নন-ক্যাডারে ৩৪৬৮ জন নেবে পিএসসি

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন নন-ক্যাডারে ৩৪৬৮ জন নিয়োগ দেবে

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি) নন-ক্যাডারে নিয়োগের জন্য দুটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি পিএসসির ওয়েবসাইটে এ–সংক্রান্ত দুটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি নম্বরের (৮০-১৪৭) অধীনে নেওয়া হবে ৩ হাজার ২৪২ জন এবং বিজ্ঞপ্তি নম্বরের (৫৫-৭৯) অধীনে নেওয়া হবে ২২৬ জন। এর মধ্যে জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর নেওয়া হবে ৩ হাজার ৫৩ জন, ওয়ার্কশপ সুপার পদে ৩৪ জন, ফিজিক্যাল এডুকেশন ইনস্ট্রাক্টর পদে ৮ জন, ইনস্ট্রাক্টর পদে ১৪৭ জন এবং চিফ ইনস্ট্রাক্টর নেওয়া হবে ২২৬ জন। দুটি বিজ্ঞপ্তি মিলে ৫টি পদে মোট নেওয়া হবে ৩ হাজার ৪৬৮ জন।

জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে আবেদনের জন্য কোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্যূন প্রথম শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএ-তে চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি থাকতে হবে। ওয়ার্কশপ সুপার পদে জন্য স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএ-তে বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং বা বিএসসি ইন টেকনিক্যাল এডুকেশন থাকতে হবে। তবে শিক্ষাজীবনে একাধিক তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণি বা সমমানের জিপিএ বা সিজিপিএ গ্রহণযোগ্য হবে না। ফিজিক্যাল এডুকেশন ইনস্ট্রাক্টর পদের জন্য আবেদনকারীর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএ-তে স্নাতকোত্তর বা সমমানের ডিগ্রি বা চার বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। ইনস্ট্রাক্টর পদে আবেদনের জন্য স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএ-তে বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং বা বিএসসি ইন টেকনিক্যাল এডুকেশন থাকতে হবে।

গত বছরের মার্চে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হন। ১৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বন্ধ ছিল চাকরির অনেক নিয়োগ ও পরীক্ষা। তাই চাকরির আবেদনের জন্য বয়সসীমা কমিয়ে দেয় সরকার। গত বছর ২৫ মার্চ যাঁদের ৩০ বছর পূর্ণ হয়েছে, সরকারি চাকরিতে তাঁদের আবেদনের সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ নিয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই প্রজ্ঞাপনের আলোকে পিএসসির নন–ক্যাডারে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৯ম ও ১০ম গ্রেডের চারটি পদে আবেদনের জন্য আবেদনকারীর বয়স গত বছরের ২৫ মার্চে ১৮–৩০ বছরের মধ্যে হতে হবে। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধী আবেদনকারীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা একই দিনে ৩২ বছর।

চিফ ইনস্ট্রাক্টর পদে আবেদন করতে হলে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএ-তে বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং বা বিএসসি ইন টেকনিক্যাল এডুকেশন ডিগ্রি থাকতে হবে। ইনস্টিটিউটের লেকচারার বা ইনস্ট্রাক্টর বা ওয়ার্কশপ সুপার পদে কমপক্ষে তিন বছরের চাকরি বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাঁচ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা। এ পদে আবেদনের জন্য গত বছরের ২৫ মার্চে প্রার্থীর বয়স সর্বোচ্চ ৩৫ বছর।

১০ম গ্রেডে জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর ও ফিজিক্যাল এডুকেশন ইনস্ট্রাক্টরের পদের বেতন স্কেল ১৬ হাজার থেকে ৩৮ হাজার ৬৪০ টাকা এবং ৯ম গ্রেডে ওয়ার্কশপ সুপার ও ইনস্ট্রাক্টর পদে বেতন স্কেল ২২ হাজার থেকে ৫৩ হাজার ৬০ টাকা। এ ছাড়া ষষ্ঠ গ্রেডে চিফ ইনস্ট্রাক্টর পদে বেতন স্কেল ৩৫ হাজার ৫০০ থেকে ৬৭ হাজার ১০ টাকা। বিভিন্ন বিষয়ে এসব পদে নির্বাচিত হলে প্রার্থীদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীন বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন বিভিন্ন টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে নিয়োগ দেওয়া হবে।

আগ্রহী প্রার্থীরা (http://bpsc.teletalk.com.bd) ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র পূরণ করতে পারবেন। পিএসসির নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। অনলাইনে পদগুলোর জন্য আবেদন ও ফি জমাদান শুরু হয়েছে ২৮ অক্টোবর থেকে। আবেদন ফি ৫০০ টাকা। আবেদন করা যাবে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিসংক্রান্ত আরও বিস্তারিত তথ্য জানা এ ওয়েবসাইটে (http://www.bpsc.gov.bd)।

৯ম ও ১০ম গ্রেডে টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল পদের ক্ষেত্রে আবেদনকারী প্রার্থীর সংখ্যা ১ হাজারের বেশি হলে প্রথমে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ টাইপ বাছাই পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রতিটি শুদ্ধ উত্তরের জন্য ১ নম্বর বরাদ্দ থাকবে এবং প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য অর্ধেক নম্বর কাটা যাবে। বাংলা ২০, ইংরেজি ২০, সাধারণ জ্ঞান ২০ ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ৪০ নম্বরসহ এমসিকিউয়ে মোট ১০০ নম্বর থাকবে। বাছাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে আবেদনকারীর সংখ্যা এক হাজারের কম হলে সরাসরি লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস—বাংলা ৪০, ইংরেজি ৪০, সাধারণ জ্ঞান ৪০ এবং সংশ্লিষ্ট টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল বিষয়ে ৮০ নম্বরসহ মোট ২০০ নম্বরের চার ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৯ম গ্রেডের প্রার্থীদের ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা এবং ১০ম গ্রেডের প্রার্থীদের ৫০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। লিখিত পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক বিস্তারিত সিলেবাস ও নম্বর বণ্টন পিএসসির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।