মোবাইল ব্যাংকিংয়ে প্রতিদিনই গ্রাহক বাড়ছে, বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণ। প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে বা দ্রুত শহর থেকে গ্রামে, গ্রাম থেকে শহরে—সর্বত্রই টাকা পাঠানোর সুযোগ তৈরি হওয়ায় মোবাইল ব্যাংকিং দেশের ব্যাংকিং সেবায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ২০১৪ সাল শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক সংখ্যা হয়েছে আড়াই কোটি। আর গড়ে প্রতিদিন লেনদেন হচ্ছে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা।
এক স্থান থেকে টাকা আরেক স্থানে পাঠানোই কেবল নয়, দেশের অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করেছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এ সেবা। যোগ হয়েছে নতুন কর্মসংস্থান।
প্রাত্যহিক লেনদেন ছাড়াও বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণ ইত্যকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন পছন্দের মাধ্যম। ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক সংখ্যা এক কোটির মাইলফলক অতিক্রম করে। গত বছরের মার্চে তা দেড় কোটি ছাড়িয়ে যায়। আর গত সেপ্টেম্বরে দুই কোটি ছাড়ানোর পর ডিসেম্বর মাস শেষে হয়েছে ২ কোটি ৫২ লাখ।
প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, ডিসেম্বর মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে প্রায় ২৫ লাখ লেনদনের বিপরীতে ১০ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা উত্তোলন ও জমা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিদিন লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৪৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। নভেম্বর মাসে ২০ লাখের সামান্য বেশি লেনদেনের বিপরীতে মোট ৯ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা জমা ও উত্তোলন হয়েছিল। দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩২২ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্সের তিন কোটি টাকা সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। গ্রাহক নিজের অ্যাকাউন্টে জমা করেছেন ৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। আর উত্তোলন করেছেন ৩ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া অন্যের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছেন ১ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে বেতন পরিশোধ হয়েছে ৬৫ কোটি টাকার। আর সেবা বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৫০ কোটি এবং অন্যান্য ১২৭ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ পর্যন্ত ২৮টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অনুমোদন নিয়েছে। এর মধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে ১৯টি ব্যাংক। লেনদেন ও গ্রাহক বাড়ার সঙ্গে এজেন্ট সংখ্যাও বেড়ে ৫ লাখ ৪১ হাজারে দাঁড়িয়েছে।