শিল্পীদেরও যেভাবে দিতে হবে আয়কর

মানুষের চিত্তবিনোদনের জন্য সারা জীবন পার দেন শিল্পীরা। কেউ অভিনেতা, কেউ কণ্ঠশিল্পী, কেউবা চিত্রশিল্পী। পেশাদার শিল্পীদের জীবন-জীবিকা এই শিল্পকলা থেকেই। শিল্পকলা জগতের এই মানুষদেরও বছর শেষে কর দিতে হয়। তাঁদের বছর শেষে কাগজ-কলম নিয়ে বসতে হয়। আয়-ব্যয় ও করের হিসাব করতে হয়। একজন শিল্পী কীভাবে করের হিসাব করবেন, এবার তা দেখা যাক।

একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। শারমীন সুলতানা একজন কণ্ঠশিল্পী। তাঁর নিজস্ব একটি গানের দল আছে। সারা বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে তিনি ও তাঁর গানের দল গান পরিবেশনা করে আয় করেন। এটিই শারমীন সুলতানার একমাত্র উপার্জনের উৎস। তিনি ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন মাস কনসার্ট করে মোট ১০ লাখ টাকা আয় করেছেন। এখন তাঁকে রিটার্ন প্রস্তুত করতে হবে।

শিল্পকলা থেকেই পেশাদার শিল্পীদের জীবন-জীবিকা। বিনোদন জগতের এই মানুষদেরও বছর শেষে কর দিতে হয়। তাঁদেরও কাগজ-কলম নিয়ে বসতে হয়।

শারমীন সুলতানার গানের দলে তিনজন সহশিল্পী, তিনজন যন্ত্রশিল্পী ও দুজন তবলচি আছেন। সহশিল্পীদের প্রতি মাসে সম্মানী বাবদ মাসে ৬ হাজার টাকা করে পুরো বছরে ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা বেতন দিয়েছেন। যন্ত্রশিল্পীদের মাসে ৫ হাজার টাকা করে মোট ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেন। আর দুজন তবলচি পেয়েছেন প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা। পুরো বছরে তাঁরা পেয়েছেন ৭২ হাজার টাকা।

সব মিলিয়ে সহশিল্পী ও যন্ত্রীদের জন্য শারমীন সুলতানার খরচ হয়েছে ৪ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। এ ছাড়া নিজের ও সহশিল্পীদের পোশাকআশাক কিনতে খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। যাতায়াতেও খরচ প্রায় ১০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে শারমীন সুলতানার খরচ হয়েছে ৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন

খরচ বাদে সারা বছরে শারমীন সুলতানার আয় হলো ৫ লাখ ৭ হাজার টাকা। এটিই তাঁর করযোগ্য আয়। সাধারণত পুরুষ করদাতাদের ক্ষেত্রে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত থাকে। কিন্তু নারী করদাতাদের ক্ষেত্রে এই সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা। এর মানে, ১ লাখ ৫৭ হাজার টাকার ওপর শারমীন সুলতানাকে কর দিতে হবে। প্রথম এক লাখ টাকার জন্য ৫ শতাংশ হারে ৫ হাজার টাকা কর দিতে হবে। আর বাকি ৫৭ হাজার টাকার জন্য ১০ শতাংশ হারে ৫ হাজার ৭০০ টাকা কর বসবে।

সব মিলিয়ে শারমীন সুলতানার করের পরিমাণ দাঁড়াবে ১০ হাজার ৭০০ টাকা। তবে শারমীন সুলতানা যদি সঞ্চয়পত্র কিনতেন, তাহলে বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত নিতে পারতেন।