ওয়ালটনের কারখানায় যাচ্ছেন তিন মন্ত্রী-উপমন্ত্রী

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে তৈরি স্মার্টফোন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করতে চলেছে ওয়ালটন। দেশটির বাজারে অ্যাপল, স্যামসাংয়ের মতো বৈশ্বিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে ওয়ালটনের তৈরি স্মার্টফোন। বাংলাদেশের প্রযুক্তি বিষয়ক পণ্য উৎপাদন শিল্পের এই অগ্রগতি দেখতে এবার ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে যাচ্ছেন তিন মন্ত্রী-উপমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ আগামী ১ মার্চ ওয়ালটনের কারখানার যাবেন। সেদিন তাঁরা ওয়ালটনের নবনির্মিত সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এলিভেটর বা লিফট ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রি উদ্বোধন করবেন। একই সঙ্গে ওয়ালটনের তৈরি স্মার্টফোন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কার্যক্রম শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও দেবেন তাঁরা। উন্মোচন করবেন ওয়ালটনের তৈরি অল-ইন-ওয়ান পিসি (পারসোনাল কম্পিউটার) এবং নিজস্ব উদ্ভাবিত টিভি অপারেটিং সিস্টেম আরওএস (রেজভি অপারেটিং সিস্টেম)।

ইলেকট্রনিকস শিল্প খাতে ধারাবাহিকভাবে সাফল্য অর্জন করায় ওয়ালটনকে অভিনন্দন জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘সরকারের দেওয়া প্রণোদনা ও নীতি সহায়তা সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে নিজেদের চেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছে ওয়ালটন। তাদের সাহসী উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নে বাংলাদেশে এখন ফ্রিজ, টিভি, এসি, স্মার্টফোন থেকে শুরু করে আইটি পণ্য তৈরি হচ্ছে। এসব পণ্যের মাধ্যমে ওয়ালটন শুধু দেশের মানুষের ভালোবাসাই অর্জন করতে সক্ষম হয়নি, বরং সেই ভালোবাসা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিচ্ছে। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করছে।’

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ইলেকট্রনিকস, ইলেকট্রিক্যাল ও আইটি পণ্য উৎপাদন কারখানার পাশাপাশি এশিয়ার অষ্টম কম্প্রেসর কারখানা, র‌্যাম (র‌্যানডম একসেস মেমোরি) কারখানা স্থাপন করেছে ওয়ালটন। তারা জটিল ও চ্যালেঞ্জিং হাই-টেক পণ্যগুলো তৈরি করার চ্যালেঞ্জ নিচ্ছে। দ্রুত বিকাশমান ইলেকট্রনিকস শিল্প খাতের বিশাল কর্মযজ্ঞ ও প্রচেষ্টা নিজের চোখে দেখার উদ্দেশ্যেই ওয়ালটন কারখানায় যাচ্ছি।’

ওয়ালটনের তৈরি স্মার্টফোন রপ্তানি প্রসঙ্গে ডাক ও ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ভাবতেও পারিনি আমাদের দেশে ল্যাপটপ তৈরি হবে, আমরা এখানে র‌্যামের ডিজাইন ও র‌্যাম তৈরি করব, মোবাইল সেট এখানে উৎপাদন করে বিদেশে রপ্তানি করতে পারব। অথচ এসব আজ সত্যি হয়েছে। ওয়ালটন তথা বাংলাদেশি একটি প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা পণ্য আমেরিকায় যাবে। আমেরিকার মানুষ তা হাতে নিয়ে ব্যবহার করবে। এটা শুধু আমার জন্যই নয়, পুরো বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের।’

মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, ‘এত দিন আইটি পণ্য হিসেবে আমরা কেবল সফটওয়্যার ও সেবার কথা ভাবতাম। হার্ডওয়্যারের কথা কখনো ভাবিনি। ওয়ালটন প্রমাণ করল, বাংলাদেশ কেবল সফটওয়্যার ও সেবা নয়, হার্ডওয়্যার বানানোর পাশাপাশি রপ্তানিও করতে পারে।’

দেশে এলিভেটর বা লিফটের মতো আমদানি বিকল্প হাই-টেক পণ্য উৎপাদন কারখানা স্থাপনে ওয়ালটনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছরই লিফটের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান এই চাহিদার প্রায় পুরোটাই আমদানিকৃত লিফটের মাধ্যমে মেটানো হচ্ছে। ওয়ালটন এই ভারী প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনে এগিয়ে আসায় এ খাতের আমদানি নির্ভরতা কমবে। এতে বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। এ ছাড়া কর্মসংস্থান ও দক্ষ জনশক্তিও সৃষ্টি হবে।

এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, ইউরোপসহ বিশ্বের প্রায় ৩৫টি দেশে বর্তমানে ওয়ালটনের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।