ভাইভায় বিচারকসুলভ দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রাজ্ঞতার পরিচয় দিতে হবে

প্রতীকী ছবি

অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১৩তম জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার ভাইভা। এতে অংশ নিতে যাচ্ছেন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৫৮০ জন পরীক্ষার্থী। বিচারক হওয়ার পথের শেষ ধাপ এটি। সার্কুলার অনুযায়ী ১০০ জন বিচারক নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রতিযোগিতামূলক এ পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য ভাইভার জন্য বিশেষ প্রস্তুতি প্রয়োজন। তাই আসন্ন ভাইভার প্রস্তুতি নিয়ে লিখেছেন মো. বায়জিদ রায়হান। তিনি সর্বশেষ অনুষ্ঠিত ১২তম জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন।

ভাইভায় আইনের ওপরই প্রধানত বেশি প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। এ জন্য সিলেবাসের প্রতিটি আইনের মোলিক বিষয় ও গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো অবশ্যই দেখে যেতে হবে।

আইনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মতবাদগুলো পড়তে হবে। সংবিধানের ও সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায়গুলো সংক্ষেপে পড়তে হবে। সাম্প্রতিক অনুমোদকৃত আইন ও আইনের সংশোধনীগুলো জানতে হবে। ভাইভায় অনেক সময় আইনের ওপর ছোটখাটো সমস্যা সমাধান করতে দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে উত্তর দেওয়ার সময় ভেবে দিতে হবে। তাড়াহুড়ো করা যাবে না। অপ্রয়োজনীয় ও নিশ্চিত না হয়ে কোনো মামলার দৃষ্টান্ত দেওয়া ঠিক হবে না। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় বিচারকসুলভ দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রাজ্ঞতার পরিচয় দিতে হবে।

আইনের বাইরেও প্রার্থীর পরিচয়, ঠিকানা, নিজ জেলা সম্পর্কে, যেমন জেলার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, মুক্তিযোদ্ধা, কবি, স্থাপনা নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। বাংলার ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা ব্যক্তি ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্যের ওপর ভালোভাবে জানতে হবে। এসব প্রশ্নের উত্তর না জানাটা ভাইভা বোর্ডের সদস্যদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা, যেমন জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক আদালত, বিশ্বব্যাংক, সার্ক ইত্যাদির গঠন, কার্যক্রম—এগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হয়।

সাম্প্রতিক বিষয়গুলো পড়তে হবে। প্রায় প্রত্যেক প্রার্থীর কাছেই একটি সাধারণ প্রশ্ন করা হয়, যেমন আপনি কেন বিচারক হতে চান বা সার্ভিস হিসেবে জুডিশিয়াল সার্ভিসের সঙ্গে অন্য সার্ভিসের কোনো পার্থক্য আছে কি? এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় সার্ভিস সম্পর্কে ইতিবাচক মন্তব্য এবং এর সম্ভাবনার কথা বলাটাই শ্রেয়।

সর্বোপরি ভাইভা বোর্ডে সব সময় প্রাণবন্ত, স্বাভাবিক ও মনোযোগী থাকতে হবে। অহেতুক চিন্তা ও ভয়ভীতিমুক্ত থাকতে পারলেই ভালো করা যাবে।

*লেখক: ১২তম জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় নিয়োগপ্রাপ্ত

আরও পড়ুন