এইচএসসি - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র | অধ্যায় ১ : সৃজনশীল প্রশ্ন

অধ্যায় ১

সৃজনশীল প্রশ্ন

মি. আহ্​সান অ্যানজেল টেক্সটাইল নামক একটি কোম্পানির পরিকল্পনা প্রণয়ন, লক্ষ্য নির্ধারণ, অর্থসংস্থান ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে মি. কায়েফ মি. আহ্​সানের গৃহীত নীতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সচেষ্ট। তিনি ফোরম্যান ও সুপারভাইজারদের নির্দেশনা প্রদান করেন। প্রয়োজনে শ্রমিক-কর্মচারীদেরও তত্ত্বাবধান করেন। উভয়ের দক্ষতা ও কর্মকাণ্ডের ওপর প্রতিষ্ঠানের সাফল্য নির্ভর করে।

প্রশ্ন

ক. ব্যবস্থাপনা চক্র কী?

খ. ‘ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন’—ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটিতে মি. আহ্​সান ব্যবস্থাপনার কোন স্তরে কর্মরত রয়েছেন? বর্ণনা করো।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত মি. আহ্​সান ও মি. কায়েফের মধ্যে স্তরভেদে কার কাজ প্রতিষ্ঠানের জন্য অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ? তোমার মতামত বিশ্লেষণ করো।

উত্তর

ক. ব্যবস্থাপনার মৌলিক কাজগুলো (যেমন পরিকল্পনা, সংগঠিতকরণ, কর্মী সংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয় সাধন ও নিয়ন্ত্রণ) পর্যায়ক্রমে বা চক্রাকারে আবর্তিত হওয়াকে ব্যবস্থাপনা চক্র বলে।

খ. ‘ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন’ উক্তিটি গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিসের। ব্যবস্থাপনার সর্বজনীনতা বলতে সর্বত্র, সবার দ্বারা গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থাপনা, জ্ঞানের আবশ্যকতা ও প্রয়োগযোগ্যতাকে বোঝায়।

ব্যবস্থাপনা এ অর্থে সর্বজনীন, কেননা কোনো একটি পরিবারে যেমন ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন তেমনি শিল্পকারখানা, মসজিদ, মন্দির, গির্জা, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়েও ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য। পরিবার, রাষ্ট্র ও ব্যবসায় সংগঠনের সব ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি প্রয়োগ করা হয়। স্থানীয় পরিবেশ পরিস্থিতি, সামাজিক রীতিনীতি ইত্যাদি কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে। তবে ব্যবস্থাপনা কার্যাবলি প্রয়োগের ক্ষেত্রে তেমন কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। তাই ব্যবস্থাপনাকে সর্বজনীন বলা হয়।

গ. মি. আহ্​সান ব্যবস্থাপনার উচ্চস্তরে কর্মরত রয়েছেন।

ব্যবস্থাপনার যে স্তরে প্রতিষ্ঠানের নীতি ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ, পরিকল্পনা গ্রহণ, কর্মপদ্ধতি ও কৌশল নির্ধারণ, উদ্যোগ গ্রহণ, অর্থসংস্থান, নির্দেশনা দান, কর্ম পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণমূলক কার্যাবলি সম্পাদিত হয়ে থাকে, তাকে উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনা বলা হয়। কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান, সচিব এ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত।

উদ্দীপকে বর্ণিত মি. আহ্​সান অ্যানজেল টেক্সটাইল নামক একটি কোম্পানির পরিকল্পনা প্রণয়ন, লক্ষ্য নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। যেহেতু তিনি উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানটির পরিকল্পনা প্রণয়ন, লক্ষ্য নির্ধারণ, উদ্যোগ গ্রহণ, অর্থসংস্থান ইত্যাদি কার্যাবলি নিজে সম্পাদন করেন, তাই তিনি ওই কোম্পানির উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত মি. আহ্​সান উচ্চস্তরে এবং মি. কায়েফ ব্যবস্থাপনার মধ্যম স্তরে কর্মরত রয়েছেন। স্তরভেদে মি. আহ্​সানের কাজ প্রতিষ্ঠানের জন্য অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের নির্বাহীদের নিয়ে গড়ে ওঠা ব্যবস্থাপনাকে উচ্চপর্যায়ের ব্যবস্থাপনা বলে। প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও নীতি নির্ধারণ এবং দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য, কৌশল ও পরিকল্পনা প্রণয়নের সঙ্গে ব্যবস্থাপনার উচ্চপর্যায় সম্পৃক্ত। অন্যদিকে উচ্চপর্যায়ের গৃহীত লক্ষ্য, পরিকল্পনা ও নীতি নির্দেশনা বাস্তবায়নে নিম্ন পর্যায়ের ব্যবস্থাপক জ্ঞানকে কাজে লাগাতে ব্যবস্থাপনার যে পর্যায় কাজ করে, তাকে মধ্য পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা বলে। এরূপ পর্যায় উচ্চ ও নিম্ন পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার মধ্যে সেতুবন্ধের ভূমিকা পালন করে।

উদ্দীপকে বর্ণিত মি. আহ্​সান অ্যানজেল টেক্সটাইল নামক প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা প্রণয়ন, অর্থসংস্থান ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে মি. কায়েফ মি. আহ্​সানের গৃহীত নীতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সচেষ্ট। তিনি ফোরম্যান ও সুপারভাইজারদের নির্দেশনা দেন। প্রয়োজনে কর্মচারীদেরও তত্ত্বাবধান করেন। উভয়ের দক্ষতা ও কর্মকাণ্ডের ওপর প্রতিষ্ঠানের সাফল্য নির্ভর করে।

মো. মাজেদুল হক খান, সহকারী অধ্যাপক, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা

পরবর্তী সৃজনশীল প্রশ্ন