বিশ্বকে আশা দেখাচ্ছে চীন-জাপানের কারখানা

প্রতীকী ছবি

করোনাভাইরাসজনিত লকডাউনের ধকল কাটিয়ে অবশেষে এশিয়ায় কারখানাগুলো দিন দিন ব্যস্ত হয়ে উঠছে। বিশেষ করে চীন ও জাপানের কারখানাগুলো সবচেয়ে বেশি পণ্য উৎপাদন করছে। এর অর্থ হলো দেশে দেশে চাহিদা বাড়ছে, যা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে আপাতত আশার সঞ্চার করছে। তবে কর্মসংস্থান এখনো চাপের মধ্যে রয়ে গেছে।
এশিয়ার বৃহত্তম ও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতি চীনের ম্যানুফ্যাকচারিং বা উৎপাদন খাত করোনাকালে কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়লেও সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বরে সত্যিকার অর্থেই প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথে হাঁটতে শুরু করেছে। এভাবে দেশটির অর্থনীতি স্থিতিশীলতার দিকে এগোবে বলে আশা করা হচ্ছে। দুটি জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্বের তৃতীয় ও এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি জাপানের উৎপাদন খাতও চীনের মতো প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে।

আরও পড়ুন

চীনের সরকারি পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স বা পিএমআই সূচক বেড়ে সেপ্টেম্বরে ৫১ দশমিক ৫ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে, যা বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার তুলনায় কিছুটা বেশি। বিশ্লেষকেরা ৫১ দশমিক ২ পয়েন্ট আশা করেছিলেন। আগের মাস আগস্টে ছিল ৫১ পয়েন্ট। দেশটির ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকস (এনবিএস) গতকাল বুধবার এ তথ্য প্রকাশ করেছে। একই দিনে একটি বেসরকারি সংস্থার জরিপেও প্রায় অনুরূপ তথ্য দিয়ে বলেছে, বিদেশে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় চীনের উৎপাদন খাতের প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠছে।
পিএমআই সূচক ৫০-এর ওপর থাকলে সেটাকে প্রবৃদ্ধি, আর ৫০-এর নিচে হলে তাকে সংকোচন বলা হয়। সে অনুযায়ী চীনের উৎপাদন খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়ছে বলা যায়। এর আগে দেশটির উৎপাদন খাতে টানা সাত মাস সংকোচন হয়েছিল।
উৎপাদন খাতে প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি বৈশ্বিক চাহিদা, প্রণোদনায় পরিচালিত অবকাঠামো সম্প্রসারণ কর্মসূচি ও রপ্তানি বৃদ্ধির সুবাদে চীনের অর্থনীতি ধীরে ধীরে আবার করোনাভাইরাসের আগের অবস্থায় ফিরে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জাপানের উৎপাদন খাত টানা তৃতীয় মাস প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে

জাপানের উৎপাদন খাত টানা তৃতীয় মাস প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বুধবার প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, গত আগস্টে দেশটির পিএমআই সূচক আগের মাসের চেয়ে ১ দশমিক ৭ পয়েন্ট বেড়েছে। ব্যবসায়িক অংশীদার দেশগুলোয় চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় জাপানের গাড়ি, গাড়ির যন্ত্রাংশ, লৌহ, ইস্পাত, নন-ফেরোস মেটাল ইত্যাদি পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম দিক থেকেই করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতিতে জারি করা লকডাউনের কারণে দেশটির রপ্তানি খাত বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে।
এদিকে অনেকেই মনে করেন, উৎপাদন খাত ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও চীনা অর্থনীতির সামনে এখনো চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। চলতি ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিক এপ্রিল-জুনে চীনের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে এবং বছর শেষে তা আরও কমে ২ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়াবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। সে ক্ষেত্রে এই প্রবৃদ্ধিই হবে চীনে বিগত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
চীনে কর্মসংস্থান খাতের পিএমআই সূচক অবশ্য এখনো নিরপেক্ষ মানদণ্ড, অর্থাৎ ৫০-এর নিচে মানে সংকোচন পর্যায়ে রয়েছে। সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বরে দেশটির কর্মসংস্থান পিএমআই দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৯ পয়েন্টে, যা আগের মাসে ছিল ৪৯ দশমিক ৪ পয়েন্ট। এর অর্থ হচ্ছে চীনকে এখন চাকরির সুযোগ বৃদ্ধির পদক্ষেপ জোরদার করতে হবে। সূত্র: আল–জাজিরা