ফারাজ হাবীব খান
ছবি: সংগৃহীত

৪৩তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা আজ রোববার শুরু হয়েছে, চলবে আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত।

লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৯ হাজার ৮৪১ প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেবেন। প্রতিদিন ১৮০ জনের ভাইভা নেবে পিএসসি। প্রার্থীদের প্রস্তুতির সুবিধার জন্য আগে যাঁরা মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে সফল হয়েছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতা প্রথম আলোয় প্রকাশ করা হচ্ছে। নিয়মিত আয়োজনে আজ ষষ্ঠ পর্বে মৌখিক পরীক্ষার অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন ৪১তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত ফারাজ হাবীব খান।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ থেকে পাস করে বর্তমানে কৃষি ও পরিবেশ অডিট অধিদপ্তরের অডিটর হিসেবে চাকরি করছেন ফারাজ হাবীব খান। চাকরির পাশাপাশি ৪১তম বিসিএসের প্রস্তুতি নিয়েছেন। এই বিসিএসে তাঁর পছন্দের তালিকায় দ্বিতীয় নম্বরে ছিল প্রশাসন ক্যাডার।

এ বছরের ২২ জানুয়ারি ৪১তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা দেন ফারাজ হাবীব খান। ভাইভায় তাঁর ক্রমিক ছিল শেষ দিকে। ফারাজ হাবীব খান বলেন, ‘স্নায়ুচাপ কমানোর জন্য বারবার হাঁটাহাঁটি করছিলাম। মনে মনে মহান স্রষ্টাকে স্মরণ করছিলাম।’
ফারাজ হাবীব খানের প্রায় ৩০ মিনিটের মতো মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। ভাইভায় তাঁকে যেসব প্রশ্ন করা হয়, সেগুলোর মধ্যে একটি বাদে সব কটির উত্তর দিতে পেরেছিলেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

৪১তম বিসিএসে ফারাজ হাবীব খানের প্রথম পছন্দ ছিল পররাষ্ট্র ক্যাডার এবং দ্বিতীয় প্রশাসন ক্যাডার। যেহেতু তাঁর প্রথম পছন্দ ছিল পররাষ্ট্র, তাই এ বিষয়ে বেশি প্রশ্ন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠিত বিষয় নিয়ে একটি প্রশ্ন করা হয় তাঁকে।

ফারাজ হাবীব খান
ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন

বিসিএস ভাইভা অভিজ্ঞতা-৫, বর্তমানে বিশ্বরাজনীতিতে আলোচিত বিষয় কী কী

ফারাজ হাবীব খানকে দূতাবাস, জনকূটনীতি, ব্যাকচ্যানেল কূটনীতি, বদ্বীপ পরিকল্পনা ইত্যাদি বিষয়ে ইংরেজিতে প্রশ্ন করা হয়। জনকূটনীতির উদাহরণ হিসেবে তিনি বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মাঝে কূটনৈতিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন। ফুটবলপ্রীতির মাধ্যমে দুই দেশের জনগণের একাত্ম হয়ে ওঠা এবং ফলস্বরূপ দীর্ঘ ৪৫ বছর পর ঢাকায় আর্জেন্টিনার দূতাবাস পুনঃস্থাপনের বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি।

রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানে ব্যাকচ্যানেল কূটনীতির ভূমিকা বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। ফারাজ হাবীব খান বলেছিলেন, ‘দুটি দেশের মধ্যে যখন সরাসরি আলাপ–আলোচনা কিংবা কূটনৈতিক আপস সম্ভব নয়, তখন তৃতীয় কোনো মাধ্যম বা মধ্যস্থতাকারীর সহায়তাকে আমরা ব্যাকচ্যানেল কূটনীতি বলতে পারি।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন, রাশিয়া, ভারত কিংবা আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো ব্যাকচ্যানেল হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে মিয়ানমারের সদিচ্ছাও জরুরি।’

ফারাজ হাবীব খান
ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন

বিসিএস ভাইভার অভিজ্ঞতা-৪, সরকারের শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের নাম কী

এ ছাড়া বাংলায় প্রশ্ন করা হয়েছিল, মুক্তিযুদ্ধ, সুশাসন, করোনাভাইরাস ইত্যাদি বিষয়ের ওপর। সুশাসন নিশ্চিত করতে তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ফারাজ হাবীব খান বলেন, দুর্নীতি হ্রাস এবং স্বচ্ছ ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারে ই-গভর্ন্যান্স। তথ্যপ্রযুক্তির সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রশাসনিক ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়। ফলে জনগণ সরাসরি ও দ্রুত সেবা পায়, হয়রানি বন্ধ হয় ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।

করোনা মহামারি আমাদের কী কী শিক্ষা দিয়েছে, এ প্রশ্নের উত্তরে ফারাজ জুম, ওয়েবিনার, ভিডিও কনফারেন্সিং, দূরশিক্ষণের ভূমিকা ইত্যাদির কথা উল্লেখ করেন।

প্রত্নতত্ত্বের শিক্ষার্থী হওয়ায় ফারাজ হাবীব খানকে প্রশ্ন করা হয় বাংলাদেশের প্রাগৈতিহাসিক নিদর্শন নিয়ে। গাজীপুরে কোন বিখ্যাত বারো ভূঁইয়ার সমাধি রয়েছে—এ প্রশ্নের উত্তর ফারাজ হাবীব খান তাৎক্ষণিকভাবে দিতে পারেননি। এ প্রসঙ্গে ফারাজ হাবীব খান বলেন, ‘আমার জানার স্বল্পতা ছিল, তাই বিনীতভাবে দুঃখপ্রকাশ করেছিলাম।’

আরও পড়ুন

বিসিএস ভাইভা অভিজ্ঞতা-৩, খেলাধুলার সঙ্গে কি রাজনীতি থাকা উচিত