চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ইবতেদায়ি প্রধান পদের নিবন্ধনধারীদের আবেদনের সুযোগ নেই

ফাইল ছবি: প্রথম আলো

বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ পর্যায়ে ৬৮ হাজার ৩৯০ পদে শিক্ষক নিয়োগের চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এতে অন্যান্য নিবন্ধনধারী প্রার্থীরা আবেদনের সুযোগ পেলেও ইবতেদায়ি প্রধান পদের নিবন্ধনধারী প্রার্থীদের আবেদনের সুযোগ রাখা হয়নি। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিন ধাপের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ইবতেদায়ি প্রধান পদে নিবন্ধন পাওয়া প্রার্থীরা।

ইবতেদায়ি প্রধান পদে নিবন্ধন পাওয়া প্রার্থীরা বলেন, বেসরকারি স্কুল–কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণের জন্য এনটিআরসিএ ২০১৮ সালে পঞ্চদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ২০১৯ সালে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন করে ২০২০ সালে ১৫ জানুয়ারি ১১ হাজার ১৩০ জনকে উত্তীর্ণ করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে। ২০২১ সালে ৩০ মার্চ ৫৪ হাজার ৩০৪ জন শিক্ষক নিয়োগের জন্য তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কিন্তু সেখানে ইবতেদায়ি প্রধান পদে উত্তীর্ণ নিবন্ধনধারী প্রার্থীদের আবেদনের সুযোগ রাখা হয়নি। সে সময় আন্দোলন করলে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এবারও ইবতেদায়ি প্রধান পদে নিবন্ধনধারী প্রার্থীদের আবেদনের সুযোগ রাখা হয়নি।

ইবতেদায়ি প্রধান পদে নিবন্ধন পাওয়া প্রার্থী মো. শাহীদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে জুনিয়র মৌলভি, জুনিয়র শিক্ষক, ইবতেদায়ি ক্বারীদের সহকারী শিক্ষক, সহকারী মৌলভি বা প্রদর্শক নিবন্ধনধারী প্রার্থীদের সহকারী শিক্ষক, সহকারী মৌলভি বা প্রদর্শক পদে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় ইবতেদায়ি প্রধানদের সহকারী মৌলভি পদে অন্তর্ভুক্ত করে গত ৩০ ডিসেম্বর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নিয়েছে। অন্যান্য পদে নিবন্ধনধারী প্রার্থীদের সমস্যার সমাধান করলেও ইবতেদায়ি প্রধান পদের বিষয়ে তিন বছরেও কোনো সমাধান করা হয়নি। আমাদের যদি নিয়োগ না দেবে তাহলে নিবন্ধন পরীক্ষা নেওয়া হলো কেন। কষ্ট করে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পাস করেও গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ পাচ্ছি না। এর চেয়ে হতাশার আর কী হতে পারে।’

আমাদের যদি নিয়োগ না দেবে তাহলে নিবন্ধন পরীক্ষা নেওয়া হলো কেন। কষ্ট করে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পাস করেও গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ পাচ্ছি না। এর চেয়ে হতাশার আর কী হতে পারে।
মো. শাহীদুজ্জামান, ইবতেদায়ি প্রধান পদে নিবন্ধন পাওয়া প্রার্থী

এনটিআরসিএ থেকে জানানো হয়, ইবতেদায়ি প্রধান পদটি আগে এন্ট্রি লেভেলের পদ ছিল। কিন্তু ২০২০ সালের নভেম্বরে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা সংশোধিত আকারে প্রকাশ করা হয়। নতুন এমপিও নীতিমালায় এটি পদোন্নতি যোগ্য পদ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। নতুন নীতিমালা অনুসারে, ইবতেদায়ি প্রধান পদে নিয়োগ পেতে সহকারী মৌলভি পদে আট বছরের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে জানতে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (দাখিল ও ইবতেদায়ি) জান্নাতুন নাহারের মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও উত্তর পাওয়া যায়নি।

বেসরকারি স্কুল–কলেজ ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের জন্য এর আগে যেসব গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল, সেগুলোর তুলনায় চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আনা হয়েছে।

আগের গণবিজ্ঞপ্তিগুলোয় একজন প্রার্থী যত খুশি তত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারতেন। কেউ কেউ ৫০০ থেকে ১ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন করতেন। এতে প্রার্থীদের আবেদন করতেই অনেক বেশি টাকা চলে যেত। চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির নতুন শর্ত অনুসারে, ৪০টির বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ আবেদন করতে পারবেন না।
চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হলো, ইনডেক্সধারী প্রার্থীদের আবেদনের সুযোগ না পাওয়া। গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের পরিপত্রের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা শিক্ষক নিয়োগসংক্রান্ত পরিপত্রের ৭ নম্বর অনুচ্ছেদের কার্যকারিতা সাময়িকভাবে স্থগিত করায় কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের (ইনডেক্সধারী) চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করার সুযোগ নেই।