অনলাইন কেনাকাটা জমে উঠেছে

আসছে ঈদ। বাড়ছে কেনাকাটার চাপ। রাজধানীর যানজটে ও কাজের চাপে সবার পক্ষে মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটা করাও সম্ভব হচ্ছে না। তাঁদের জন্য অনলাইন কেনাকাটাই ভরসা। তাই দেশি-বিদেশি বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠিত শোরুমগুলোও এখন অনলাইনে পণ্য বিক্রি করছে। শুধু বিক্রি করছে না, অনলাইনে কিনলে ছাড়ও দিচ্ছে। যাতে ঈদ ঘিরে অনলাইনে কেনাকাটা অনেক বেড়েছে।

তবে অনলাইনে কেনাকাটা করতে হলে আপনাকে পণ্যের সাইজ জানতে হবে। আর ঠকতে না চাইলে কিনতে হবে পরিচিত ব্র্যান্ডের পণ্য। তাহলে কোনো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা কম।

ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) হিসাবে, বর্তমানে সারা দেশে ৯৫০ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকাতেই ৯০০। অনলাইনে কেনাকাটার বেশির ভাগ এখনো পোশাক।

ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ প্রথম আলোকে বলেন, অন্যান্য সময়ে দৈনিক ৩০ হাজারের মতো পণ্য ডেলিভারি করা হয়। ঈদ সামনে রেখে সেটা বেড়ে ৪৫ হাজারের মতো হয়। এতেই বোঝা যায়, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কেনাকাটার ওপর মানুষের নির্ভরশীলতা কেমন বাড়ছে।

অনলাইন কেনাকাটা নিয়ে অনেক অভিযোগ, প্রতিকারের ব্যবস্থা কী, জানতে চাইলে আবদুল ওয়াহেদ বলেন, ই-ক্যাবে একটা অভিযোগ কেন্দ্র আছে। যারা নিবন্ধিত অনলাইন, তাদের নিয়ে অভিযোগ এলে সুরাহা করা হয়। এ জন্য ক্রয় আদেশ, টাকা পরিশোধের প্রমাণ দিতে হবে।

অনলাইন প্ল্যাটফর্মের পাশাপাশি দেশীয় ব্র্যান্ড আড়ং, ইয়েলো, লারিভ, সেইলর, ক্যাটসআই, অঞ্জন’সসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও অনলাইনে পণ্য বিক্রি করছে। তাতে ভালো সাড়া মিলছে বলেও জানান প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা। জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আড়ংয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ক্রেতারা শোরুমে এসে কাপড় পছন্দ করতে অনেক সময় নেন। এতে মানবসম্পদ, শোরুম খরচসহ আরও অনেক খরচ যুক্ত হয়। তাই অনলাইনে পণ্য বিক্রি বাড়লে প্রতিষ্ঠানের জন্য ভালো।

>

ই-ক্যাবের হিসাবে, বর্তমানে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম রয়েছে ৯৫০
সেখানে বর্তমানে দৈনিক ৪৫ হাজারের মতো পণ্য বিক্রি হচ্ছে

বাংলাদেশে বর্তমানে সবচেয়ে বড় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম দারাজ। ঈদ উপলক্ষে ৬ জুন পর্যন্ত ঈদ শপিং ফেস্ট করছে প্রতিষ্ঠানটি। তাতে এসি, ফ্রিজ, এয়ারকুলার ও মাইক্রোওয়েভসহ বিভিন্ন গৃহস্থালিসামগ্রীতে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রয়েছে দৈনিক বিভিন্ন অফার এবং বিভিন্ন ব্যাংকের কার্ডে কেনাকাটায় রয়েছে মূল্যছাড়–সুবিধা। এর মধ্যে সাউথইস্ট ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের কার্ডে ১০ শতাংশ, সিটি ব্যাংকের অ্যামেক্স ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডে ১০ শতাংশ ছাড়। এ ছাড়া ১৫ জুন পর্যন্ত সব ভিসা কার্ডে থাকছে ১৫ শতাংশ ছাড়। আর ৬ জুন পর্যন্ত বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে পেমেন্ট করলে থাকছে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ ক্যাশ ব্যাক সুবিধা।

গত ডিসেম্বরে যাত্রা শুরু করা ই-ভ্যালি অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। সম্প্রতি তারা ঢাকা ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করেছে। এর ফলে ব্যাংকের এসএমই উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য ই-ভ্যালি সাইটের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবে। ই-ভ্যালির প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের সাইটে সব নামকরা ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠানের পণ্য পাওয়া যায়। ঈদ উপলক্ষে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি সাড়া মিলছে। আমরাও ২৪ ঘণ্টা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বাগডুমে বিকাশের মাধ্যমে কেনাকাটায় রয়েছে ২০ শতাংশ ও ইস্টার্ন ব্যাংকের কার্ডে ১০ শতাংশ ছাড়। আর আজকের ডিলে পোশাক কেনাকাটায় মিলছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত ছাড়। এতে মিলছে রংবেরঙের গয়না, ছেলেদের পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শিশুদের নানা ডিজাইনের দেশি পোশাক। আর গ্রোসারি অনলাইন ই-কমার্স সাইট ‘চালডাল’-এও দেওয়া হচ্ছে নানা ছাড়।