গৃহকর্মীদের জন্য সৌদি আরবে নতুন আইন জারি
সৌদি আরবে গৃহকর্মী ও তাঁদের নিয়োগকর্তাদের অধিকার রক্ষায় নতুন আইন জারি করেছে দেশটির মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়। শিগগির এই বিধি কার্যকর করা হবে।
নতুন এই আইনে বলা হয়েছে, গৃহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে নিয়োগকর্তাদের প্রায় ৫৭ হাজার ৭৭৪ টাকা (২ হাজার সৌদি রিয়াল) জরিমানাসহ ১ বছরের নিয়োগ নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন করা হতে পারে। নিয়োগকর্তার ‘গোপনীয়’ বিষয় প্রকাশকারী কর্মীদের জন্য জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে এই আইনে। যদি কোনো গৃহকর্মী এই আইনের লঙ্ঘন করেন, তাহলে তাঁকে দেশে স্থায়ীভাবে কাজ করার নিষেধাজ্ঞাসহ সর্বোচ্চ প্রায় ৫৭ হাজার ৭৭৪ টাকা জরিমানা করা হবে।
এই আইনের একাধিক লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে, ওই কর্মীকে তাঁর দেশে ফিরে যাওয়ার খরচ বহন করতে হবে। যদি গৃহকর্মী জরিমানা পরিশোধ করতে না পারেন, তাহলে রাষ্ট্রকে তাঁদের প্রত্যাবাসনের খরচ বহন করতে হবে। জরিমানার অর্থ একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হবে। সেখানে থেকে অর্থ গৃহকর্মীদের আবাসন ও দেশে ফেরত যাওয়ার কাজে ব্যয় করা হবে। মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়নমন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত এই প্রক্রিয়া এখন থেকে মেনে চলা হবে।
জরিমানা ও দেশে ফেরত যাওয়ার মতো ঝামেলা এড়াতে গৃহকর্মীকে তাঁদের নির্ধারিত কাজ মেনে চলার ব্যাপারে এই আইনে জোর দেওয়া হয়েছে। গৃহকর্মীদের অবশ্যই নিয়োগকর্তার সম্পত্তিকে সম্মান করতে হবে, পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি করা যাবে না এবং নিয়োগকর্তা ও তাঁদের পরিবার সম্পর্কে যেকোনো তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখতে হবে।
কোনো নিয়োগকর্তা এই আইন লঙ্ঘন করলে তাঁদের জরিমানা সর্বোচ্চ প্রায় ৫৭ হাজার ৭৭৪ টাকা ও এক বছরের নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা অথবা উভয় দণ্ডই হতে পারে।
একাধিকবার আইন লঙ্ঘন করলে তাঁদের ৫৭ হাজার ৭৭৪ টাকা থেকে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৪৩৬ টাকা (২ থেকে ৫ হাজার সৌদি রিয়াল) পর্যন্ত জরিমানা এবং ৩ বছর পর্যন্ত নিয়োগ নিষিদ্ধ হতে পারে। তৃতীয়বার অপরাধের কারণে নিয়োগের ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হতে পারে।
আইনে আরও বলা হয়েছে, প্রয়োজন না হলে নিয়োগকর্তাদের সম্মতি করা কাজের বাইরে কর্মীদের কাজ দেওয়া যাবে না। কর্মীর নির্ধারিত মাসিক মজুরি নগদে, চেকে বা তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা উচিত। প্রতিদিন ৯ ঘণ্টার কম বিশ্রাম নেওয়া উচিত নয়।
এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগুলো দেশটির শ্রম আইনের ৭ নম্বর অনুচ্ছেদের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। গৃহকর্মীদের এমন কোনো কাজ দেওয়া হবে না, যা তাঁদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা বা মানবিক মর্যাদাকে বিপন্ন করে, এমন বিষয়গুলোই নিশ্চিত করতে চায় এই আইন।