৯ বছর পর পরীক্ষা, ১ ঘণ্টার নোটিশে ‘স্থগিত’: ভোগান্তিতে হাজারো প্রার্থী

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ‘হিসাব সহকারী’ পদের নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে চরম অব্যবস্থাপনার চিত্র ফুটে উঠেছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দীর্ঘ ৯ বছর পর পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হলেও শেষ মুহূর্তে তা স্থগিত করা হয়েছে। গত শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর ২০২৫) হঠাৎ পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেয় সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা চাকরিপ্রার্থীরা চরম দুর্ভোগ ও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এই পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল ২০১৬ সালে। দীর্ঘ ৯ বছর পর শুক্রবার বেলা তিনটা থেকে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরীক্ষার দিন সকালের দিকে অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষাটি স্থগিত করা হয়। এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরীক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক চাকরিপ্রার্থী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই দেশের প্রতিটি সেক্টর দুর্নীততে নিমজ্জিত, এই পরীক্ষা তার প্রমাণ। একটি পরীক্ষার আয়োজন করতে ৯ বছর সময় নিল অধিদপ্তর। অথচ পরীক্ষার দিন শুনছি, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। এক ঘণ্টার নোটিশে পরীক্ষা “স্থগিত”। হাজার হাজার পরীক্ষার্থী টাকা খরচ করে ঢাকা এসেছে। অনেকে সারা রাত বাস, ট্রেন বা লঞ্চে জেগে এসেছে। আমাদের এই কষ্টের কোনো মূল্য নেই।’

আরেক চাকরিপ্রার্থী বলেন, অধিদপ্তর একটি ছোট পদের পরীক্ষা নিতেই ব্যর্থ হলো। আগামী ২ জানুয়ারি সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা। ১৪ হাজার ৩৮৫টি পদের বিপরীতে যেখানে ১০ লাখের বেশি প্রার্থী অংশ নেবেন। সেই পরীক্ষা কতটুকু সুষ্ঠু হবে, তা নিয়ে এখন সংশয় দেখা দিয়েছে।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে ৫০৬টি হিসাব সহকারী পদের মধ্যে ২২৫টিই শূন্য। প্রায় এক দশক ধরে পদগুলো খালি থাকায় উপজেলা পর্যায়ে দাপ্তরিক কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে। নিয়োগ নিয়ে এমন অস্থিতিশীলতা এই সংকটকে আরও গভীর করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুন

এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মাসুদ হোসেনের সঙ্গে গতকাল শনিবার (২৭ ডিসেম্বর ২০২৫) মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়েও তাঁর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

অধিদপ্তরের এমন আকস্মিক সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা দ্রুত তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি করেছেন এবং আবার স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন