বোনাস দিয়েও বিপাকে আমাজন

ব্ল্যাক ফ্রাইডের আগে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ৫০ কোটি টাকার বোনাস ঘোষণা করে প্রশংসা কুড়িয়েছিল ই-কমার্স জায়ান্ট আমাজন। কিন্তু এই বোনাসের পরও বিপদে আছে তারা। ব্ল্যাক ফ্রাইডের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিক্রির মৌসুমে কর্মবিরতিতে গেছেন আমাজনের ১৫ দেশের কর্মীরা।

শুধু জার্মানিতেই প্রায় আড়াই হাজার কর্মী যোগ দিয়েছেন আন্দোলনে। এই প্রতিবাদে আমাজনের কর্মীদের সঙ্গে আছে গ্রিন পিস, অক্সফাম, ইউএনআই গ্লোবাল ইউনিয়ন ও ট্যাক্স জাস্টিস ইন্টারন্যাশনালের মতো ডজনখানেক সংগঠন।

আমাজনের কর্মী এবং সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো সিএনএনকে জানিয়েছে, শুধু ধন্যবাদ বোনাস দিয়েই দায় মেটে না প্রতিষ্ঠানটির। করোনার মহামারিতে কর্মীদের ক্ষতিপূরণ, সুরক্ষার মতো বিষয়গুলোতেও দায়িত্ব আছে তাদের। আমাজন শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে পূর্ণকালীন কর্মীদের ৩০০ ডলার বা ইউরো এবং খণ্ডকালীনদের ১৫০ ডলার বা ইউরো দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যেখানে আমাজন মোট ১৫টি দেশে তাদের ই-কমার্সের মাধ্যমে ব্যবসা করে থাকে।  

আরও পড়ুন

ইউএনই গ্লোবাল ইউনিয়ন এ–ও দাবি করেছে, আমাজন ব্যবসা করে, এমন ১৫টি দেশে তো আমাজনের কর্মীরা আন্দোলন করছেনই, বাংলাদেশের কর্মী যাঁরা আমাজনের পণ্য সরবরাহকারী, তাঁরাও ভাতা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করছেন।

প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে আমাজনের বিশ্বব্যাপী কার্যক্রমের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেভ ক্লার্ক এক লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছে, কর্মীদের বিশেষ ভাতা খাতে বিশ্বব্যাপী এ বছর আমাজন ২৫০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ করবে। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি জুনে কর্মীদের ‘ধন্যবাদ ভাতা’ দিয়েছে।

করোনার অতিমারিতে যখন অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছে, ঘরে বসে পণ্য কেনার ব্যবসা আমাজন আরও ফুলে–ফেঁপে উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটি আশা করছে, এ বছর তাদের বিক্রি ৩৭০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত যেতে পারে, যা গত বছরের থেকে এক-তৃতীয়াংশ বেশি।

আমাজনের মালিক জেফ বেজোস এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। ফোর্বসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১১৩ বিলিয়ন ডলার। শুধু করোনার বছরের মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত যখন বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে লকডাউন চলছিল, বেজোসের আয় বেড়েছে ৪৮ বিলিয়ন ডলার।

আমাজনের মালিক জেফ বেজোস এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। ফোর্বসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১১৩ বিলিয়ন ডলার। শুধু করোনার বছরের মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত যখন বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে লকডাউন চলছিল, বেজোসের আয় বেড়েছে ৪৮ বিলিয়ন ডলার।

ব্ল্যাক ফ্রাইডের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিক্রয় মৌসুমে কর্মীদের কর্মবিরতিতে যাওয়া নিয়ে আমাজন জার্মানির মুখপাত্র স্টেফান আইসেনসেহার জানান, কিছু কর্মীর কর্মবিরতি কাজের কোনো ব্যাঘাত ঘটাবে না। কারণ, জার্মানিতে আমাজনের প্রায় ২৬ হাজার পূর্ণকালীন এবং ১০ হাজার খণ্ডকালীন কর্মী আছেন। আইসেনসেহারের দাবি, এই আন্দোলনও অযৌক্তিক। কারণ, জার্মানিতে সাধারণভাবে কর্মীরা ঘণ্টায় সর্বনিম্ন ৯.৩৫ ইউরো পারিশ্রমিক পান, যেখানে আমাজনের কর্মীদের ১১.৩০ থেকে ১২.৭০ ইউরো প্রতি ঘণ্টার পারিশ্রমিক দেয়।

জার্মানিতে আমাজনের কর্মীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যের কর্মী সংগঠন জিএমবি ইউনিয়ন অমানবিক কর্মস্থলের বিষয়ে সংসদীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে। এদিকে আমাজন যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে আমাজনের কর্মীরা কোনো আন্দোলন করছেন না।