এভিয়েশন খাতের নিরাপত্তায় নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ

কানাডার মন্ট্রিলভিত্তিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ এয়ারলাইন পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের (ইফালপা) নিরাপত্তা কমিটির তিন দিনের বৈঠকের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী। বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) বৈঠকের আয়োজক। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
কানাডার মন্ট্রিলভিত্তিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ এয়ারলাইন পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের (ইফালপা) নিরাপত্তা কমিটির তিন দিনের বৈঠকের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী। বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) বৈঠকের আয়োজক। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

বিমান ছিনতাই বা অন্যান্য প্রথাগত ঝুঁকির বাইরে এভিয়েশন খাতে এখন নতুন নতুন নিরাপত্তাঝুঁকি আসছে। সাইবার আক্রমণ, লেজার আক্রমণের ঝুঁকির পাশাপাশি ড্রোন চলাচলের মাধ্যমে যেসব ঝুঁকি নতুন করে আসছে, সেগুলো মোকাবিলায় সতর্ক থাকতে হবে, উদ্যোগ নিতে হবে। এভিয়েশন খাতের নিরাপত্তা নিয়ে আয়োজিত তিন দিনের একটি বৈঠকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা উঠে এসেছে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাইলটদের সংগঠনের জোট, কানাডার মন্ট্রিলভিত্তিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব এয়ারলাইন পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের (ইফালপা) নিরাপত্তা কমিটির তিন দিনের বৈঠক শুরু হয়। বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) বৈঠকের আয়োজক।

বৈঠকের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিরাপত্তার দিক থেকে নির্ভরযোগ্য একটি দেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধরনের নিরাপত্তাঝুঁকি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতার নীতি ঘোষণা করেছেন। এভিয়েশন খাতে নিরাপত্তার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, বিমানবন্দরে নিরাপত্তা দিয়ে মানুষের জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্য দেওয়া সম্ভব।

ইফালপার নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন ইশতিয়াক হোসাইন বলেন, এভিয়েশন খাতের নিরাপত্তা নিয়ে প্রথমবারের মতো ইফালফার কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে বাংলাদেশে। ইফালফার প্রধান লক্ষ্য হলো এভিয়েশন খাতের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা। এসব বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সদস্যদের পরামর্শ দিয়ে ইফালফা উন্নয়নে অবদান রাখে। তিনি বলেন, এই খাতের নতুন নতুন ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো মোকাবিলার উপায় বের করা এবারের বৈঠকের প্রধান লক্ষ্য।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) মোহাম্মদ ইনামুল বারী বলেন, বিমান আন্তর্জাতিক এভিয়েশন খাতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে চায়। নিরাপত্তার দিক থেকে বাংলাদেশ সঠিক পথে আছে। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকেও সহায়তা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, এভিয়েশন খাত অনেক দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী এর বিকাশের হার ৩ শতাংশ হলেও বাংলাদেশে ৮ শতাংশ। ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও এর ভূমিকা অনেক। তাই এ খাতে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করা জরুরি বলেও মত দেন তিনি। এ জন্য সচেতনতার পাশাপাশি প্রস্তুতির ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

আয়োজক সংগঠন বাপার সভাপতি ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান আশা প্রকাশ করে বলেন, অতিথিরা আলোচনার ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা সম্পর্কিত নানা দিক তুলে ধরবেন। অতিথিদের ধন্যবাদ জানিয়ে মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, বৈঠকের তিন দিন বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অতিথিরা আলোচনায় থাকার পাশাপাশি ঢাকার বিভিন্ন এলাকাও ঘুরে দেখবেন।

বাপার সাধারণ সম্পাদক ক্যাপ্টেন সৈয়দ নাজমুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, তিন দিনের এই সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের ৮০ জন প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। তিন দিনের আলোচনায় নিরাপত্তাসংক্রান্ত সুপারিশগুলো বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে ওই সব দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে জানানো হবে। এ ছাড়া ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশনের কাছেও তুলে ধরা হবে সব সুপারিশ।