের

ছবি: সংগৃহীত

নতুন কয়েকটি জাহাজ কেনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন বা বিএসসি। এ খবরে শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে বিনিয়োগকারীদের। সেই সঙ্গে বেড়েছে শেয়ারের দামও।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল মঙ্গলবার লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে বিএসসির শেয়ার। এদিন কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ৫ টাকা বা প্রায় সাড়ে ৪ শতাংশ বেড়েছে। আর দিন শেষে ৩২ কোটি টাকার সমপরিমাণ শেয়ারের হাতবদল হয়।

আরও পড়ুন

করোনাকালে জাহাজ ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানিটির আয়ও কয়েক গুণ বেড়ে যায়। তাতে বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দামও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। ২০২১ সালের ১১ জানুয়ারি ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৪৭ টাকা। গতকাল দিন শেষে সেই দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২০ টাকায়। মাঝে অবশ্য এটির শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ১৬৯ টাকায়ও উঠেছিল।

ডলার–সংকট ও করোনার কারণে শেয়ারবাজারের বেশির ভাগ কোম্পানির আয় যখন কমেছে, তখন বিএসসির আয় বেড়েছে কয়েক গুণ। কোম্পানিটি সর্বশেষ প্রকাশিত গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, উল্লেখিত তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস ছিল ৩ টাকা ৯৮ পয়সা। ২০২১ সালের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৪ টাকা ৩৪ পয়সা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুলাই-সেপ্টেম্বরেও কোম্পানিটির আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ কোটি টাকার বেশি বেড়েছে। তবে খরচ বেড়ে যাওয়ায় মুনাফা কম হয়েছে। এ কারণে ইপিএস কমেছে।

সম্প্রতি কোম্পানিটি নতুন করে চারটি জাহাজ কেনার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে কোম্পানির পর্ষদে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তও হয়েছে। সরকারের দিক থেকেও নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে চূড়ান্তভাবে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হবে এ–সংক্রান্ত প্রকল্প সরকারের একনেক সভায় অনুমোদনের পর।

আরও পড়ুন

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জিটুজি বা সরকারের সঙ্গে সরকারের ঋণ চুক্তির আওতায় এ জাহাজ কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চীন সরকার এ বাবদ বাংলাদেশকে ঋণসহায়তা দেবে। তাই সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদনের পরই জাহাজ কেনার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। নতুন করে যে চারটি জাহাজ কেনার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে, সব কটিই তেল বহনকারী ট্যাংকার জাহাজ। চীনেই এসব জাহাজ তৈরি হবে।

বর্তমানে বিএসসির বহরে আটটি জাহাজ রয়েছে। তার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে একটি জাহাজ ইউক্রেন বন্দরে হামলার শিকার হয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় ইউক্রেনের সমুদ্রসীমায় পড়ে আছে। বাকি সাতটি জাহাজে পরিবহন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ সাতটি জাহাজের মধ্যে তিনটি ট্যাংকার জাহাজ। তবে নতুন করে যেসব ট্যাংকার জাহাজ কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর পরিবহন সক্ষমতা আগেরগুলোর দ্বিগুণের বেশি। নতুন জাহাজগুলোর একেকটির পরিবহন সক্ষমতা হবে সর্বনিম্ন ৮৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ ১০ হাজার টন ধারণক্ষমতার।

আরও পড়ুন

জানতে চাইলে বিএসসির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, চারটি জাহাজ কেনার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন এ–সংক্রান্ত প্রকল্প তৈরির কাজ চলছে। যেহেতু জিটুজি ভিত্তিতে এসব জাহাজ কেনা হবে, তাই প্রকল্পটি একনেকের অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। একনেকের অনুমোদনের পরই জাহাজ কেনার উদ্যোগটি কার্যকর করা হবে।