প্রবেশপত্রে দেওয়া স্বাক্ষর যাচাই করা হয়

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষায় নির্বাচিত প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা গত ১২ জুন শুরু হয়েছে। পরীক্ষা চলবে আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত। একেকটি উপজেলায় প্রতিদিন ৪০ থেকে ৭০ জনের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার তৃতীয় ধাপে মৌখিক পরীক্ষা দেন মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ। তিনি বলেন, ভাইভা বোর্ডে আট মিনিট প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। বোর্ডে তিনজন সদস্য ছিলেন। জেলা প্রশাসক (ডিসি), জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) ও আরেকজন।

মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ বলেন, কেন্দ্রে ওই দিন মোট ৭০ জনের পরীক্ষা নেওয়া হয়। মৌখিক পরীক্ষা দিতে বেলা ১১টায় কেন্দ্রে যান তিনি। তাঁর সিরিয়াল নম্বর ছিল ৬৫। সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে তাঁর ভাইভা শুরু হয়।

মোস্তাকিম বিল্লাহ বলেন, মৌখিক পরীক্ষার শুরুতে একজন পরীক্ষক ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন) ফরমের সঙ্গে হাতের লেখার মিল আছে কি না, তা যাচাই করেন। ওএমআর ফরমে বাংলা ও ইংরেজিতে যে দুটি বাক্য লিখেছিলেন, সে দুটি বাক্য লিখতে বলা হয়। প্রবেশপত্রে যে স্বাক্ষর দিয়েছিলেন, একটি সাদা কাগজে সেই স্বাক্ষরও করতে বলা হয়।

পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতির সুবিধার জন্য তাঁর মৌখিক পরীক্ষার অভিজ্ঞতা এখানে তুলে ধরা হলো। অনুমতি নিয়ে মৌখিক পরীক্ষার কক্ষে ঢুকে ভাইভা বোর্ডের সদস্যদের সালাম দেন মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ।

পরীক্ষক-২: ফাইলটা দেন। লিখিত পরীক্ষায় আপনি ওএমআর ফরমে যে বাক্য লিখেছিলেন, তা হুবহু লিখুন এবং কাগজে স্বাক্ষর করুন।

মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ: সব সনদ ও অন্য কাগজপত্র দিলাম। ওএমআর ফরমে যে বাক্য লিখেছিলাম, এমসিকিউ পরীক্ষার সময় তা লিখলাম এবং স্বাক্ষর করলাম।

পরীক্ষক-২: আপনার নাম মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ।

মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ: জি, স্যার।

পরীক্ষক-১: আপনি কোন বিষয়ে ও কোথায় পড়াশোনা করছেন?

মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ: আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেছি।

পরীক্ষক-১: হিজরত সম্পর্কে বলুন।

মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ: হিজরতের শাব্দিক অর্থ হলো পরিত্যাগ করা, এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাওয়া। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর নির্দেশে ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন।

পরীক্ষক-১: বিদায় হজের ভাষণ মক্কা বিজয়ের আগে না পরে?

মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ: মক্কা বিজয়ের পর।

পরীক্ষক-১: হুদায়বিয়ার সন্ধি সম্পর্কে জানেন?

মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ: জি, স্যার।

পরীক্ষক-১: বলুন।

মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ: ৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে মুসলিম ও কুরাইশ গোত্রের মধ্যে সম্পাদিত একটি ঐতিহাসিক সন্ধিচুক্তি।

পরীক্ষক-১: মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) যেসব যুদ্ধে করেছেন, কয়েকটির নাম বলুন।

মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ: বদরের যুদ্ধ, উহুদের যুদ্ধ, খন্দকের যুদ্ধ।

পরীক্ষক-১: মুঘল সাম্রাজ্য কে প্রতিষ্ঠা করেন?

মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ: জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর।

পরীক্ষক-১: জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবরের পুত্রের নাম কী?

মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ: নাসিরুদ্দিন মুহাম্মদ হুমায়ুন।

পরীক্ষক-১: নাসিরুদ্দিন মুহাম্মদ হুমায়ুনের পুত্রের নাম কী?

মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ: জালালুদ্দিন মুহাম্মদ আকবর।

পরীক্ষক-১: মুঘল সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ শাসক কে?

মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ: জালালুদ্দিন মুহাম্মদ আকবর।

পরীক্ষক-১: তাজমহল কে নির্মাণ করেন?

মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ: সম্রাট শাহজাহান।


পরীক্ষক-১: ৭ মার্চ ও ১৭ মার্চ সম্পর্কে বলুন।

মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ: ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। সেই ভাষণে বাঙালি জাতির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা মূর্তভাবে ফুটে ওঠে। ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৭ মার্চ হলো জাতীয় শিশু দিবস।


পরীক্ষক-২: ভেরি গুড। ধন্যবাদ আপনাকে। আপনি এখন আসুন।

মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ: ধন্যবাদ স্যার, আসসালামু আলাইকুম।