স্বীকৃতির মতো চুক্তিতেও প্রথম বন্ধু ভুটান

বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রথম স্বীকৃতিদানকারী দেশ ভুটানের সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) করা হচ্ছে। এটি হবে বিশ্বের কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম পিটিএ।

আজ রোববার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ভার্চ্যুয়াল সংযোগের মাধ্যমে এ চুক্তি সই হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং ভার্চ্যুয়াল সংযোগের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ভুটানের ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স মিনিস্টার লোকনাথ শর্মা চুক্তিতে সই করবেন।

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এসব তথ্য জানান। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পিটিএ হওয়ার পর ভুটানের বাজারে বাংলাদেশ মোট ১০০টি পণ্যে এবং ভুটান বাংলাদেশে ৩৪টি পণ্যে শুল্কমুক্ত বাজারসুবিধা পাবে। পরবর্তী সময়ে আলোচনার মাধ্যমে আরও পণ্য সংযুক্ত হবে তালিকায়। এ চুক্তির মাধ্যমেই বাংলাদেশের অগ্রাধিকারমূলক দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর শুরু হবে। অনুষ্ঠানে বাণিজ্যসচিব মো. জাফর উদ্দীনসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ ভুটানের বাজারে মোট ১০০টি পণ্যে এবং ভুটান বাংলাদেশে মোট ৩৪টি পণ্যে শুল্কমুক্ত বাজারসুবিধা পাবে।

তবে ভুটান যেহেতু বাংলাদেশে রপ্তানি করে বেশি, স্বাভাবিক কারণেই দেশটি বেশি লাভবান হবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ভুটান ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর সর্বপ্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। এরপর থেকে সুদীর্ঘ ৫০ বছর ধরে উভয় দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে দেশটির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের আরও উন্নয়ন ঘটেছে। বাংলাদেশ এ বছর মুজিব শতবর্ষ এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন করতে যাচ্ছে। এই মাহেন্দ্রক্ষণে পিটিএর মাধ্যমে দুই দেশের বন্ধুত্বের সম্পর্কে একটি নতুন মাইলফলক তৈরি হতে যাচ্ছে।

আরও জানানো হয়, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৬ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল ভুটানে, যা ১০ বছর পর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার। একই সময়ে ভুটান থেকে বাংলাদেশের আমদানি ১ কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার থেকে বেড়ে ৪ কোটি ২০ লাখ ৯০ হাজার ডলারে উঠেছে। ভুটান থেকে বাংলাদেশ প্রধানত বোল্ডার পাথর আমদানি করে, যা অবকাঠামোগত উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।

বাংলাদেশি পণ্যের অন্যতম গন্তব্যস্থল না হলেও পিটিএ করার জন্য ভুটানকে বাংলাদেশ কেন বেছে নিল—এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যসচিব মো. জাফর উদ্দিন বলেন, ‘ভুটান দিয়ে আমরা শুরু করলাম। অন্য দেশের সঙ্গেও এখন হবে। ১১টি দেশের সঙ্গে পিটিএ করার কাজ চলছে।’